• জনপদ

    বালু নদে সেতু নির্মাণকাজ ১৮ বছরে তিনবার বন্ধ

      প্রতিনিধি ২৬ ডিসেম্বর ২০২১ , ২:৪৪:৪৫ প্রিন্ট সংস্করণ

    নিউজ ডেস্কঃ

    অনিশ্চয়তায় রামপুরা কায়েতপাড়া-ভুলতা সংযোগ সড়ক * শিগগির কাজ শুরু হবে : ঠিকাদার * পরবর্তীতে অনুমোদনের ভিত্তিতে কাজ করা যাবে : প্রকৌশলী
    বিআইডব্লিউটিএ’র আপত্তির কারণে তৃতীয় দফায় বন্ধ হয়ে গেছে বালু নদের ওপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজ। একই সঙ্গে বন্ধ হয়ে গেছে ঢাকার রামপুরা ও রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া-ভুলতা সড়কের নির্মাণকাজ। ফলে রাজধানীর খিলগাঁও থানাধীন ডিএসসিসির ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রত্যন্ত এলাকার ও রূপগঞ্জের লাখো মানুষের দুর্ভোগ কমছে না। এক বছর হয়ে গেল কাজ বন্ধ।
    জানা গেছে, বালু নদের ওপর সেতু নির্মাণের আশায় গত ১৮ বছর ধরে অপেক্ষায় আছেন ঢাকার নাসিরাবাদ ও রূপগঞ্জের বাসিন্দারা। এ সেতু হলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের বালুরপাড়, ইদারকান্দি, ফকিরখালীসহ পাঁচটি গ্রাম ও রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের যোগাযোগ সহজ হবে। এ সড়ক দিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে অন্তত ৩০টি রুটের যানবাহন চলাচল করবে। এতে সময় বাঁচবে, যানজট থেকে মুক্তি মিলবে। উন্নয়নের ছোঁয়া লাগবে সেতুর আশপাশের এলাকায়। শিগগির কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সেতুর বর্তমান ঠিকাদার সিরাজুল ইসলাম কামাল।

    নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের সূত্রে জানা গেছে, প্রায় পাঁচ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৭৫.৩০ মিটার দৈর্ঘ্য এ সেতুর নির্মাণকাজ সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে এক বছরের মধ্যে সম্পন্ন করার কথা। গত ২০০৪-২০০৫ অর্থবছরে বরাদ্দ মেলে মাত্র ৫০ লাখ টাকা। অসমাপ্ত বালু সেতু নির্মাণে দ্বিতীয় দফায় দরপত্র আহ্বান করা হয়। এ সময় নতুন করে বরাদ্দ দেওয়া হয় প্রায় ১৩ কোটি টাকা। মেসার্স ইউনুস অ্যান্ড বাদ্রার্স এবং মেসার্স সরদার এন্টারপ্রাইজ (জেভি) সেতু নির্মাণের কাজ পায়। সে অনুযায়ী চলতি বছরের মে মাস থেকে কাজ শুরু করার কথাও ছিল। কিন্তু গত ২৫ জুন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ সেতু নির্মাণে বাধা দেয়। এ সময় বিআইডব্লিউটিএ বালু নদকে তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করার তকমা দেখিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি (যার নং-২৬৭৯৯০০৮১৬) দেয়। এরপর থমকে যায় নতুন করে সেতুর নির্মাণকাজ।
    অভিযোগ রয়েছে, সওজের অধীনে বালু নদের উজানে গত ২০০৩ সালে ১০৯ মিটার ও ১৯৯৩ সালে ১১০ মিটার দুটি সেতু নির্মাণ করেছে। এ ছাড়া এলজিইডির অধীনে আরও দুটি সেতু রয়েছে। শুধু এ সেতু নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র হঠাৎ বাধায় হতবিহ্বল সওজ। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে স্থানীয়রা ক্রমেই ফুঁসে উঠছেন। সেতুর নির্মাণকাজ শুরু না হলে বিক্ষোভ, মানববন্ধন, অবরোধসহ বড় ধরনের কর্মসূচি পালনের আলটিমেটাম দিয়েছেন স্থানীয়রা।
    ডিএসসিসির ৭৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আকবর হোসেন বলেন, সেতুটি নির্মাণ হলে রূপগঞ্জসহ রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠের খিলগাঁও, সবুজবাগ, ডেমরাসহ আশপাশের কয়েক লাখ মানুষের ভাগ্যের চাকা ঘুরে যাবে। খুলে যাবে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার। তৈরি হবে নতুন নতুন শিল্পকারখানা ও গার্মেন্ট শিল্প। সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থানের। সেতুটি নির্মিত হলে কাঁচপুর ও সুলতানা কামাল সেতুর যানজট কমে যাবে। দেশের উত্তরাঞ্চল সিলেট, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদীসহ ১০ জেলার যানবাহন অতি সহজে ভুলতা দিয়ে কায়েতপাড়া হয়ে রাজধানী রামপুরায় প্রবেশ করতে পারবে।
    নারায়ণগঞ্জ জেলা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী ইকবাল মোবাইল ফোনে যুগান্তরকে বলেন, বালু নদের নির্মাণাধীন ওই সেতুর কাজ এখন বন্ধ থাকবে। বিআইডব্লিউটিএ’র আপত্তির কারণে এখন আগের ডিজাইনে সেতুর কাজ করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে যদি সেতুর স্প্যানের ওপরে কাজ করা সম্ভব হয় তাহলে পরবর্তীতে অনুমোদনের ভিত্তিতে কাজ করা যাবে। অন্যথায় পরবর্তীতে বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হতে পারে।
    নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) বলেন, বালু নদের সেতুটি হলে রূপগঞ্জের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ সহজ হবে। কায়েতপাড়া ইউনিয়নবাসী ও ঢাকার নাসিরাবাদের কয়েক গ্রামের লাখো মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়নের চেষ্টা করে যাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ এ সেতু হবেই।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ