আরিফুল ইসলাম কারীমী-স্টাফ রিপোর্টারঃ
রাঙামাটির লংগদু উপজেলার আটারকছড়া ইউনিয়নে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে লংগদুর করল্যা ছড়ি আর এস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো আবদুর রহিম (৪৬) কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকার অর্থদণ্ড দিয়েছে রাঙামাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। মঙ্গলবার দুপুর ১ টায় রাঙামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ ই এম ইসমাইল হোসেন এ রায় দেন।
যাবজ্জীবন রায় ছাড়াও ভিক্টিমকে আগামী ৯০ দিনের মধ্য ১০ লাখ টাকা প্রদানের আদেশ দেন। এ টাকা দিতে ব্যর্থ হলে জেলা প্রশাসকের কালেক্টর নারী শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুসরণ করে আব্দুর রহিমের সকল স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করে নিলামে বিক্রয় করে প্রাপ্ত অর্থ ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক। মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২০ সালে ২৫ সেপ্টেম্বর ১৬ বছরের এক কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী ছাগল খুঁজতে করল্যা ছড়ির আর এস উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের দিকে যান।
এ সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম বিদ্যালয়ে ছিলেন। তৎকালীন করোনাকালীন সময়ে ছাত্রাবাসে কোন শিক্ষার্থী ছিল না। এ সুযোগে ঐ ছাত্রীকে লেবু নেওয়ার কথা বলে ছাত্রীকে ডাকেন। ছাত্রী লেবু নিতে গেলে আব্দুর রহিম ছাত্রীকে হাত ধরে রুমে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের পর এ বিষয়টি কাউকে না জানাতে ছাত্রীকে হুমকি দেন। পরবর্তীতে এ ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে সাম্প্রদায়িক বিরোধ সৃষ্টির চেষ্টা করেন।
এ ঘটনার পর ২০২০ সালের ৫ অক্টোবর ভিকটিমের মা লংগদু থানায় মামলা করেন। এ মামলা তদন্ত শেষে গত ২০২১ সালে ২৮ অক্টোবর আসামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। রায়ে বলা হয় আব্দুর রহিম অপরাধ থেকে বাঁচতে ধর্ষিতাকে ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করার কাগজপত্রও আদালতে দাখিল করেন। আব্দুর রহিম যে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন সে বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন ভিকটিম।
রায়ে আরো বলা হয় আসামি একজন বিবাহিত। এ ঘটনায় আব্দুর রহিম যেমন পরিবারের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করেন তেমনি শিক্ষকতার মহান পেশাকে কলঙ্কিত করেছেন। বিচারক তাঁর রায়ে আরো বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে রাঙামাটি জেলায় বসবাসরত পাহাড়ি বাঙালী সবাই আইনের দৃষ্টিতে সমান। বিচার বিভাগ সকলের জন্য উন্মুক্ত। ভিকটিমের পক্ষে আইনজীবী রাজীব চাকমা বলেন, আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি আব্দুর রহিম কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। বিজ্ঞ আদালতের রায়ের আমরা সন্তুষ্ট। আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি।
আসামী পক্ষের আইনজীবী মোকতার আহমেদ এ রায়ে আসামি ন্যায় বিচার পায়নি। আমরা আরো উচ্চ আদালতে যাব। রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী (পিপি) মো. সাইফুল ইসলাম অভি বলেন, ২০২০ সালের এ মামলাটি দ্রুততার সাথে নিষ্পত্তি হয়েছে। আসামীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ ছিল সেগুলো সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত এ রায় দিয়েছেন। এ রায়ে আমরা সুন্তুষ্ট।
E-mil: dailyalokito71sangbad@gmail.com
@বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোক চিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
Copyright © 2024 alokito71sangbad. All rights reserved.