বাঁশখালীর জন্য বিপজ্জনক এস. আলম এবং সানলাইন বাস দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ও সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টিতে বাঁশখালীর পরিবহন খাতে অনেকটা শৃঙ্খলা এসেছে। চালু হয়েছে এস আলম বাস সার্ভিসও। যাত্রীরা এখন খুব আরাম করে যাতায়াত করতে পারছেন। কিন্তু এস আলম বাস সার্ভিস চালু হওয়ার পর থেকে বাঁশখালী সড়কে নানা সমস্যা দেখা যাচ্ছে।
বাঁশখালী প্রধান সড়ক নতুন করে সংস্কার হওয়ায় এখন একদম সমান। এই সুবাদে এস আলম, সানলাইন, সুপার সার্ভিস কোন কিছুকে তোয়াক্কা না করে বেপরোয়া গতিতে চলাচল করছে। বিশেষ করে এস আলম সার্ভিস যে গতিতে গাড়ী চালাচ্ছে, রাস্তা ও গাড়ীর সাইজ বিবেচনায় তা বিপজ্জনক। এখনই বিষয়টা নিয়ে না ভাবলে তারা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠবে বলে আমার ধারণা। এভাবে চলতে থাকলে ঘটতে পারে জীবনহানির ঘটনা।
বড় যানবাহনের বেপরোয়া গতি রোধে সড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে গতিরোধক স্থাপন করা যেতে পারে। বিশেষ করে প্রধান সড়কের চৌমুহনী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সংলগ্ন অংশে। এমন অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ও আছে, যার শিক্ষার্থীদের প্রধান সড়ক পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য গাড়ীর বেপরোয়া গতি খুব ঝুঁকিপূর্ণ। কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে গতিরোধক থাকলেও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও চৌমুহনীতে গতিরোধক নেই। যার কারণে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটে।
মাত্রাতিরিক্ত গাড়ীর হর্ন নিষিদ্ধ। এই হর্নকে হাইড্রোলিক হর্ন বলা হয়। এই হর্ন নিষিদ্ধ হলেও বাঁশখালী প্রধান সড়কে এস আলম বাস সার্ভিস, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনে প্রতিনিয়ত বাজছে। এই হর্নের শব্দে মানুষ স্থায়ীভাবে বধির হয়ে যেতে পারে। বাঁশখালীতে এই হর্নের শব্দে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। রাস্তায় বের হলেই যেন বিপত্তি। বিশেষ করে প্রধান সড়ক সংলগ্ন বাড়ির বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা এই হর্নের শব্দে অতিষ্ঠ। জনস্বার্থে এই হর্ন বন্ধে প্রশাসনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
দুটি এস আলম বাস ক্রস করার সময় প্রধান সড়কের দুই পাশে কোন অংশ অবশিষ্ট থাকে না। পুরো সড়কই দখল করে নেয়। এমতাবস্থায় পথচারীদের ফুটপাতে অবস্থান নেয়া ছাড়া গত্যন্তর নেই। কিন্তু অধিকাংশ ফুটপাতই দখলে। কোথাও ব্যবসায়ীদের, কোথাও যানবাহনের। কোন কোন জায়গায় আবার ফুটপাত বিলীন হয়ে গেছে। আবার কোন কোন অংশে বসছে কাঁচাবাজার, ভ্রাম্যমান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এমতাবস্থায় সাধারণ পথচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রধান সড়কে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন। মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে ফুটপাতে বসা এই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করাটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাঁশখালী সড়ক যেহেতু দিন দিন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। পেকুয়া, চকরিয়াসহ বিভিন্ন জায়গার লোকজন এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করছে। যার ফলে আগের তুলনায় এই সড়কে যান চলাচল অনেক বেড়েছে। এস আলমের মতো বড় সাইজের যান চলাচলের জন্য এই মাপের সড়ক যথেষ্ট নয়। কাজেই দ্রুত সময়ে বাঁশখালী প্রধান সড়ক সম্প্রসারণ করাটা সময়ের দাবি। এই সড়ক চারলেন করার একটা প্রক্রিয়া চলছে বলেও শুনেছি। তা যেন দ্রুত সময়ে করা হয়।
সময়ের সাথে সাথে বাঁশখালী সড়কে সিএনজি চলাচল আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এই খাতে কোন নিয়ম, শৃঙ্খলা নেই। যে কেউই গাড়ী নিয়ে নেমে যেতে পারে। লাগে না লাইসেন্স বা ডকুমেন্ট। যার কারণে সিএনজি চালকরা দিন দিন বেপরোয়া ও লাগামহীন হয়ে উঠছে। যেখানে, যেভাবে ইচ্ছা তারা গাড়ী চালাচ্ছেন। যার ফলে যানজটসহ নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এই তিন চাকার সিএনজিকে নিয়ন্ত্রণ করাটা এখন খুব জরুরী।
এস আলম বাস চালু হওয়ার পর থেকে বাঁশখালীর প্রায় প্রতিটি জনগুরুত্বপূর্ণ মোড়ে সৃষ্টি হচ্ছে জ্যাম। এর পেছনের কারণ সড়কে গাড়ী পার্কিং ও গাড়ীর সাইজ। বাঁশখালী উপজেলা সদর থেকে শহরে যেতে লাগে সর্বোচ্চ এক ঘন্টা। কিন্তু জ্যামের কারণে এখন তিন ঘন্টা পর্যন্ত লেগে যাচ্ছে। এতে মানুষের দুই ঘন্টা কর্মসময় নষ্ট হচ্ছে। এই যানজট নিরসনে প্রধান সড়কের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোতে পুলিশ ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে। এতে সমস্যাটির কিছুটা হলেও সমাধান হবে।
E-mil: dailyalokito71sangbad@gmail.com
@বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোক চিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
Copyright © 2024 alokito71sangbad. All rights reserved.