• Uncategorized

    লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে জুয়েলকে হত্যা করে পুড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে রংপুরবাসীর মানববন্ধন।

      প্রতিনিধি ৩০ অক্টোবর ২০২০ , ৩:২৬:৪০ প্রিন্ট সংস্করণ

    শরিফা বেগম শিউলী-রংপুর প্রতিনিধিঃ

    লালমনিরহাটের পাটগ্রাম বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ অফিসে বৃহস্পতিবার  এ ঘটনা ঘটে।শহীদুন্নবী জুয়েলকে পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননার গুজব ছড়িয়ে হত্যা করে আগুনে পুড়িয়ে ফেলে দূর্বৃত্তরা।শহীদুন্নবী জুয়েল রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক লাইব্রেরীয়ান ছিলেন।

    লালমনিরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান,শহীদুন্নবী জুয়েল ও তার সঙ্গী সুলতান জোবায়ের আব্বাস (৫১) বুড়িমারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় বাজার মসজিদে আসরের নামাজ আদায় করতে যান। দুজনের বাড়িই রংপুরে।

    অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম বলেন,শহীদুন্নবী জুয়েল মসজিদের সেলফ থেকে ধর্মীয় বই নিয়ে পড়তে যান। এ সময় তাক থেকে একটি কোরআন শরিফ নিচে পড়ে যায়। এতে কিছু মুসল্লির ধারণা হয়, ইচ্ছা করেই কোরআন শরিফ ফেলে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনা নিয়ে বাকবিতন্ডায়  এক পর্যায়ে ধর্ম অবমাননার গুজব আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে।

    গুজব ছড়িয়ে যাওয়ার কারণে মানুষ মনে করেছে তারা কোরআন অবমাননা করেছে। কিন্তু এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। উত্তেজিত জনতা এক পর্যায়ে মারমুখী হয়ে ওঠে। ওখানে ইউএনও, পুলিশ ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলেন। কিন্তু তারা তাকে (শহীদুন্নবী জুয়েল) রক্ষা করতে পারেনি।

    সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও কয়েকজন মুসল্লী শহীদুন্নবী ও জোবায়েরকে উদ্ধার করে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের ভিতরে নিয়ে যান। এ সময় উত্তেজিত মুসল্লিরা বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও করেন। পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করলেও তা ব্যর্থ হয়।

    এক পর্যায়ে মুসল্লিদের একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল এসে ইউনিয়ন পরিষদের দরজা ভেঙে শহীদুন্নবীকে পিটিয়ে হত্যা করে। এরপর মৃতদেহ ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের বাইরে এনে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দেয়।

    শহীদুন্নবীর সঙ্গে থাকা জোবায়েরকে উদ্ধার করে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় তিনটি মামলা হতে পারে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম।শহীদুন্নবী ও জোবায়ের কেন রংপুর থেকে লালমনিহাটে গিয়েছিলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে রবিউল ইসলাম বলেন, আমরা কারণ সম্পর্কে এখনো জানতে পারিনি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তবে যেখান থেকেই আসুক তারা তো যে কোনো মসজিদে নামাজ পড়তে যেতেই পারে।

    রংপুর কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.রাজিব বসুনীয়া সাংবাদিকদের জানান, শহীদুন্নবী জুয়েলের বাড়ি রংপুর শহরে। তিনি ক‍্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের লাইব্রেরিয়ানের কাজ করতেন। এক বছর আগে তার চাকরি চলে যায়। তখন থেকে কিছুটা মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। শহীদুন্নবী বুধবার সকালে তার বন্ধু সুমনের সঙ্গে বাসা থেকে বের হওয়ার পর আর ফেরেননি।

    লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর সাংবাদিকদের জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে, এলাকায় পুলিশ, বিজিবির পাশাপাশি র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।লালমনিরহাটের বুড়িমারী তে পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননার গুজব ছড়িয়ে হত্যা করে।

    আগুনে পুড়িয়ে ফেলা শহীদুন্নবী জুয়েল ধর্মভীরু ছিলেন।পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়সহ নিয়মিত কোরআন পাঠ করতেন তিনি। রংপুর নগরীর শালবনে তার বাসভবনে সরেজমীনে পরিবার ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে এসব তথ্য উঠে এসেছে।ষড়যন্ত্রে চাকরি চলে যাওয়ায় মানসিকভাবে আঘাত পাওয়ায় ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনে ঔষধ সেবন করতেন তিনি।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ