• আইন ও আদালত

    বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা অব্যাহত আহত ৯৫

      প্রতিনিধি ৮ জানুয়ারি ২০২২ , ৫:৪৮:২৮ প্রিন্ট সংস্করণ

    নিউজ ডেস্কঃ

    দেশের বিভিন্ন স্থানে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় ৯৫ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে নেত্রকোনার কেন্দুয়া ও মদনের তিন ইউনিয়নে হামলা-সংঘর্ষে আহত হন ৪৫ জন। এছাড়া শরীয়তপুর, ভোলা, বগুড়া, কুমিল্লা, মানিকগঞ্জ ও টাঙ্গাইলে বিজয়ী ও পরাজিত চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সহিংসতা হয়েছে। এসব ঘটনায় বাকিরা আহত হয়েছেন। এছাড়া অনেক স্থানে প্রতিপক্ষের বাড়িঘর ও দোকানপাটেও হামলা-ভাঙচুর হয়েছে। পুলিশ বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার মামলায় চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ২৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- নেত্রকোনা ও কেন্দুয়া : শুক্রবার বিকালে কেন্দুয়া উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নে বিজয়ী ইউপি সদস্য জুয়েল মিয়া ও পরাজিত প্রার্থী ইসলাম উদ্দিনের সমর্থকদের মাঝে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের ২৫ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ৭ রাউন্ড গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অপরদিকে শুক্রবার দুপুরে গন্ডা ইউনিয়নের সাধার গ্রামে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। এদিকে মদন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর লোকজন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার হেলাল উদ্দিন তালুকদারের ওপর হামলা করেছে। পরে সংঘর্ষে দুপক্ষের ৯ জন আহত হয়েছেন।
    মনপুরা (ভোলা) : ১নং মনপুরা ইউনিয়নে সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীরের বাড়িতে হামলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান মনোনয়ন ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হামলা বলে অভিযোগ করেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আমানত উল্যাহ আলমগীর। এ সময় হামলাকারীরা চেয়ারম্যানের মা-ভাইসহ ১০ জনকে মারধর করে। এছাড়া চেয়ারম্যান সমর্থিত ৩ ব্যবসায়ীর দোকান ভাঙচুর করা হয়। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইদ আহমেদ বলেন, চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাইনি। পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    শরীয়তপুর : নড়িয়ার নশাসনে বিজয়ী মেম্বার ও তার সমর্থকদের ওপর হামলা করে পরাজিত মেম্বার প্রার্থী ও তার সমর্থকরা। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে বিজয়ী মেম্বার বাদশা মুন্সিসহ উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত বিজয়ী মেম্বার বাদশা মুন্সী বলেন, আমার সমর্থকরা বিজয় মিছিল বের করলে পরাজিত প্রার্থী ও তার সমর্থকরা হামলা চালিয়েছে।
    বগুড়া : দুপচাঁচিয়ার চামরুল ইউনিয়নের পোথাট্টি গ্রামে বিজয়ী মেম্বার মীর আবদুর রহিমের সমর্থকদের ওপর হামলা চালায় পরাজিত বর্তমান মেম্বার মোকলেছার রহমান বাবু ও তার সমর্থকরা। শুক্রবার দুপুরের দিকে এ হামলায় নারীসহ অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন। তাদের স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
    গুরুদাসপুর (নাটোর) : বিদ্রোহী প্রার্থী হাজেদা বেগমের পক্ষে কাজ করায় মিলন সরকার নামে এক যুবককে কুপিয়ে জখম করেছে নৌকার প্রার্থী আব্দুল মতিন মাস্টারের সমর্থকরা। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ৫নং ধারাবারিষা ইউনিয়নের ধারাবারিষা দক্ষিণ পাড়ার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৬ জনের নামে গুরুদাসপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে। মিলন সরকার ওই গ্রামের লুৎফর রহমান সরকারে ছেলে।
    বুড়িচং (কুমিল্লা) : শুক্রবার বুড়িচং উপজেলার ৫নং পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নে নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জাহের সমর্থকদের ওপর হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে ৭ জন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন- সুলতান আহাম্মেদ মুন্সি, আবদুল কাদের, সুহেল আহাম্মেদ, রানা, মাঈন উদ্দিন ও ওমর ফারুক।
    দেলদুয়ার (টাঙ্গাইল) : দেলদুয়ারে জনপ্রতিনিধি হিসেবে দাওয়াত পেয়ে মেলায় গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হয়েছেন নবনির্বাচিত মেম্বার শামীম মিয়া। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের বোয়ালজান গ্রামের জোবদুল পীরের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। মেলায় উপস্থিত লোকজন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।
    ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) : সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সুলতান তালুকদারের কর্মী-সমর্থকদের বসতঘরে হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আলাউদ্দিন শাহের কর্মী-সমর্থকরা। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার বনগাবী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ধর্মপাশা থানার এসআই সুমন চন্দ্র দাস বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার পরপরই অভিযান চালিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী আসামি আলাউদ্দিন শাহসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
    পাবনা : বেড়া উপজেলার জাতসাখিনী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আনোয়ারা আহমেদ পরাজিত হয়ে কাশীনাথপুরে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি তার লোকজন ওই কার্যালয়ে আসেন এবং ক্ষুব্ধ হয়ে ভাঙচুর চালান। জাতসাকিনী ইউনিয়নের এ অস্থায়ী কার্যালয়টিকে তিনি তার নির্বাচনি কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পরাজিত আনোয়ারা আহমেদ।
    ভোলা : ইলিশা ইউনিয়নে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার বিচার দাবিতে ভোলা-লক্ষ্মীপুর সড়ক অবরোধ করেছে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী সরোয়ারদ্দি মাস্টারের সমর্থকরা। এ সময় সড়কের ওপর টায়ার জ্বালানো হয়। এতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
    আরও বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ও গ্রেফতার : গাজীপুরের শ্রীপুরে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় তিনজনকে মারধর করেছে এক মেম্বার প্রার্থী। দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার আলোকডিহি ইউনিয়নে সহিংসতার অভিযোগে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মির্জা লিয়াকত আলী বেগ লিটনসহ ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সাতক্ষীরার আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নে পালটাপালটি মামলায় ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ