• Uncategorized

    বিলুপ্তির পথে বসেছে ঐতিহাসিক মজিদবাড়িয়া শাহী জামে মসজিদ।

      প্রতিনিধি ২৬ জানুয়ারি ২০২১ , ১২:৩৮:২৫ প্রিন্ট সংস্করণ

    বরিশাল বিভাগের সর্বকনিষ্ঠ ক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে প্রাচীন সভ্যাতার ছোয়ায় মুসলিম স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার মজুদবাড়িয়ায় অবস্থীত ঐতিহাসিক মজিদবাড়িয়া শাহী জামে মসজিদ।

    আদিপত্য ইতিহাস থেকে জানাযায়,আনুমানিক ৫ শত বছর আগে সুলতানি শাসন আমলে স্থাপিত হয় এ শাহী জামে মসজিদটি। এই পুরাকীর্তিটি কাগজ-কলমে সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধীনে থাকলেও বর্তমানে চরম অযত্নে অবহেলায় নষ্ট হবার পথে এই মসজিদটি।

    স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাযায়, মসজিদের নামানুসারে ঐ এলাকার নাম হয়েছে মসজিদবাড়িয়া। পরে মজিদ নামে এক ইউপি চেয়ারম্যান মসজিদবাড়িয়ার পরিবর্তে ইউনিয়নের নাম মজিদবাড়িয়া করেন বলে স্থানীয় সূএে জানাযায়। দীর্ঘ দিন সংস্কারের অভাবে বর্তমানে মসজিদটির সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য হারাতে বসেছে এই পূরাকৃত্রি।

    তার পরও ঐতিহাসিক এ মসজিদটি দেখতে প্রতিদিন শত শত নারী-পুরুষ আসেন মজিদ বাড়িয়ায়। পটুয়াখালী শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ- পশ্চিমে ও বরগুনা জেলা শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার পূর্বে নিদর্শন এই মসজিদবাড়িয়া শাহী জামে মসজিদটি অবস্থিত।

    বিভিন্ন সূত্র থেকে আরে জানা যায়, ইলিয়াছ শাহী বংশের এক স্বাধীন সুলতান রুকনুদ্দীন শাহ বাকলা দখল করে ১৪৬৫ সালে মির্জাগঞ্জ থানার মজিদবাড়িয়া গ্রামে এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ নির্মাণ করেন।।

    উক্ত মসজিদটি চন্দ্রদ্বীপের (বর্তমান বরিশাল বিভাগের) প্রথম ইটের নির্মিত কীর্তি আর উজিয়ল নামে এক মিস্ত্রি মসজিদটির নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ করেন। মসজিদে তিনটি দৃষ্টিনন্দন কারুকার্যখচিত মেহরাব। পূর্ব দিকে তিনটি খিলান পথ, ছয়টি আট কোণার মিনার ও সুদৃশ্য পিলার সুন্দয্যের সাথে দাড়িয়ে রয়েছে।

    পূর্ব দিকের বারান্দাযুক্ত মসজিসটির পূর্ব-উত্তর ও দক্ষিণ দিকে দু’টি করে জানালা রয়েছে। দীর্ঘ দিন সংস্কারের অভাবে দরজা-জানালা কপাট ও পিলারগুলোর অস্তিত্ব বিলীনের পথে। বিশাল এক গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদটি রড ও সিমেন্ট ছাড়াই চুনা সুরকি ও পোড়ামাটির ইট দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদের দেয়াল প্রায় ৭৫ ইঞ্চি পুরো।

    আর মসজিদের ভেতরের দিকে রয়েছে বিভিন্ন কারুকার্যখচিত মুসলিম স্থাপত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন। মসজিদ-সংলগ্ন একটি বড় দিঘি রয়েছে। মুসলিস্নরা এখানে ওজু ও গোসল করেন।

    মসজিদ-সংশ্লিষ্ট শিলালিপি থেকে এর ইতিহাস জানা গেলেও বর্তমানে শিলালিপিটি উধাও হয়ে গেছে। ১৮৬০ সালে কমিশনার মি. রেলির রিপোর্ট থেকে জানা যায়, কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটি জাদুঘরে শিলালিপিটি সংরক্ষিত রয়েছে। মসজিদটি বর্তমানে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আওতায় রয়েছে।

    স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন, মসজিদটি মাটির নিচ থেকে অলৌকিকভাবে গজিয়ে উঠেছে। দ্রুত সংস্কার করলে মসজিদটি আরো দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। বাংলাদেশে মুসলিম শাসনের ইতিহাস-ঐতিহ্য, ইসলামি স্থাপত্যশিল্প হিসেবে টিকে থাকবে বহুদিন।

    এখানে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন পরগনার ইয়াকিন শাহ ও কালাশাহ। মসজিদের দক্ষিণ পূর্ব পাশেই রয়েছে তাদেরসহ আরও দুটি কবর। প্রতিবছর ৩০ কার্তিক বাৎসরিক মাহফিল আয়োজন করে এন্তেজামিয়া কমিটি। মাহফিলে দেশবরেণ্য বিভিন্ন আলেম-ওলামা ওয়াজ করেন প্রতি বছর এখানে।

    স্থানীয় জনসাধারণের একটাই প্রানের দাবী উদ্ধর্তন কতৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন অএ এলাকার সুশীল সমাজের জনগন।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ