• Uncategorized

    মামুনুল হক ও তার সিন্ডিকেট !

      প্রতিনিধি ৯ এপ্রিল ২০২১ , ১:২৫:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ

    ডেস্ক: মামুনুল হক যে শুধু অন্যান্যদের কোণঠাসা করতেন এমনটি নয় অনেক ক্ষেত্রে সমগোত্রীয়দেরও কোণঠাসা করে রাখতেন। যার প্রমাণ মিলবে কওমী মাদরাসা ভিত্তিক বক্তাদের দিকে তাকালে, কারণ তাদের মধ্যে একটা সময় পর্যন্ত সবচেয়ে বেশী জনপ্রিয় বক্তা ছিল/আছে হাফিজুর রহমান সিদ্দিকী কুয়াকাটা। দেখা যেতো অধিকাংশ সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হাফিজুর রহমান বেশী দাওয়াত পেতেন। এতে ঈর্ষান্বীত হয়ে মহামুনি তার অনুসারীদের নিয়ে ‘রাবেতাতুল ওয়ায়েজীন বাংলাদেশ’ নামে একটি সিন্ডিকেট/কমিটি গড়ে তোলেন যার প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে আছেন মহামুনি নিজেই আর এর সভাপতি আব্দুল বাসেত খান সিরাজি এবং সাধারণ সম্পাদক হাসান জামিল, যিনি (জামিল) ঐদিন রিসোর্টের ঘটনা ঘটার পরক্ষণেই একটা কালজয়ী স্ট্যাটাস দিয়ে গুরুকে রক্ষার লড়াইয়ে নেমেছিলেন যে, ‘আমি তাকে বলেছি অনেক দিন হলো পরিশ্রম করে হাঁপিয়ে উঠেছেন একটু আরাম আয়েশ করে আসেন’ কিন্তু দুঃখের বিষয় এই টেম্পার তিনি বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেননি! যখনই মহামুনির অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়েছে উনি তখনই তার ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ করে দিয়েছেন।

    এই সিন্ডিকেটে মামুনুল হক, বাসেত সিরাজী এবং হাসান জামিল ছাড়া আরও যারা রয়েছেন খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ূবী, রাফী বিন মুনির, কামরুল ইসলাম, মাহফুজুল হক, সাইদ আনসারী (টেকেরহাটের পীর ও জামাত নেতা), সাখাওয়াত রাজি, ও বর্তমান সময়ের শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার শিশু বক্তা খ্যাত রফিকুল ইসলাম মাদানী সাহেব যার কর্মকান্ড এবং মহামুনির প্রতি তার অগাধ আস্থার ব্যাপারে আপনারা ইতোমধ্যে অবগত হয়েছেন! কওমী মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে এই সিন্ডিকেট শুধু ওয়াজের ময়দান নয়, কওমী মাদরাসার শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ (বেফাক), আল হাইআতুল উলইয়া (সরকার স্বীকৃত ইসলামী শিক্ষা বোর্ড), হেফাজত, ইসলামী রাজনীতি, তাবলীগ ও খানকা সকল জায়গায় প্রভাব বিস্তার করেছেন!

    ক. তাবলীগে বিভক্তিঃ
    এই সিন্ডিকেট তাবলীগে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেছে কিন্ত ইঞ্জিনিয়ার আসিফুল হাসানসহ তাবলীগের অনেক মুরব্বী তাদের প্রভাব বিস্তারকে মেনে নেয়নি বলে তাবলীগকে সা’দ পন্থী ও জুবায়ের (অজাহাতী) পন্থী নামে দুটি গ্রুপে বিভক্তি করেছে।

    খ. জামাতের সাথে আঁতাতঃ
    দেওবন্দের আদর্শের সাথে মওদুদীবাদ ও জামাত ইসলামের সাথে বিরোধ থাকলেও নিজেদের প্রভাব-বলয় বাড়াতে এই সিন্ডিকেট জামাতের সাথে গোপন আঁতাতে লিপ্ত। মামুনুল ও তাদের অনুসারীরা রাজাকার দেলোয়ার হোসেন সাইদীর মুক্তি দাবী করে। গণজাগরণ মঞ্চকে সমর্থন দেওয়ার কারণে মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ ও তার ছাত্রদেরকে কওমী অঙ্গনে কোণঠাসা করে রাখে, অথচ তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা যা নিয়ে বিস্তারিত অন্যদিন লিখবো ইনশাআল্লাহ।

    গ. হেফাজত দখলঃ
    ভয়ঙ্কর এই সিন্ডিকেট হেফাজত দখল করার জন্য হাটহাজারী মাদরাসায় তান্ডব চালিয়ে আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী সাহেবকে হত্যা পর্যন্ত করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে এবং শফী সাহেবের অনুসারীদের হটিয়ে রাবেতা সিন্ডিকেট, খেলাফত মজলিস ও পাকিস্তানপন্থী আলেম দিয়ে হোফাজতের পকেট কমিটি করেছে।

    ঘ. চরমোনাই পীর ও হেফাজতঃ
    হেফাজতের সকল কর্মসূচীতে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সমর্থন থাকলেও মামুনুল ও তার অনুসারীরা চরমোনাই পীরকে সবসময় কোণঠাসা করার চেষ্টা করে। কারণ কওমীপন্থীরা তাদেরকে ইসলামী দল হিসাবে স্বীকৃতি দিতে চায় না, পাশাপাশি ৯০ দশক পর্যন্ত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কে বিদআতি মনে করা হতো যদিও কিছু কিছু কর্মকান্ডে তারা এবং তাদের ছাত্র সংগঠন (ইশা) হেফাজত ও জামাত ইসলাম কে ও ছাড়িয়ে যায়।

    বর্তমান সময়ে যারা সত্যকে আড়াল করে অন্ধের মতো দিবালোকের ন্যায় সত্য ও স্পষ্ট একটি বিষয় কে পাশ কাটিয়ে মহামুনিকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রত্যেকেই কওমী অঙ্গনে এই বিশেষ সিন্ডিকেটের সম্মানিত সদস্য।

    লেখকঃ- তুহিন রেজা
    ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক
    বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদ।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ