প্রতিনিধি ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ , ২:২২:৩০ প্রিন্ট সংস্করণ
এইচ.এম.আল-আমিন,লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে জাতি তার বীর ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। একুশের প্রথম প্রহর থেকে শ্রদ্ধার ফুলে ফুলে ভরে উঠে শহীদ মিনার গুলো। কিন্তু রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারির দিনটি পালনে অবহেলা দেখা গেছে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর রমিজ ইউনিয়নের পূর্ব মেহার আদর্শ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে।সেখানে শহীদ মিনার থাকলেও ভাষা শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভোর থেকে কেউ ফুল দিতে আসেনি। শহীদ দিবস পলনের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষের ছিলোনা কোন পূর্ব প্রস্তুতি। অযত্ন আর অবহেলায় বির্বণ অবস্থায় পড়ে থাকে শহীদ মিনার।
সকাল নয়টার দিকে স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র মোহাম্মদ আরিফ হোসেন এ অবস্থার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করলে টনক নড়ে কর্তৃপক্ষের। ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পর সকাল দশটার দিকে কয়েকজন শিক্ষক ও ছাত্রকে ডেকে তাড়াহুড়ো করে বেদীতে ফুল দেন প্রধান শিক্ষক আবু সৈয়দ ইয়ার মাহমুদ।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে অনেকে এ ঘটনার নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে মন্তব্য করেছেন। স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র মোহাম্মদ তসলিম মন্তব্য করে লেখেন, রাত থেকে স্কুলের শহীদ মিনারটা ফুলে রঞ্জিত থাকবে আর সকাল বেলায় সূর্যের আলোতে সেটা ঝকঝকে হয়ে উঠবে এমন দৃশ্য দেখার অপেক্ষায় ছিলাম। যারা ভাষার জন্য তাজা প্রান দিয়েছেন তাদের স্বরণ করা দরকার ছিল। আজকে এমন একটা দিনে ভাষা শহীদের মনে রাখার মত পরিবেশ কি ছিলনা ? তৌহিদুল হক রানা নামে একজন লেখেন, এমনটি দেখতে হবে ভাবিনি। ভাষা শহীদদের জন্য কিছুটা হলেও সম্মান প্রদর্শন প্রয়োজন ছিল।
স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী যোবায়েদ হোসেন এই প্রতিবেদককে জানান, ফেসবুকে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার দেড়ঘন্টা পর প্রধান শিক্ষক সহ আমরা কয়েকজন বেদীতে ফুল দিই। পরে আলোচনা সভা হয়।স্থানীয় বাসিন্দা আবদুজ্জাহের জানান, স্কুল কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল শহিদ মিনার পরিস্কার ও রং করে পূর্ব প্রস্তুতি নেয়া। কিন্তু তারা তা করেন নাই। দেরী হলেও বেদীতে ফুল দেয়া ও আলোচনা সভা করা হয়েছে।এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক আবু সৈয়দ ইয়ার মাহমুদ রতন বলেন, সকাল নয়টায় শহীদ মিনারে ফুল দেয়া হয়েছে। এরপর আলোচনা সভা হয়েছে। মাইকও চলতেছে। স্কুলের কিছু প্রাক্তন ছাত্র ক্ষোভে ভিডিও প্রকাশ করেছে।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল ওয়াহেদ মুরাদ বলেন, তারা ম্যানেজিং কমিটি বা অন্যান্যদের জন্য একটু অপেক্ষা করায় বেদীতে ফুল দিতে দেরী হয়েছে। এরপরে আলোচনা সভা হয়েছে। আগামীতে যেন এধরনের না হয় তার জন্য প্রধান শিক্ষককে সতর্ক থাকতে বলা হবে।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শান্তুনু চৌধুরী বলেন, তদন্ত কমিটির মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, কেউ যদি জাতিয় দিবস পালনে অবহেলা করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।