• Uncategorized

    বর্তমান সরকারের আরেকটি সাফল্য,নান্দনিক নকশায় নির্মানের শেষপর্যায় লেবুখালী সেতু!

      প্রতিনিধি ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ , ৯:২৬:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ

    ২০২১ সালের নতুন বছরে বর্তমান সরকারের আরেকটি সাফল্য হাতছানি দিচ্ছে,অপরুপ নান্দনিক নকশায় নির্মানের শেষ পর্যায় পটুয়াখালীর পায়রা নদীর উপর নির্মানাধীন লেবুখালী সেতু। স্বপ্নপূরন হতে যাচ্ছে দক্ষিণ অঞ্চলে বাসীর আসছে জুনের শেষভাগে যান বাহন চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়া হবে ঢাকা-বরিশাল পটুয়াখালী -কুয়াকাটা-চট্রগ্রাম-যশোর মহাসড়কের পায়রা নদীর উপর নির্মানাধীন আকর্ষনীয় লেবুখালী সেতু। ঢাকা থেকে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর পর্যন্ত চালু হবে ফেরী বিহীন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। এছাড়াও পর্যটকদের কাছে আকর্ষনীয় করতে নান্দনিক নকশায় এক্সট্রা ভোজ ক্যাবল স্টেট পদ্ধতিতে আগামী জুনের শেষের দিকে বহুল প্রত্যাশিত সেতুটি উম্মুক্ত করে দেয়া হবে। এতে দেশের সড়ক যোগাযোগ নতুন মাইল ফলক স্থাপন করতে যাচ্ছে দেশ রত্ন শেখ হাসিনার সরকার। বিগত দশকেও ঢাকা থেকে সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা যেতে সাতটি ফেরী পাড় হতে হতো,কমতি ছিলনা ভোগান্তির, সময়ের অপচয়। দোয়ারিকা শিকারপুর বরিশাল পটুয়াখালী কলাপাড়া মহিপুর এবং আলীপুরে সেতু নির্মাণ হলেও লেবুখালী ফেরীঘাটে বিড়ম্বনা সইতে হচ্ছে। কুয়াকাটা আসা পর্যটক সহ দক্ষিণের মানুষের। যানবাহনের চাপে দিনের একটা সময় কেটে যায় লেবুখালী ফেরীঘাটে। তবে সেই কষ্টের চিএ আর থাকছেনা। নতুন বছরেই ফেরীবিহীন সড়ক যোগাযোগের নতুন এক দিগন্ত উন্মোচিত হতে যাচ্ছে এমনি এক স্বপ্ন পূরন হতে যাচ্ছে দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের। পায়রা নদীর উপর সেতু নির্মাণের জন্য ২০১২ সালে একটি প্রকল্প প্রণয়ন করে সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়। ওই বছরের ৮ই মে পায়রা সেতু নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন  হয়। ২০১৩ সালের ১৯ শে মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা সেতুর ভিত্তি প্রস্তুর স্থাপন করেন।২০১৬ সালের ২৪শে জুলাই ঠীকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনের লং জিয়ান রোড ব্যান্ড ব্রীজ কোম্পানি লিমিটেডকে সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেয় সড়ক ও জনপথ মন্ত্রাণালয় প্রকল্পে যৌথভাবে অর্থায়ণ করে কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (কে,এফ,এইডি) এবং ওপেকফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ও এফবআই ডি) স্বপ্ন জোড়া লাগার শেষ মুহুর্তে পটুয়াখালীর লেবুখালী সেতু।

    উক্ত কার্যাদেশ প্রদানের সময় সেতুর প্রাক্কলন ছিলো ১ হাজার দু’শত ৭৮ কোটি টাকা। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেতু নির্মাণের ব্যয় বেড়ে দাড়ায় ১ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা। প্রথম কার্যাদেশের মেয়াদ ছিলো ৩৩ মাস। এর পর দুই দফায় সময় বৃদ্ধি করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ২০২১ সালের ৩০শে জুন পর্যন্ত। লেবুখালী সেতুর প্রকল্পের উপ-ব্যবস্থাপক কামরুল আহসান জানান,আটশত চল্লিশ মিটার ভায়াডাক্ট এবং ৬ শত ৩০ মিটার মূল সেতুসহ লেবুখালী সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ১ হাজার চারশত ৭০ মিটার এবং প্রস্থ্য ১৯.৭৬ মিটার। নদীর উপর প্রান্তে ৬১০ মিটার এবং দক্ষিণে ৬৫৮ মিটারসহ দুইপার্শে মোট এ্যার্পোচ সড়ক ১ হাজার ২৬৮ মিটার। বিদায়ী বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সেতু প্রকল্পের মোট ৬৬ ভাগ কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। এর মধ্যে বক্স গার্ডার পদ্ধতিতে মূল সেতুর ৬৩০ মিটারের মধ্যে সম্পূর্ণ হয়েছে  ৮০ ভাগ। ভায়াডাক্ট ৮৪০ মিটারের মধ্যে সবটুকুই সম্পূর্ণ হয়েছে। দুই পাশের এ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ সম্পন্ন হয়েছে প্রায় ৬০ ভাগ।বর্তমানে দিনরাত কাজ চলছে ১৮,১৯ ও ২০ নম্বর পিলারের বক্স গার্ডার নির্মানে,এই তিনটি পিলারের পাইলন টাওয়ার থেকে  ৬ টি করে ক্যাবলে ঝুলে থাকবে মুল বক্স গার্ডার সেতু। মোট ৩১টি পিলারের উপর ৩২টি স্প্যানের উপর দাড়িয়ে থাকবে সেতুটি। ভায়াডাক্টে আই গার্ডারের উপর ২৮টি স্প্যান মুল এবং মুল সেতুর ৪টি স্প্যান হচ্ছে বক্স গার্ডার পাইপের মুল সেতির প্রথম স্প্যান ১১৫ মিটার দ্বিতীয় স্প্যান ২০০ মিটার তৃতীয়  স্প্যান ২০০ মিটার এবং চতুর্থ  স্প্যান ১১৫ মিটার দীর্ঘ।  এই সেতুতে স্থাপন করা ২০০ মিটার স্প্যান বাংলাদেশের আর কোন সেতুতে নেই। (পদ্মা সেতুতে সর্বোচ্চ ১৫০ মিটার দীর্ঘ স্প্যান বসানো হয়েছে) মুল ৩টি (১৮,১৯, ও ২০)  নম্বর পিলারটি স্থাপন করা হয়েছে ভাটির সময় পানির স্তর থেকে ১৩০ মিটার দৈর্ঘ্য যার উচ্চতা প্রায়(৪২ তলা ভবনের সমান)নদীর তলদেশে পদ্মা সেতুতে বসানো হয়েছে ১২০ মিটার পাইল।

    সেতু প্রকল্পের ব্যবস্থাপক আহম্মেদ শরীফ সজীব বলেন,পর্যটনের কথা বিবেচনায় রেখে সেতুটি নির্মীত হচ্ছে চট্রোগ্রামের শাহ-আমানত সেতুর আদলে এক্সর্টাভোজ ক্যাবল স্টেট পদ্ধতিতে নান্দনিক নকশায় সৌরবিদ্যুৎ এর আলোয় রাত্রে নৈসর্গিক দৃশ্যের অবতারণা হবে সেতুটিতে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বরিশাল জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু হেনা মো,তাহের ইকবাল জানান,আগামূ জুনের শেষভাগে যানবাহন চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়া হবে সেতুটি। এই সেতু উদ্ভধন হলে ঢাকা থেকে পায়রা সমুদ্র বন্দর এবং পর্যটন কেন্দ্র  কুয়াকাটা পর্যন্ত ফেরীবিহীন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হবে। এবং যা হবে বর্তমান সরকারের গৌরবের এক মাইল ফলক হিসেবে ইতিহাস হয়ে থাকবে বাংলাদেশে আজীবন।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ