স্টাফ রিপোর্টারঃ
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় সৌদি প্রবাসী জামাল হোসেনকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে তার স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ে। পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবতাবুজ্জান ও কাউছার আলমের পৃথক দুটি আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে নিহত প্রবাসী জামাল হোসেনের স্ত্রী শারমিন আক্তার ডলি, ছেলে তানভীর হাছান ডালিম ও মেয়ে সামিয়া বেগম এমন জবানবন্দি দিয়েছেন।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই সৌদি প্রবাসী জামাল হোসেনকে পরকীয়ার সন্দেহ করে আসছিলো তার স্ত্রী।
বিষয়টি নিয়ে তিনি ছেলেমেয়ের সঙ্গে পরামর্শও করতেন। গত বুধবার হত্যাকাণ্ডের রাতে জামাল হোসেন বাইরে থেকে ফিরে গোসল করেন। এতে স্ত্রী ও সন্তানদের মনে সন্দেহ দেখা দেয়।
তিনি বলেন, জামাল হোসেন যখন ঘুমিয়ে পড়েন তখন তার আসবাবপত্র তল্লাশি করে কিছু কনডম ও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট খুঁজে পায় তারা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে সন্দেহ আরো বেড়ে যায়। এরপর স্ত্রী শারমিন আক্তার ডলি ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে পরামর্শ করেন সৌদি আরবের আইনে পরকীয়ার অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। তাই সৌদির আইন কার্যকর করতে জামাল হোসেনকেও মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বিষয়টি নিয়ে তাদের মা-মেয়ে ও ছেলের মধ্যে পর্যায়ক্রমে কথাবার্তার এক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয় জামাল হোসেনকে তাদের পারিবারিক আদালতে সৌদির আইনে মৃত্যুদণ্ড দেবেন। সিদ্ধান্ত মতে গভীর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় জামাল হোসেনের মাথায় প্রথমে স্ত্রী শারমিন আক্তার ডলি হাতুড়ি দিয়ে কয়েকটি আঘাত করেন। এরপর একই স্থানে ছেলে তানভীর হাছান ডালিম ও মেয়ে সামিয়া বেগমও একাধিকবার হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেন।
ওসি বলেন, জামাল হোসেন নিথর হয়ে পড়লে স্ত্রী ডলি দুই পায়ে ধরেন ও ছেলেমেয়ে দুই হাতে ধরে টয়লেটে নিয়ে যায়। সেখানে ডলির নির্দেশে তার ছেলে ডালিম টয়লেটের কমোড ভেঙে ফেলেন। পরে আশপাশের লোকজনদের ডেকে এনে বলেন জামাল হোসেন স্ট্রোক করে মারা গেছেন।
তিনি বলেন, হত্যার পর রক্তাক্ত অবস্থায় জামাল হোসেনের মরদেহ দাফনের চেষ্টার সময় অভিযান চালিয়ে ফতুল্লার দাপা ইদ্রাকপুর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে নিহতের স্ত্রী ও ছেলেমেয়েকে আটক করি। আর মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছি। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জামাল হোসেনকে হত্যার দায় স্বীকার করে তিনজনই। এরপর আদালতে তারা দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।
এদিকে এলাকাবাসী জানান, দেড় বছর আগে জামাল হোসেন সৌদিআরব থেকে দেশে আসেন। এরপর আর বিদেশে যাননি। বুধবার রক্তাক্ত অবস্থায় জামাল হোসেনকে দ্রুত দাফনের চেষ্টা করে তার স্ত্রী শারমীন আক্তার ও ছেলে-মেয়ে। বিষয়টি সন্দেহ হলে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে থানায় খবর দেয়া হয়। এরপর পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
E-mil: dailyalokito71sangbad@gmail.com
@বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোক চিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
Copyright © 2024 alokito71sangbad. All rights reserved.