• আইন ও আদালত

    রামগতিতে জমি নিয়ে বিরোধ’ স্কুলছাত্রের জন্মনিবন্ধন সংশোধনী ফরমে সই করছেন না ইউপি চেয়ারম্যান

      প্রতিনিধি ১০ মে ২০২২ , ৪:৩২:৪৩ প্রিন্ট সংস্করণ


    এইচ.এম.আল-আমিন-লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি:

    লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন জসিম স্কুলছাত্রের জন্মনিবন্ধন সংশোধনী ফরমে সই করছেন না। ৪ মাস ধরে ওই ছাত্রের বাবাকে তিনি হয়রানি করছেন। জসিম চরবাদাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম শান্তুনু চৌধুরী বিষয়টি নিয়ে শুনানি করলেও ইউপি চেয়ারম্যান নিজের খামখেয়ালিতে অটল রয়েছেন। সোমবার (৯ মে) বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে ইউএনও নিজেই প্রতিবেদকের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

    ইউএনও জানিয়েছেন, চেয়ারম্যান ও অভিযোগকারীকে নিয়ে শুনানি করা হয়। এসময় চেয়ারম্যান জানায়, ‘আবেদনকারীর বাবা রামগতি পৌরসভার বাসিন্দা। এজন্য তিনি সই করবেন না’। এ ঘটনায় চেয়ারম্যানকে লিখিত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। প্রতিবেদন দেওয়ার পর পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জুলফিকার আলী চৌধুরী ও সাবিনা ইয়াছমিন দম্পতির ছেলে নুর আলী চৌধুরী ওহি ২০০৭ সালের ৯ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করে।

    চরবাদাম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব চরসীতা গ্রামের বড় বাড়ি তার স্থায়ী ঠিকানা উল্লেখ করে ২০০৮ সালের ২৬ জুন জন্মনিবন্ধন ইস্যু করা হয়। ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর এর সনদ দেওয়া হয়। এতে দেখা যায়, ওহির পুরো নামের স্থানে শুধু ‘অহি’ লিপিবদ্ধ হয়। এছাড়া জন্মনিবন্ধনটি ইংরেজিতেও লিপিবদ্ধ করা হয়নি। ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি অনলাইনে জন্মনিবন্ধনটি সংশোধন করে সই করার জন্য চেয়ারম্যানের কাছে জমা দেওয়া হয়। শিক্ষা সনদের কপিও জমা দেওয়া হয়েছিল। ওহি চরসীতা তোরাবআলী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। কিন্তু চেয়ারম্যান সাফ জানিয়ে দেন, সই করবেন না। সই না করায় ২৫ জানুয়ারি জুলফিকার ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

    ইউএনও ঘটনাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও ট্যাগ অফিসার হরিদাশ সরকারকে একইদিন নির্দেশনা দেয়। তদন্ত শেষে ২৩ ফেব্রুয়ারি তিনি জন্মনিবন্ধনটি সংশোধনের সুপারিশ করে ইউএনওর কাছে প্রতিবেদন জমা দেন। পরে সংশোধিত জন্মনিবন্ধনটি ইউপি কার্যালয়ের সার্ভেয়ারে যায়। অনলাইন থেকে সংশোধিত কপি সংগ্রহ করে পরিষদ সচিব মো. ফিরোজ আলম সই করেন। কিন্তু এবারো চেয়ারম্যান সই করেননি।

    এদিকে ৯ মার্চ জুলফিকার এ ঘটনায় ফের ইউএনওর কাছে চেয়ারম্যান সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। এতে ৪ এপ্রিল ইউএনও এ ঘটনায় শুনানির জন্য উভয়পক্ষকে চিঠি পাঠান। ১১ এপ্রিল উভয়ের উপস্থিতিতে শুনানি হয়।।জুলফিকার আলী চৌধুরী বলেন, চেয়ারম্যান জসিম আমার আপন চাচা। তার সঙ্গে আমাদের জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এজন্যই তিনি খামখেয়ালিভাবে আমার ছেলের সংশোধিত জন্মনিবন্ধন ফরমে সই করছেন না। এনিয়ে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. ফিরোজ আলম বলেন, আইনগতভাবে সংশোধনী ফরমে চেয়াম্যানের সই যৌক্তিক।

    কিন্তু চেয়ারম্যান উদ্দেশ্যমূলকভাবে দিচ্ছেন না। আমি আমার সই দিয়েছি চরবাদাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন জসিম বলেন, জুলফিকার পৌরসভার নাগরিক। তার ছেলের জন্মনিবন্ধন সংশোধনী ফরমে আমি কিভাবে সই করবো? নিউজ করেন, আমার কোন ক্ষতি হবে না। আমি সই দেবো না। প্রসঙ্গত, আলোচিত ইউপি চেয়ারম্যান জসিমের বিরুদ্ধে জিম্মায় রাখা মহিষ বিক্রি, ছাগল চুরির মামলা, ছাত্রলীগ নেতার স্ত্রীকে অপহরণ ও জমি দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। লক্ষ্মীপুর আদালত ও থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ