• আমার দেশ

    বিশ্বকে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের দায়িত্ব ভাগ করে নিতে হবে

      প্রতিনিধি ৩ নভেম্বর ২০২১ , ৭:০০:৪২ প্রিন্ট সংস্করণ

    মোঃ লুৎফর রহমান লিটন-সলংগা সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

    জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাস্তু হারিয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে যাদের অভিবাসী হতে হচ্ছে, তাদের দায়িত্ব ভাগ করে নিতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার সকালে স্কটিশ পার্লামেন্টে “কল ফর ক্লাইমেট প্রসপারিটি” শীর্ষক অনুষ্ঠানে এক ভাষণে এ আহ্বান জানান তিনি।তিনি বলেন, সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি, নদী ভাঙ্গন, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, বন্যা ও খরার মতো প্রাকৃতিক ঘটনায় প্রভাবিত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়া জলবায়ু অভিবাসীদের দায়িত্ব বিশ্বকে অবশ্যই ভাগ করে নিতে হবে। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি অবশ্যই সঠিকভাবে সমাধান করতে হবে।

    তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে ইতিমধ্যে জলবায়ু বাস্তুচ্যুত ৬০ লাখ মানুষ রয়েছে। এছাড়া আরো অতিরিক্ত ১১ লক্ষ মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের বোঝা টানতে হচ্ছে। এ সমস্যার মোকাবেলা করা আরও কঠিন করে তুলেছে কোভিড-১৯ মহামারী।স্কটিশ পার্লামেন্টে কমিটি কক্ষে ‘এ বাংলাদেশ ভিশন ফর গ্লোবাল ক্লাইমেট প্রসপারিটি’ শিরোনামে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।

    জলবায়ু সঙ্কটে বাস্তু হারিয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে যাদের অভিবাসী হতে হচ্ছে, তাদের দায়িত্ব ভাগ করে নিতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    তিনি বলেছেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, নদী ভাঙ্গন, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, বন্যা ও খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনায় বাস্তুচ্যুত হওয়া জলবায়ু অভিবাসীদের দায়িত্ব বিশ্বকে অবশ্যই ভাগ করে নিতে হবে। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি অবশ্যই সঠিকভাবে সমাধান করতে হবে।“

    রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা বাসস জানায়, বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন উপলক্ষে স্কটল্যান্ড সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার স্কটিশ পার্লামেন্টে আয়োজিত ‘কল ফর ক্লাইমেট প্রসপারিটি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান।

    তিনি বলেন, বাংলাদেশে ইতোমধ্যে ৬০ লাখ মানুষ জলবায়ু সঙ্কটে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অতিরিক্ত আরো ১১ লাখ রোহিঙ্গার ভার বইতে হচ্ছে। এ সমস্যার মোকাবেল করা আরও কঠিন করে তুলেছে কোভিড-১৯ মহামারী।

    স্কটিশ পার্লামেন্টে কমিটি কক্ষে এ আয়োজনে ‘আ বাংলাদেশ ভিশন ফর গ্লোবাল ক্লাইমেট প্রসপারিটি’ শিরোনামে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন শেখ হাসিনা।

    স্কটিশ পার্লামেন্টে পৌঁছালে স্পিকার অ্যালিসন জনস্টোন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা এবং সিভিএফ দূত সায়মা ওয়াজেদ হোসেনও উপস্থিত ছিলেন এ সময়।

    জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর জোট ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ) এবং ভালনারেবল২০ (ভি২০) সভাপতি শেখ হাসিনা তার বক্তৃতায় বলেন, কার্যকর ও পর্যাপ্ত জলবায়ু অর্থায়নই হতে পারে সমৃদ্ধি অর্জনের চাবিকাঠি। এমসিপিপি (মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান) সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য কিছু সুপারিশ তিনি তুলে ধরেন।

    শেখ হাসিনা বলেন, সবচেয়ে বেশি কার্বন নির্গমনকারী দেশগুলেকে অবশ্যই নির্গমন কমিয়ে আনার ব্যাপকভিত্তিক জাতীয় পরিকল্পনা (এনডিসি) ঘোষণা এবং বাস্তবায়ন করতে হবে

    আরেকটি প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশগুলোকে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর ওপর বিশেষ মনোযোগ দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রদানের ব্যাপারে তাদের অঙ্গীকার অবশ্যই পূরণ করতে হবে।

    তিনি আরো বলেন, এই পরিমাণ অর্থায়ন হবে বিদ্যমান ওডিএ (অফিশিয়াল উন্নয়ন সহায়তা) এর অতিরিক্ত এবং বিভিন্ন জলবায়ু অর্থায়নের মধ্যে সমন্বয় থাকা দরকার।
    তিনি আরো বলেন, অভিযোজন ও প্রভাব প্রশমনের ক্ষেত্রে জলবায়ু অর্থায়ন বিতরণে মধ্যে ৫০:৫০ অনুপাত থাকা উচিত।

    সর্বশেষ প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী উন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সাশ্রয়ী মূল্যে সবুজ প্রযুক্তির প্রসারের পরামর্শ দেন, যাতে মুজিব জলবায়ু পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।

    শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব নেতারা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাবের অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জ ও ঝুঁকি মোকাবেলায় তাদের বৈশ্বিক সম্মিলিত প্রচেষ্টার সমন্বয়ে জলবায়ু কর্মসূচির বিষয়ে তাদের সংকল্প ও উচ্চাকাক্সক্ষা প্রকাশ করতে গ্লাসগোতে সমবেত হয়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে কোনো দেশই মুক্ত নয় বলেও জানান তিনি।

    তিনি বলেন, “আমরা মানবজাতির সবচেয়ে গুরুতর বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য এটি একটি বড় হুমকি। যদিও আমরা বিশ্বব্যাপী কার্বন নির্গমনের ক্ষেত্রে ০.৪৭ শতাংশের কম অবদান রাখি।’

    তিনি আরো বলেন, চরম তাপমাত্রা, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত, বন্যা ও খরা, অধিকতর তীব্র গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ঋতু পরিবর্তন, নদী ভাঙ্গন, সমুদ্রের অম্লকরণ বাংলাদেশ ও অন্যান্য জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন ও জীবিকার ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

    বাংলাদেশ এমসিপিপি’র মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক বিভিন্ন খাতে পরিবর্তন ঘটাতে পারে। তিনি বলেন, “আমরা সবুজ বিনিয়োগের জন্য বৈশ্বিক তহবিল থেকে অর্থায়ন পাবো এবং আমাদের তরুণদের শিক্ষার মান ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে বলে আশা করি।দ্রুত একটি উন্নত দেশের মর্যাদা লাভের লক্ষ্যে পৌঁছাতে এটি আমাদেরকে সাহায্য করবে বলেও আশা করছেন তিনি।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ