• কৃষি

    সিরাজগঞ্জে বাড়তি দামেও মিলছে না সার, দিশেহারা কৃষক

      প্রতিনিধি ২৬ আগস্ট ২০২২ , ২:২৮:০৬ প্রিন্ট সংস্করণ

    শস্য ভান্ডার খ্যাত চলনবিলকে ঘিরে সিরাজগঞ্জে এবার চলতি রোপা আমন মৌসুমে সব ধরনের সারের সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতি বস্তা সার কিনতে ২শ’ থেকে ৬শ’ টাকা পর্যন্ত বেশি গুণতে হচ্ছে কৃষকদের। অনেক সময় বাড়তি দাম দিয়েও তা মিলছে না। ভরা মৌসুমে এ সংকটে দিশেহারা কৃষক। তবে কোনো সারই সংকট নেই দাবী করে কৃষি বিভাগ বলছেন, দাম বেশী নিলেই নেয়া হবে ব্যবস্থা।

    জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ১ লাখ ৮৪ হাজার ৬৩০ হেক্টর আবাদি জমির মধ্যে চলতি মৌসুমে ৪৬ হাজার ৫৭৩ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী ডিলারদের মাঝে জেলায় ইউরিয়া ৪ হাজার ৪৬২ মেট্রিক টন, ডিএপি ৮৪৭ মে,টন, টিএসপি ৯০৭ মে,টন ও এমওপি ৫৩৪ মে,টন সার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

    সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন উপজেলার গ্রাম গুলোতে দেখা যায়, আমন রোপণ প্রায় শেষের দিকে। এখন কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন পরিচর্যায়। রোপনের ২০ দিনের মধ্যে জমিতে সার দেওয়ার নিয়ম থাকলেও সার সংকট ও দাম বেশি হওয়ায় তা দিতে পারছেন না তারা। ভরা মৌসুমে এ সংকটে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা।

    কৃষকরা বলছেন, সংকটের কারণে জেলায় ১ লাখ ৮৪ হাজার ৬৩০ হেক্টর আবাদি জমির মধ্যে চলতি মৌসুমে ৪৬ হাজার ৫৭৩ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী ডিলারদের মাঝে জেলায় ইউরিয়া ৪ হাজার ৪৬২ মেট্রিক টন, ডিএপি ৮৪৭ মে,টন, টিএসপি ৯০৭ মে,টন ও এমওপি ৫৩৪ মে,টন সার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

    সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন উপজেলার গ্রাম গুলোতে দেখা যায়, আমন রোপণ প্রায় শেষের দিকে। এখন কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন পরিচর্যায়। রোপনের ২০ দিনের মধ্যে জমিতে সার দেওয়ার নিয়ম থাকলেও সার সংকট ও দাম বেশি হওয়ায় তা দিতে পারছেন না তারা। ভরা মৌসুমে এ সংকটে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা।

    কৃষকরা বলছেন, সংকটের কারণে জেলায় প্রায় সব ধরনের সার সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে় ২শ’ থেকে ৬শ’ টাকা পর্যন্ত বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ১১০০ টাকার ইউরিয়া সার বিক্রি করছে ১২০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকায়। ৭৫০ টাকার এমওপি সার বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকায়। টিএসপি ১১০০ টাকার জায়গায় বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ থেকে ১৬০০ টাকা পর্যন্ত।

    সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের কৃষক ওমর আলী, নুর ইসলাম, আমজাদ হোসেনসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, বাড়তি দাম দিলেও মিলছেনা সার। হঠাৎ সারের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছে কৃষক। তারা জানান, এমনিতেই কৃষিতে প্রতিনিয়ত লোকসান গুনতে গুনতে পিঠ আমাদের দেয়ালে ঠেকেছে। তার উপর অতিরিক্ত দাম বড়লোকরাই বড় লোক হচ্ছে। এক বস্তা সারে ব্যবসায়ীরা লাভ করছে দুইশত থেকে সাতশত টাকা। ডিলার ও খুচরা সার বিক্রেতারা তাঁদের দোকানে যে মূল্য তালিকা টাঙ্গিয়ে় রেখেছেন সেই দামে সার বিক্রি করছেন না।

    অপর এক কৃষক বলেন, ৩ বিঘা জমিতে আমন চাষ করছি। কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন সারের দোকানে ঘুরে ইউরিয়া সার না পেয়ে শিয়ালকোল বাজারে আলকাছের দোকান থেকে ২ বস্তা ইউরিয়া সার ৩ হাজার টাকা দিয়ে এনেছি। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রি করছেন কেন? জানতে চাইলে খুচরা সার ব্যবসায়ী মেসার্স ত্রিরতœ ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আলকাছ বলেন, বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করছি। এতে দোষের কি?

    রায়গঞ্জ উপজেলার ধুবিল ইউনিয়নের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম সিরাজগঞ্জ টাইমসকে জানান, ৫ বিঘা জমিতে আমন রোপণ করেছি। সারের জন্য ডিলারদের দোকানে দোকানে ঘুরেও সার নিতে পারিনি। দাম বেশি না দিলে তারা সার দিচ্ছেন না। মূল্য রশিদ চাইলে বলে সার নেই। বাধ্য হয়ে মালতিনগর রফিকুলের দোকান থেকে ১ বস্তা ইউরিয়া ১৫০০ টাকা ও ১ বস্তা পটাশ ১৪০০ টাকা দিয়ে এনেছি, তাও আবার গোপনে। এ ব্যাপারে সারের দাম বেশি নিচ্ছেন কেন জানতে চাইলে খুচরা ব্যাবসায়ী মেসার্স নিপা ট্রেডার্স স্বত্বাধিকারীরা রফিকুল ইসলাম কোনো উত্তর না দিয়েই সটকে পড়েন।

    এদিকে, ডিলারদের থেকে বাড়তি দামে কিনেও কৃষকদের পর্যাপ্ত সার দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। তারা অভিযোগ করে আরও বলেন, ইচ্ছা করে সারের দাম বেশি নেওয়া হয় না। ডিলাররা আমাদের কাছে বেশি দাম নেওয়ায় আমরাও বেশি দামে সার বিক্রি করছি। কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা সত্তেও ডিলাররা সাব ডিলারদেরকে নির্ধারিত মূল্যে সার দেয়না।

    বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এ্যাসোসিয়েশন, সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি ও বিসিআইসির ডিলার মো, ওয়াহেদুল ইসলাম সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের বিসিআইসির ডিলারদের সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে এক টাকাও বেশি বিক্রি করার কোনো সুযোগ নেই। তবে, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ায় বাজারে সারের কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে। অতি দ্রæত এ সংকট কেটে যাবে।

    সারের কোনো সংকট নেই দাবী করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বাবুল কুমার সুত্রধর বলেন, কোনো ব্যবসায়ী কৃষকদের কাছ থেকে বেশি মূল্যে সার বিক্রি করলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
    জেলা সার বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহমেদ মুঠোফোনে বলেন, সারের দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। প্রমাণ বা ধরা পড়লে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ