• বরিশাল বিভাগ

    রাঙ্গাবালীতে চেয়ারম্যানের চাল আত্নসাতের প্রমাণ মিলেছে,ব্যবস্থা না নেওয়ায় অসন্তোষ জেলেরা।

      প্রতিনিধি ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৩:৪২:০৮ প্রিন্ট সংস্করণ

    মু,হেলাল আহম্মেদ রিপন-পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ

    পটয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় চলতি বছরে সাগরে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে জেলেদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তার ভিজি,এফ চাল আত্মসাতের অভিযোগের তদন্তে গঠিত কমিটি সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান মামুনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সুপারিশ করেছেন এমনটাই জানা যায়। রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রশাসনের গঠিত অভ্যান্তরীন তদন্ত কমিটির তদন্ত রিপোর্টে এ সত্যতা পাওয়া যায়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাশফাকুর রহমান পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক বরাবর ইতিমধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করবে বলে জানিয়েছেন ইউএনও।

    উক্ত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে রাঙ্গাবালী ইউনিয়ন পরিষদের মৎস্য ভিজিএফ তালিকার যাছাই বাছাই এবং পর্যালোচনা করে ১৯ জন মৃত ব্যক্তির নাম জেলেদের ভিজিএফ এর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া ভিজিএফ এর তালিকায় থাকা ৭৮ জনের কোন নাম পরিচয় কিংবা অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। অথচ ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে এবং ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে জেলেদের চাল বিতরণের মাস্টারোলে কোন কোন ব্যক্তির নামে বরাদ্দকৃত চাল উত্তোলন দেখানো হয়েছে। এছাড়া তদন্তকালে অভিযুক্ত ইউনিয়ন চেয়ারম্যান দাবী করেন ভিজিএফ এর তালিকায় ৫১ জনের নাম ভুলে দুইবার করা রয়েছে।

    রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান ও কমিটির আহবায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ তালুকদার বলেন, ‘ইউএনও মহোদয় আমাকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এতে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এবং আইসিটি সহকারী প্রোগ্রামারকে সদস্য রাখা হয়। আমাদের কমিটি উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে রাঙ্গাবালী ইউনিয়ন পরিষদের ভোটার তালিকা সংগ্রহ করে, তালিকার সাথে মিলিয়ে যাচাই বাছাই করি। যেসব বিষয় সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত হয়েছে সেসব বিষয় উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেছি।

    এ বিষয়ে রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাশফাকুর রহমান দৈনিক বাংলাদেশ কন্ঠ ও দৈনিক বরিশাল সমাচারকে বলেন, দুদকের দায়ের করা একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশে আমি উপজেলা পরিষদের অভ্যান্তরীন একটি কমিটির মাধ্যমে তদন্ত সম্পন্ন করিয়েছি। তদন্তে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের বিষয়টি প্রমানিত হয়েছে। এ বিষয়ে গত ১লা সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক মহোদয় এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করবেন বলে জানান।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহম্মদ কামাল হোসেন বলেন, রাঙ্গাবালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (সাইদুজ্জামান মামুন খান)এর বিরুদ্ধে দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদন আমরা পেয়েছি। পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আমরা উদ্যোগ গ্রহন করছি। অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করা হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন , যাই করা হোক আপনারা অবশ্যই এবিষয়ে জানতে পারবেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত রাঙ্গাবালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান মামুনের ব্যবহৃত মুঠোফোন এ ০১৭১২-৭০০১১২ নাম্বারে সরাসরি জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য না করে সম্মুখে কথা হবে এবং নিউজ না করার বিষেশ অনুরোধ জানান তিনি।

    এদিকে এক মাসের অধিক সময় নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের তদন্ত সম্পন্ন করা এবং গত ২৮ দিনেও জেলা প্রশাসন কর্তৃক তদন্ত প্রতিবেদনের কোন অগ্রগতি না করায় উপজেলার অভিযোগকারী জেলেরা এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান রাঙ্গাবালী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় আদৌ অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা তা নিয়েও অভিযোগকারী জেলেরা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ইতিমধ্যে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ