• গণমাধ্যম

    শীতকালীন সংসদে গণমাধ্যমকর্মী আইন উত্থাপনের আশাবাদ তথ্যমন্ত্রীর

      প্রতিনিধি ৩ জানুয়ারি ২০২২ , ৭:৪৪:৩৩ প্রিন্ট সংস্করণ

    নিউজ ডেস্কঃ

    আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনেই গণমাধ্যমকর্মী আইনের খসড়া জাতীয় সংসদে উত্থাপনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
    তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমকর্মী আইনের খসড়া ইতোমধ্যেই আইনমন্ত্রী স্বাক্ষর করে দিয়েছেন। শীতকালীন অধিবেশনে আমরা সেটি সংসদে নিয়ে যেতে পারবো বলে আশা করছি। এ আইন পাস হলে, সম্প্রচার মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত সাংবাদিকবৃন্দকে আইনি সুরক্ষা দেয়া সম্ভবপর হবে।’

    রোববার দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে চট্টগ্রাম বিভাগ সাংবাদিক ফোরাম ঢাকা (চবিসাফ) এর মিলনমেলা ও দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

    ফোরামের নবনির্বাচিত সভাপতি হিসেবে শাহিন উল আলম এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আইয়ুব নির্বাচিত হয়েছেন।

    ড. হাছান মাহমুদ এসময় গণমাধ্যমে সরকারের সমালোচনার পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসাও প্রয়োজন উল্লেখ করে বলেন, ‘সরকারের সমালোচনা হবে, কোনো জায়গায় দায়িত্বশীলরা যদি ভুল করে সেটিরও সমালোচনা হবে। কিন্তু সমালোচনাটা যেন এমন না হয় যে, দুষ্কৃতিকারী বা সাম্প্রদায়িক অপশক্তির হাতে কিংবা যারা সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে লালন-পোষণ ও ব্যবহার করে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করতে চায়, তাদের হাতে ক্ষমতা যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। সেজন্য আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’

    মন্ত্রী ড. হাছান বলেন, ‘সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে আমার কাছে দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে যে, সাংবাদিক হিসেবে যুক্ত হওয়ার জন্য যোগ্যতার মাপকাঠি করে দিতে। সেক্ষেত্রে আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো ডিগ্রি নির্ধারণ করে দেয়া সমীচীন মনে করি না। কারণ অনেক সময় দেখা যায় মাস্টার্স ডিগ্রিধারী তিনি যেভাবে লেখেন, তার চেয়ে মেট্রিক পাস সাংবাদিক ভালো লেখেন। তবে এখন যে কেউ সাংবাদিক পরিচয় দেয়, আসল সাংবাদিকের চেয়ে নকল সাংবাদিকে উপজেলা সয়লাব। দেখা যায় সাংবাদিকের স্টিকার লাগিয়ে তারা গাড়িতে করে ঘোরে, মানুষের মধ্যে একটি বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়, এ বিষয়ে শৃঙ্খলা আনার জন্য আমি প্রেস কাউন্সিলকে একটি মানদন্ড তৈরির জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।’

    চট্টগ্রাম বিভাগ সাংবাদিক ফোরামের নবনির্বাচিত সভাপতি শাহিন উল আলম,সাধারণ সম্পাদক আইয়ুবকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সত্যিকার অর্থে সাংবাদিকদের জন্য কাজ করতে পারাটাই সাংবাদিক সংগঠনগুলোর সার্থকতা। ওয়েজবোর্ডে আছে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকে সাংবাদিক ও কর্মচারিদের জন্য গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স করতে, কিন্তু তা হয়নি। এজন্য খুব বেশির টাকারও প্রয়োজন নয়। এ বিষয়ে সংগঠনগুলো কাজ করতে পারে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করে দিয়েছেন। একজন সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করলে সে সেখান থেকে তিন লাখ টাকা পায়। কিন্তু গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স কভারেজ বাবদ তার পরিবার যে পাঁচ বা দশ লাখ টাকা পেতো, সেটি না পাওয়া শুধুমাত্র উদ্যোগের অভাব। এজন্য আমি সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও সংগঠনগুলোকে বলবো প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাগাদা দিতে।’

    চবিসাফের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো: মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে ডিবিসি২৪ টিভির চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগ সাংবাদিক ফোরাম-একটি পেশাদার সংগঠন।

    একটি ঐহিত্যবাহি সংগঠন। এ ফোরাম বিভিন্ন সময়ে এ ফোরামে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ফোরাম সাংবাদিকতা পেশায় বিশেষ ভূমিকাও রাখছে।

    জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি-যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা। এ পেশায় আঞ্চলিক সাংবাদিক সংগঠনগুলো বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে-রাখছেও। একই সঙ্গে এ সংগঠনগুলো আঞ্চলিক সমস্যাগুলো চিহিৃত করে-সমাধান করারও উদ্যোগ নিতে পারে।

    আঞ্চলিক সমস্যাগুলো জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম আমার ভালো লাগার জায়গা। চট্টগ্রামে মেজবান খাবারসহ ঐতিহ্যবাহি খাবার রয়েছে। চট্টগ্রাম গর্বের নাম। আপ্যায়নের দিক দিয়েও তারা সেরা।

    বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, সাংবাদিক যে কোনো সংগঠনের সঙ্গে আমি আছি-যদি সংগঠনগুলো সাংবাদিকতা পেশায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। সাংবাদিকতা ও সংগঠন উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। এমন সংগঠনগুলোকে অবশ্যই সাধুবাদ জানাতে হবে। সংগঠনগুলোর পাশে থাকতে হবে।

    ডিআরইউ’র সাবেক সভাপতি শাহজাহান সরদার বলেন, চবিসাফ একটি ঐতিহ্যবাহি সংগঠন। আমার কাছে জাতীয় প্রেসক্লাব যেমন প্রথম কর্মস্থল, তেমনি চবিসাফ দ্বিতীয় কর্মস্থল। আমি বহুবার চট্টগ্রামে গিয়েছি-সাংবাদিকতা করেছি।
    অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ শাহেদ চৌধুরী, বিএফইউজের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য উম্মুল ওয়ারা সুইটি।

    সাংবাদিক আইয়ুব ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন চবিসাফের মহাসচিব শাহীন উল ইসলাম চৌধুরী। চবিসাফের ১১ জেলার প্রতিনিধিদের মধ্যে চট্টগ্রামের সমীর বড়ুয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গিয়াস উদ্দীন, ফেনীর মোতাহার হোসেন, কুমিল্লার সাজ্জাদ হোসেন, নোয়াখালীর তরুণ তপন চক্রবর্তী, লক্ষীপুরের খুরশিদ আলম প্রমুখ সভায় বক্তব্য দেন।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ