• Uncategorized

    মানিকগঞ্জের আখ চাষিরা ভাল নেই

      প্রতিনিধি ৩১ আগস্ট ২০২০ , ৪:৪৭:০৩ প্রিন্ট সংস্করণ

     

    মো আরিফুর রহমান অরি-মানিকগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

    দু-দফা বন্যার কারণে বাম্পার ফলন ও ভাল বাজারদর থাকার পরও মানিকগঞ্জের আখ চাষিরা কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বন্যার পানিতে তলিয়ে শত শত হেক্টর জমির আখ মরে যাচ্ছে।

     

    মানিকগঞ্জ সদর, সিংগাইর, সাটুরিয়া উপজেলার বিস্তৃর্ণ জমিতে বাণিজ্যিকভাবে বম্বাই গেন্ডারি চাষ করেছে কৃষকরা। তাছাড়া শিবালয়, দৌলতপুর, হরিরামপুর ও ঘিওরে কিছু কিছু এলাকায় আখ চাষ হয়ে থাকে।মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা গ্যানেশ চন্দ্র রায় জানান,চলতি মৌসমে মানিকগঞ্জে বম্বাই জাতের আখ ১১ হাজার ১১৬ একর জমিতে চাষ করা হয়েছে।

     

    মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গিলন্ড গ্রামের আখ চাষি আওলাদ হোসেন বলেন, ‘আখ চাষ করার পর ১১/১২ মাস পর বিক্রি করার উপযোগী হয়। আমরা সাধারণ কার্তিক মাসে চারা রোপণ করে থাকি। আমরা সাধারণ বম্বাই জাতের আখ চাষ করে থাকি। এক পাখি (৩০ শতাংশ) জমিতে আখ চারা থেকে বিক্রি করা পর্যন্ত ২২- ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। ফলন ভাল হলে খেত ধরে পাইকারি বিক্রি করলে ৫০- ৬০ হাজার টাকা বিক্রি করা যায়। খুচরা বিক্রি করলে আরও বেশী দামে বিক্রি করা যায়।’

     

    সাটুরিয়া উপজেলার রাধানগর গ্রামে শতাধিক কৃষক বাণিজ্যিকভাবে আখ চাষ করে আসছেন।মানিকগঞ্জে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। দীর্ঘদিন বন্যার পানি থাকায় অধিকাংশ আখ খেতেই মরে যাচ্ছে। কিছু উঁচু এলাকায় এবং আংশিক ডুবে যাওয়া আখ বাজারে বিক্রি করছেন কৃষকরা। তাতে উৎপাদন খরচও উঠছে না।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শত শত হেক্টর জমির আখ খেতেই মরে যাচ্ছে।

     

    আখ চাষি শাজাহান বলেন, ‘আমাদের গ্রামের অধিকাংশ কৃষক আখ চাষ করে থাকেন। কিন্তু এ বছর অধিকাংশ জমির আখই মরে যাচ্ছে। আমি ৯০ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করেছিলাম। বন্যার কারণে আমার দেড় লাখ টাকার আখ মরে গেছে।’

     

    একই গ্রামের স্বপন আলী বলেন, ‘ঈম্বরদি জাতের ২০ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করেছিলাম। বন্যার কারণে আমার সব আখ মইরা গেছে। এ বছর বাজার ভাল ছিল, তাই ৩৫/৪০ হাজার টাকা আখ বিক্রি করতে পারতাম।’

     

    রাধানগর গ্রামের সোনারজান বেগম বলেন, ‘আমি ধার-দেনা কইরা ৫০ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করেছিলাম। বন্যার পানিতে আখ ডুইবা ছিল এক মাস। তাড়াতাড়ি নামলে হয়তো বিক্রি করতে পারতাম। এখন আমার আখ গরুকে দিলেও খায় না। মানুষকে নিতে বলে তাও নেয় না।’আব্দুর রহমান নামে আরেক আখ চাষি বলেন, ‘গত বছর ভাল দাম পাওয়ায় এ বছর ১৫০ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করেছি। কিন্তু আমার ১৩০ শতাংশ জমির আখ বন্যার পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। ২০ শতাংশ জমির আখ বিক্রি করছি। কিন্তু দীর্ঘদিন পানি জমে থাকায় আখে দুর্গন্ধ হয়ে গেছে। ফলে মানুষ কিনতে চায় না। খেত ধরে বিক্রি করতে পারলেও ২ লাখ টাকা পাইতাম।’

     

    মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গিলন্ড গ্রামের মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘এ বছর আমি ৬০ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করেছি। আখ খেতে পানি উঠছিল। বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। কিন্তু আমার খেতে নিচু থাকায় পানি জমে আছে। আরও এক মাস পর বিক্রি করতে হত। কিন্তু পানির কারণে আগেই বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে আমি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’

     

    মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক শাজাহান আলী বিশ্বাস বলেন, ‘বন্যার পানির কারণে অনেক আখ চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবার উঁচু জমিতে থাকা চাষিরা আখ বিক্রি শুরু করেছে। চাহিদার তুলনায় আখ কম থাকায় ওই সমস্ত চাষিরা ভাল দাম পাচ্ছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হবে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ