• রাজশাহী বিভাগ

    বদলগাছী উপজেলা ইউএনও’এর অশালীন আচরণে অতিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধারা

      প্রতিনিধি ৪ জানুয়ারি ২০২২ , ৩:২১:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ

    এনামুল কবীর এনাম জেলা প্রতিনিধি নওগাঁ:

    নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলপনা ইয়াসমিন এর অশালীন আচরণে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে জাতির সর্ব কালের সর্ব শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কটুক্তি করারও
    অভিযোগ উঠেছে। তার অপসারণের দাবীতে গত ৩০ ডিসেম্বর ৩০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বাক্ষরিত একটা অভিযোগপত্র জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় বরাবর পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ, মাননীয় সংসদ সদস্য-৪৮,নওগাঁ-৩, সহ
    বিভাগীয় কমিশনার রাজশাহী ও জেলা প্রশাসনকে অনুলিপি পাঠিয়েছে।উক্ত ইউএনও’র দ্রুত বদলির
    দাবী জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধাসহ এলাকার সচেতন মহল ও সুধিজনরা।
    অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হিসেবে আলপনা ইয়াসমিন গত বছরের ৪ জানুয়ারীতে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই ভাব গাম্ভীর্য
    কথাবার্তা, সহ তার খারাপ আচরণ দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। তার আচরণে উপজেলার
    বীর মুক্তিযোদ্ধারা, সন্মানীত শিক্ষকবৃন্দ, এবং এলাকার আগত জনসাধারনগন সেবা নিতে এসে অতিষ্ট হযে পড়েছেন।
    অভিযোগে উল্লেখ্য করা হয়েছে, ১. বীর মুক্তিযোদ্ধা এলাকার সন্মানীত ব্যক্তিবর্গ ও সাধারন
    জনগণের সংগে অসদাচারণ ২. বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মানজনক ভাবে নাম ধরে ডাকা ।
    ৩.সরকারি ত্রাণের কম্বল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দেওয়ার ব্যাপারে অনিচ্ছা প্রকাশ, ৪.ইউএনও বীর
    মুক্তিযোদ্ধাদের কোন কাজ করবেন না বলে অঙ্গীকার করা ,৫ তার অফিস কক্ষে কোন বীর মুক্তিযোদ্ধারা গেলে তার চেয়ারের ক্ষমতা বলে তিরস্কার মূলক কথা বলে। ৬. মুক্তিযোদ্ধা বিরোধী
    হাসানুজ্জামানের সংগে সখ্যতা ৭. সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর অবর্তমানে উনি কোন দায়িত্ব পালন না করায় অত্র উপজেলার জমি বিক্রেতা ও ক্রেতারা চরম দূর্ভোগে পড়েছেন। ৮.
    শিক্ষার কারিগর শিক্ষকদের হেয় প্রতিপন্ন ও কটুক্তি করে তার অফিস কক্ষ থেকে বের করে দেন ।তার এমন অশালীন আচরণে অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এছাড়া শিক্ষকসহ গণ্যমান্য ও
    সেবা গ্রহিতাদের হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে বলেও জানা যায়।
    বদলগাছী সদর ইউনিয়নের সাবেক কমান্ডার ও গাবনা গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা
    জসমত আলী বলেন, আলপনা ইয়াসমিন উপজেলায় ইউএনও হিসেবে যোগদানের কিছুদিন পর থেকে
    মুক্তিযোদ্ধাসহ সকল সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে একটা বিরূপ আচরণ করেন। তার কাছে আমরা কোনও কাজে গেলে গুরুত্ব দেননা। এমনকি বসার জন্য কোন স্থানও দেন না। সরকার কর্তৃক আমাদের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। এবং সম্মান দিতে ও বলা হয়েছে। তিনি আমাদের সন্তানের বয়সি।
    আমাদের সঙ্গে তার এমনটা আচরণ করা মোটেও ঠিক হয়নি।
    তিনি আরও বলেন। ইতিপূর্বে যেসব ইউএনও এই উপজেলা থেকে বিদায় হয়েছেন তারা আমাদেরকে ভাল পরামর্শ
    ও সম্মান করেছেন। তিনি একমাত্র ইউএনও আমাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করছেন যাহা অত‍্যান্ত দুঃখ জনক।
    বদলগাছী উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ও যুদ্ধকালীন কমান্ডার ডিএম এনামুল
    হক বলেন, ইউএনও আলপনা ইয়াসমিন মুক্তিযোদ্ধাদের মূল্যায়ন করেন না। আমাদের সম্মানের
    সহিত না ডেকে নাম ধরে ডাকেন। যাহা জাতির কাছে অসম্মানজনক বলে প্রতীয়মান হয়। এমনকি কোনও পরামর্শের জন্য গেলে সহযোগীতা না করে অসম্মানজনক কথা বলে ঘর থেকে বের করে দেন।
    এলাকার শিক্ষক ও সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ, জনসাধারণ এমন কি সেবা নিতে আসা গ্রহিতাদের সম্মান ও করেন না।
    ইতি পূর্বে উক্ত বিষয়ে ইউএনও’র সঙ্গে আমরা একাধীকবার কথা বলেছি। কিন্তু তিনি সংশোধন হননি। তার বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে ডাক যোগে আমরা অভিযোগ পাঠিয়েছি। আমরা তাঁর দ্রুত বদলির দাবী করছি।
    তিনি আরো বলেন,উক্ত ইউএনও এই উপজেলার অনেক দাপ্তরিক কর্মকর্তার সাথেও দুর্ব্যবহার
    করেছে। এই ইউএনওর সম্পর্ক মুক্তিযোদ্ধা বিরোধী ব্যক্তিদের সাথে। তিনি এখানে যোগদানের
    পর থেকেই বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি করেই চলেছে বলে জানান।
    উপজেলার আরেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুর রহিম দেওয়ান বলেন, উপজেলায় ভাতাভোগী
    প্রায় ৪৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা আছে। অনেক অসহায় ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাও আছে। আমরা
    কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা সরকারি ত্রানের কম্বলের জন্য ইউএনও’র কাছে গিয়ে আবদার করেছিলাম
    এবং যেদিন কম্বল বিতরণ করা হবে সেদিন তিনি উপস্থিত থেকে বিতরণ করার কথা বলেছিলাম।
    এসময় তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে তদন্ত করে কম্বল দিবেন বলে আমাদেরকে জানিয়ে
    বেড়িয়ে যেতে বলেন। আমরা অনেক অনেক বেদনা নিয়ে কষ্টে তাঁর রুম থেকে ফিরে আসি।
    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রধান শিকক্ষ সহ বেশ কিছু শিক্ষক বলেন,
    তিনিও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী আমরাও কর্মচারী। তিনি বড় পদে চাকরি করেন আর আমরা
    ছোট পদে। আমরা বিভিন্ন সময় তার সাথে কথা বলতে গেলে আমাদের সাথে অশালীন আচরণ
    করেন। আরেক শিক্ষক বলেন, গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর ইউএনও স্যার এর অফিসে দেখা করতে গেলে
    সে সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। জেলা শহরে একটি গানের অনুষ্ঠানে
    উপস্থিত না হওয়ায় আমাকে ধমক দিয়ে তার অফিস থেকে বের করে দিয়েছেন। আমি যে গানের
    অনুষ্ঠানে যাবো সেখানে যাওয়ার জন্য তো আমাকে বলা হয়নি বা দাওয়াত করা হয়নি। আমি
    একজন শিক্ষক মানুষ। এ ভাবে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সামনে অপমান করা আসলে কতটা যৌক্তিক।
    এ ব্যাপারে বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আলপনা ইয়াসমিন বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করেছে কিনা আমি জানিনা। তবে তাদের সঙ্গে
    কোন ধরণের সমস্যা হয়নি বলে দাবী করেন ইউএনও। এছাড়া বিষয়টি যাচাই করে দেখতে বলেন তিনি।
    এলাকার সচেতন মহল বলছেন, এই ইউএনও এখানে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন অনিয়ম
    দুর্নীতি করেই চলেছে। তিনি সেবা গ্রহিতাদের সাথে খারাপ আচরণ করে থাকেন। এলাকার জনসাধারন কোন অভিযোগ দিলে তিনি দেখেন না। উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা গন সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং উপজেলা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, জাতীয় পার্টির নেতারা দ্রুত উক্ত উপজেলা ইউএনও কে অন‍্যএে বদলী করে উপজেলার মানুষের হ্নদয়ের শান্তি

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ