• Uncategorized

    বন্যায় মানিকগঞ্জে ২০ কোটি টাকার সবজির ক্ষতি

      প্রতিনিধি ১ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ৯:৪৩:২৬ প্রিন্ট সংস্করণ

     

    মো আরিফুর রহমান অরি-মানিকগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

    মানিকগঞ্জের সবজির আবাদের সুনাম দেশজুড়ে।  স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে এ জেলার সবজি ঢাকাসহ আশেপাশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে।

    বন্যার পানি দেড়মাস স্থায়ী হওয়ার ফলে কৃষকের সবজি ক্ষেত, আউশ ধান, পাট, ভুট্টা, কাউন, চিনা, তিল ও মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এ বন্যার পানিতেই বিনষ্ট হয়েছে কৃষকের ছোট ছোট স্বপ্নগুলোও।

    স্বপ্নের ক্ষেতের ফসল নষ্ট হযয়ায় দিশাহারা কৃষকদের লোকসান গুণতে হচ্ছে এখন। ফসল ঘরে তুলতে না পেরে চোখে মুখে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা। এদিকে সরকারিভাবে কৃষকদের পুনর্বাসন ও ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার দাবী থাকলেও সবার কাছে পৌঁছবে না প্রণোদনা।

    এদিকে ঋণ নিয়ে সবজী চাষ করেছিলো অনেক কৃষক। সবজি বিক্রি করে মাসে মাসে কিস্তি পরিশোধ করতে চেয়েছিল তারা। কিন্তু বন্যা এসে নষ্ট হয়ে গেছে সমস্ত ফসল। এখন সংসার চালানো, ব্যয় নির্বাহ করা বা কিস্তির টাকা শোধ করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

    দু-দফা বন্যার কারণে বাম্পার ফলন ও ভাল বাজারদর থাকার পরও মানিকগঞ্জের সবজির চাষিরা কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বন্যার পানিতে তলিয়ে শত শত হেক্টর জমির  সবজি  মরে গিয়েছে ।

    মানিকগঞ্জে ১ হাজার ৩শ ৩৫ হেক্টর জমির ২০ কোটি ৭০ লাখ টাকার সবজির ক্ষতি হয়েছে।  এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৫শ ৮৫ জন চাষি।

     

    জেলা কৃষি সম্প্রসারণ (খামারবাড়ি) অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় ১ হাজার ২শ ৫০ হেক্টর, সিংগাইর উপজেলায় ১ হাজার ৮শ ২৮ হেক্টর, সাটুরিয়া উপজেলায় ৪শ ৪০ হেক্টর, ঘিওর উপজেলায় ২শ ৪৫ হেক্টর, দৌলতপুর উপজেলায় ২শ ৫০ হেক্টর, শিবালয় উপজেলায় ১শ ৭৯ হেক্টর, হরিরামপুর উপজেলায় ২শ ৫১ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করা হয়।

     

    চলতি বন্যায় মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় ২১ হেক্টর জমির ২শ ১০ মেট্রিক টন, সিংগাইর উপজেলায় ১ হাজার হেক্টর জমির ১ লাখ মেট্রিক টন, সাটুরিয়া উপজেলায় ৩শ হেক্টর জমির ৩ হাজার মেট্রিক টন, ঘিওর উপজেলায় ২ হেক্টর জমির ২০ মেট্রিক টন, শিবালয় উপজেলায় ১০ হেক্টর জমির ১শ মেট্রিক টন এবং হরিরামপুর উপজেলায় ২ হেক্টর জমির ২০ মেট্রিক টন সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

     

    মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় ৪শ ২০ জন চাষির ৪২ লাখ টাকা, সিংগাইর উপজেলায় ৮ হাজার চাষির ২০ কোটি টাকা, সাটুরিয়া উপজেলায় ৫ হাজার চাষির ৬ কোটি টাকা, ঘিওর উপজেলায় ৩৫ জন চাষির ৪ লাখ টাকা, শিবালয় উপজেলায় ১১০ জন চাষির ২০ লাখ এবং হরিরামপুর উপজেলায় ২০ জন চাষির ৪ লাখ টাকার সবজির আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে জানায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

     

    সিংগাইর উপজেলার চারিগ্রাম এলাকার মাইনুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর ৬ থেকে ৭ বিঘা জমিতে সবজির আবাদ করে থাকি।  এবারো সাড়ে ৬ বিঘা জমিতে চালকুমড়া, ধুন্দুল, ঢেড়শ, বেগুন ও করলার আবাদ করেছিলাম।  তবে বন্যার পানিতে সব তলিয়ে যাওয়ায় লোকসানে পড়ে গেছি।

     

    সাটুরিয়া উপজেলার গোলড়া এলাকার সৈয়দ সোলায়মান বলেন, চলতি বন্যায় পুইশাক পটল চিচিংগা ঝিংগা ও মিষ্টি কুমড়ার সবজির আবাদ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।  এতে করে তার প্রায় ৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান তিনি।

     

    জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহ্জাহান আলী বিশ্বাস জানান, জেলার ৬টি উপজেলার লক্ষ্যমাত্রার ৩০ ভাগ সবজি বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

    চলতি বন্যায় যে সকল সবজি চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের প্রণোদনা দেওয়াসহ নতুনভাবে সবজি উৎপাদনের বিষয়ে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান তিনি।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ