• Uncategorized

    শিক্ষার অবনতি ও শিক্ষার্থীদের জ্ঞান, মনও জীবন পরেছে হুমকির মুখে

      প্রতিনিধি ৩ মে ২০২১ , ৮:৩৪:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ

    ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত টানা এবং চলমান ছুটিতে শিক্ষার্থীরা। এত দীর্ঘ ছুটিতে অন্য কোনো পেশার লোকজনের কাজ স্থাবর ছিল না এবং এখনো নেই। হয়তো ধাপে ধাপে ছিল। কিন্তু তরুণ প্রজন্মের মতো করে এতটা গুটিয়ে থাকেনি তারা।

    তরুণ প্রজন্ম কিনা আগামী দিনে দেশ গড়ার কারিগর হবে। কিন্তু সেই তারাই লকডাউনে সব থেকে বেশি বদ্ধ হয়ে আছে। যবে থেকে করোনা মহামারি বাংলার বুকে এসেছে, তবে থেকে তরুণ প্রজন্মের শুরু হয়েছে স্নায়ুযুদ্ধ। চলুন জেনে আসি লকডাউনের স্পর্শে জর্জরিত তরুণ প্রজন্মের কিছু স্নায়ুযুদ্ধের কথা:

    সেশনজট
    বাংলাদেশের আনাচকানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে হাজারো তরুণ শিক্ষার্থী। এই হাজারো শিক্ষার্থীর মন ১৩-১৪ মাস ধরে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে যাচ্ছে সেশনজট নামক ভয়ংকর রূপের অধিকারী শব্দের সঙ্গে। শুধু শিক্ষার্থীরা নয়, সঙ্গে তাদের অভিভাবকেরাও এই ভয়ংকর রূপের অধিকারী শব্দের ঝংকারে ঝলসিত হয়ে যাচ্ছেন। কবে তাঁদের সন্তানেরা পড়াশোনার পাট চুকিয়ে সংসার নামক এক স্বর্গীয় উদ্যানে ফুল ফুটাবে? এই প্রশ্নের উত্তরের আশায় তাঁরা পড়ে আছেন। আর সন্তানেরা পড়ে আছে কবে এই সেশনজট নামক ট্যাগটি তাদের জীবন থেকে একেবারে বিমোহিত হবে। হয়তো একদিন শেষ হবে, সেই আশায় সবাই ধৈর্যের বাসা বেঁধে বসে আছেন।

    বদ্ধমূল জীবন
    সেশনজটের পরই তরুণদের জর্জরিত জীবনের দিকে তাকালে দেখা যায় তারা কতটা আবদ্ধ। যে তরুণদের পদচারণে অমর একুশে ফেব্রুয়ারিতে গ্রাম ও শহর উভয় প্রাঙ্গণে, রাস্তায় শ্রদ্ধার ধ্বনি বর্ণিত হতো, এবারের সেই অমর একুশেও তরুণ প্রজন্মকে থাকতে হয়েছে লুকোচুরি খেলার মতো লুকিয়ে। শুধু কি অমর একুশে? প্রতিটি স্মরণীয় ও বরণীয় এবং ঐতিহাসিক দিবসেও সর্বদা হচ্ছে প্রাণহীন ও ছন্দহীন কবিতার মতো। কারণ, সেখানে প্রাণ ও ছন্দ মেলানোর জন্য সুযোগ পাচ্ছে না লকডাউনের বদ্ধমূলে আটকে থাকা তরুণ প্রজন্ম।

    শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবার শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হোক
    শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবার শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হোকপ্রথম আলো ফাইল ছবি
    মানসিক বিপর্যয়
    লকডাউনের বাতাস আর কড়া লিকারের তিক্তময় চা ঠিক একই রকমের। ব্যতিক্রমধর্মী দুয়েকজন ছাড়া বাকিরা যেমন কড়া লিকারের তিক্তময় চা খেতে পারে না, তেমনি দুয়েকজন তরুণ ছাড়া আর কারোর মানসিক অবস্থা এই দীর্ঘ সময়ে নেই। হাতে গোনা দুয়েকজন বাপের টাকায় দিনাতিপাত করলেও বাংলার অধিকাংশ তরুণের বুকে বিঁধে আছে মানসিক যন্ত্রণা নামক মাছের কাঁটা।

    সম্পর্কের টানাপোড়েন
    সম্পর্ক বলতে প্রথমেই আমাদের মাথায় আসে পারিবারিক ও রক্তের সম্পর্কগুলো। কিন্তু এই সম্পর্কগুলো ছাড়াও আরেকটা সম্পর্ক আছে, আত্মার সম্পর্ক। তরুণ-তরুণীর মধ্যে যে সম্পর্ক আমরা দেখি, সেটাই মূলত আত্মার সম্পর্ক। এই দীর্ঘ লকডাউনে সেই আত্মার সম্পর্কগুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে কোনো তরুণ প্রেমিক যুদ্ধ করছে তার অনুভূতি ও বাস্তব জীবনের সঙ্গে, আবার কোনো প্রেমিকা যুদ্ধ করছে তার স্বপ্ন ও পরিবারের চাপের সঙ্গে। এভাবে করে সবাই মনের সঙ্গে আর লকডাউনের সঙ্গে যুদ্ধ করে চলেছে। জানি না কবে হবে শেষ এই স্নায়ুযুদ্ধের রেশ!

    ক্যারিয়ার গঠনে অনিশ্চয়তা
    চারদেয়ালে বন্দী হয়ে তরুণ প্রজন্ম ক্রমশ হারিয়ে ফেলছে তাদের তারুণ্যের শক্তি। যে শক্তির ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠাতে চেয়েছিল তারা তাদের স্বপ্নের বাতি। অনেকে পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড ও সাংগঠনিক কাজ করে থাকে। যেগুলো তাদের সিভিকে আকর্ষণীয় করতে সাহায্য করবে, সেই কাজগুলো থেকে তারা অতল গহ্বরে চলে যাচ্ছে এবং পড়ে থাকছে তাদের ক্যারিয়ারবিহীন এক মেরুদণ্ড। এই মেরুদণ্ডী দেহটাও কি শেষ হয়ে যাবে লকডাউনের এই তৃতীয় টেউয়ে? এই নিরাশাজনক প্রশ্নের ঝুড়ি নিয়ে ডালপালাহীন গাছের তলে বসে দিন পার করে যাচ্ছে এই বাংলার তরুণ।

    জীবন ও জীবিকা নিয়ে টানাটানি
    বাংলাদেশের বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীর বেড়ে ওঠা মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারে। এ মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানেরা নিজের পড়াশোনার খরচ চালানোর পাশাপাশি পরিবারের হাল ধরত টিউশনি নামক প্যাডেলের মাধ্যমে। লকডাউন নামক হতাশার স্পর্শে জর্জরিত তরুণ প্রজন্মের সেই প্যাডেলটি। আজ সেই সব তরুণ প্রজন্ম জানে না কীভাবে তারা আবার ফিরে পাবে তাদের সংসার চলানোর সেই প্যাডেলের গতি।

    মেধা বিকাশের অন্তরায়ের উৎপত্তি
    মেধা প্রকৃতিপ্রদত্ত হলেও মেধার বিকাশ নির্ভর করে নিয়মিত পরিচর্চা ও পরিচর্যার ওপর। এ ভয়াবহ লকডাউনে থেকে সেই পরিচর্চা ও পরিচর্যার গুরুত্ব শেষ হয়ে যাচ্ছে। যার দরুন তরুণ প্রজন্মের মেধা বিকশিত না হয়ে বরং আস্তে আস্তে শিথিল চাদরের ভাঁজে চলে যাচ্ছে।

    ইন্টারনেট দুনিয়ার আসক্তি

    লকডাউন সরাসরিভাবে তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংস করে দিচ্ছে অনলাইন ছোঁয়ার মাধ্যম। গুটি কয়েকজন অনলাইন ও ইন্টারনেট দুনিয়াকে সঠিকভাবে ব্যবহার করলেও অধিকাংশ ছেলেমেয়ে ইন্টারনেট-আসক্তিতে জড়িয়ে যাচ্ছে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে আর কিছু সমস্যাময়ী কর্মকাণ্ড। যেমন পর্ন-আসক্তি, অতিরিক্ত ফেসবুকিং, মোবাইল গেমিং। এসবের মধ্যে থাকতে থাকতে তারা নিজেদের নৈতিক শিক্ষা ও দায়িত্বগুলো পালনে অনীহা প্রকাশ করছে।

    আস্থাহীন মানসিকতা

    একজন মানুষ তার কর্মব্যস্ততা থেকে সাত দিনের ছুটি পেলে মনে করে সে সাত মাসের ছুটি পেয়েছে। তাহলে একজন শিক্ষার্থী যদি ১৩-১৪ মাস ছুটি পায়, তাহলে তার মনের অবস্থ

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ