• Uncategorized

    বসবাসের জন্য রাজশাহী, পাখির জন্য ‘বার্ডশাহী’

      প্রতিনিধি ১৯ মার্চ ২০২১ , ৫:৫৫:৪৩ প্রিন্ট সংস্করণ

    বসবাসের জন্য রাজশাহী, পাখির জন্য ‘বার্ডশাহী’

    সৈয়দ মাহামুদ শাওন
    বিশেষ প্রতিনিধি

    ২০ বছর আগেও রাজশাহী ছিল অপরিচ্ছন্ন এক নগর। সড়ক ছিল সরু সরু। সড়কবাতিও পর্যাপ্ত ছিল না।সেই রাজশাহী এখন দেশের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন এবং বসবাসের উপযোগী নগর।পরিকল্পনা আর আন্তরিকতা থাকলে সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে বাংলাদেশেও যে একটি সুন্দর নগর গড়ে তোলা যায়, তার দৃষ্টান্ত রাজশাহী।

    সম্প্রতি রাজশাহীতে গিয়েছিলাম। রাজশাহী নিয়ে যাদের সঙ্গেই কথা হলো, সবাই এ নগর নিয়ে খুব স্বস্তির কথাই শোনালেন। রাজশাহী রেলস্টেশনের কাছে জাতীয় চার নেতার এক নেতা শহীদ কামারুজ্জামানের নামে একটি চত্বর। সেখানে এক বৃদ্ধ ডিম বিক্রি করছিলেন। আশপাশে কোনো ময়লা নেই। তিনি বললেন, ‘এখন আর রাস্তায় ময়লা ফেলা যায় না। সিটি করপোরেশনের লোকজন ব্যবসা করতে দেবে না।’ পাশেই এক ডিম ক্রেতা বললেন, ‘দিনে-রাতে কয়েকবার ঝাড় হয় সড়ক। কোথাও ময়লা জমে থাকলে সিটি করপোরেশনে খবর দিলেই এসে পরিষ্কার করে দিয়ে যায়।’ সিটি করপোরেশনের মেয়র, স্থানীয় সাংসদ, বিভাগীয় প্রশাসন এবং জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে রাজশাহী একটি আদর্শ শহর হয়ে উঠছে। রাজশাহী এখন অনুকরণীয় নগর। রাজশাহীর সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগও খুব ভালো। পরিচ্ছন্নতা, নান্দনিকতা এবং অবাধ নাগরিক সুবিধাই এ শহরের প্রাণ। পরিকল্পিতভাবেই বিকশিত হচ্ছে এ নগর।

    দুদিন গিয়েছিলাম পদ্মা নদী আর পাখি দেখতে। প্রথম দিন নৌকার মাঝি ছিল অনীক। হাতে তার দুরবিন। নিজেও সে পাখির ছবি তোলে। অনীকের বাবা, ছোট ভাই সবাই মাঝি। অনেক দিন পর পদ্মায় গিয়ে মন খারাপ হয়ে গেল। গত কয়েক বছরে নদীর অবস্থা আরও করুণ হয়েছে। নদীর তলদেশ থেকে চর কোথাও কোথাও ২৫-৩০ ফুট উঁচু। নদী থেকে মনে হয় বালুর পাহাড়। ফাল্গুন মাসেই পানি অনেক কমে গেছে। বৈশাখ নাগাদ আরও কমে যাবে। নদী থেকে বালু উত্তোলন চলছে।
    পদ্মায় পাখিদের মধ্যে প্রথমেই চোখে পড়ল চখাচখি। কোথাও জোড়ায় জোড়ায় কোথাও ঝাঁকে ঝাঁকে। আরও খানিকটা সামনে যেতেই বড় খোঁপা ডুবুরির দেখা মিলল। তারপর পেলাম গাঙচিল। ক্ষিপ্র শিকারি পাখি শাহিন দেখলাম পদ্মার চরে।
    দীর্ঘদিন ধরে পাখির ছবি তোলেন হাসনাত রনি। তিনি ফেসবুকে রাজশাহীর পাখির ছবি পোস্ট করলে ঠিকানা হিসেবে লেখেন ‘বার্ডশাহী’। রাজশাহীতে বিভিন্ন প্রজাতির পাখির বসবাস। যাঁরা সারা দেশে পাখির ছবি তোলেন তাঁরা বছরে অন্তত একবার হলেও রাজশাহী যান পাখির ছবি তোলার জন্য। সারা দেশে মোট কয়েকটি এলাকায় অনেক পাখির সন্ধান পাওয়া যায়। তার মধ্যে রাজশাহী অন্যতম। সেই বিবেচনায় হাসনাত রনির সঙ্গে একমত প্রকাশ করে রাজশাহী সম্পর্কে বলাই যায় পাখির জন্য ‘বার্ডশাহী’। সারা দেশে এখন পর্যন্ত রেকর্ড হয়েছে ৭১৪টি পাখি। হাসনাত রনি জানান, ‘রাজশাহীতে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩০০ প্রজাতির পাখি দেখা গেছে।’ রাজশাহী জেলাতেই যদি দেশের মোট প্রজাতির অর্ধেক প্রজাতির পাখি থাকে, তাহলে সেই জেলাকে ‘বার্ডশাহী’ বললে অত্যুক্তি হয় না।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ