• আইন ও আদালত

    টাকা আদায়ের জন্য প্রতারক শাকিলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করায় পাওনাদারের বিরুদ্ধে পাল্টা চুরির মামলা

      প্রতিনিধি ১৭ মার্চ ২০২২ , ২:৩১:৪৯ প্রিন্ট সংস্করণ

    নিজস্ব সংবাদদাতা:

    প্রতারক শাকিলের প্রতারনার শিকার হয়ে সর্বশান্ত হতে চলেছেন সাংবাদিক মোবারক বিশ্বাস। প্রতারক শাকিলের কাছে পাওনা টাকা না পেয়ে আদালতের স্বরনাপর্ন হলে বাদী মোবারক বিশ্বাসের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা দায়ের করেছে প্রতারক শাকিল। শুধু মামলা দিয়ে ক্ষান্ত হননি মাদক ব্যবসায়ী ও প্রতারক শাকিল। সাংবাদিক মোবারক বিশ্বাসকে সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের দিয়ে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদান করছে বলে সাংবাদিক মোবারক বিশ্বাস জানিয়েছেন। এ ঘটনায় সাংবাদিক মোবারক বিশ্বাস ভয় ও আতংকে দিন যাপন করছেন।

    শুধু তাই নয় মোবারক বিশ্বাসের দায়ের করা মামলায় ৩নং স্বাক্ষী ও বাড়ির মালিক ৬৫ বছরের বৃদ্ধ আলমকেও মামলায় আসামী করা হয়েছে। আনসারুল হাসান শাকিল রাধানগর ডিগ্রি বটতলা মোঃ খবির উদ্দিনের ছেলে। সে ঢাকায় গামেন্টস মালামাল ব্যবসার আড়ালে মাদক ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে। পাবনায় রয়েছে, তার ক্যাডার ও সন্ত্রাসী বাহীনি। মুলত তাদের দিয়ে শাকিল মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে থাকেন। শুধু তাই নয়, পাবনা থেকে ভাড়া করা সন্ত্রাসী দিয়ে ঢাকায় বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে থাকেন এই শাকিল।

    আদালতে মোবারক বিশ্বাসের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, প্রতারক শাকিল সাংবাদিক মোবারক বিশ্বাসের স্কুল জীবনের বন্ধু ছিল। সেই সুত্রে বিগত ২০১৭সালের ২০ মার্চ প্রতারক শাকিল পাবনা একে খন্দকার টাওয়ারের ফ্লাট ক্রয়ের জন্য মোবারক বিশ্বাসের কাছ থেকে ১০লাখ টাকা হাওলাত গ্রহন করে। এরপর দীর্ঘদিনেও প্রতারক শাকিল টাকা প্রদান করেনি মোবারক বিশ্বাসকে। এরই এক পর্যায়ে ২০১৯ সালে জুলাই মাসে প্রতারক শাকিল টাকা দিতে না পারায় তারই নামে প্রতিষ্ঠিত ইকো ডিজিটাল সাইন নামের একটি প্যানা-পিভিসির মেশিন মোবারক বিশ্বাসকে দিয়ে বলে এই প্রতিষ্ঠানে কিছু দেনা আছে সেগুলো পরিশোধ করে।

    ও মেশিনটি মেরামত করে তুই তোর মত ব্যবসা পরিচালনা কর। প্রতারক শাকিলের কথামত মানুষের পাওনা ১ লাখ তিরিশ হাজার টাকা, বিদ্যুত বিল ও ঘরভাড়া বকেয়া বাবদ প্রায় আরো ১লাখ টাকা এবং মেশিন মেরামত ও অন্যান্য দেনা বাবদ বিভিন্ন সময় প্রায় প্রায় ৫ লাখ টাকা খরচ করে নিজ নামীয় প্রতিষ্ঠান আট কালচার অ্যাড এন্ড মিডিয়া নামে পরিচালনা করতে থাকে। এরই মধ্যে ২০২০ সালে মহামারী করোনার প্রভাবে মোবারক বিশ্বাসের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ ২ বছর মহামারি করোনার প্রভাব চলতে থাকায় গত বছরের শেষে দিকে তা কমতে থাকে।

    গত ২০২১সালের আগষ্ট মাস থেকে পুনরায় ব্যবসা শুরু করে মোবারক বিশ্বাস। এরই মধ্যে প্রতারক শাকিল ব্যবসার প্রসার দেখে ঈর্শ্বানিত হয়ে মোবারক বিশ্বাসের কাছে থাকা তার মেশিনটি ফেরত নেওয়ার প্রস্তাব দেই। এ সময় মোবারক বিশ্বাস হাওলাতকৃত ১০ লাখ ও দেনা ও বকেয়া পরিশোধের টাকাসহ মেশিন মেরামতের ৫লাখ ৫৯ হাজার ৬শ টাকা ফেরত দিয়ে মেশিন গ্রহনের প্রস্তাব দেয়। মোবারক বিশ্বাসের প্রস্তাবে রাজি না হয়ে প্রতারক শাকিল ঢাকায় চলে যায়। এরই মাঝে চলতি বছরের গত ১৭ জানুয়ারী প্রতারক ও মাদক ব্যবসায়ী শাকিল মেশিন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হাসান ট্রেডের মাধ্যমে মেশিনটির পার্সওয়াড লক করে দেয়।

    ফলে ব্যবসা আবারও একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। এক পর্যায়ে অসহায় মোবারক বিশ্বাস টাকা উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন যায়গায় আলোচনায় ব্যার্থ হয়ে আদালতের স্বরনাপন্ন হন। গত ২৪ ফেব্রæয়ারী জেলা পাবনার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত ১ পাবনায় একটি পিটিশন দায়ের করে। যার নং-৬২/২২ পাবনা। তাং-২৪-০২-২০২২ইং। আদালত পিটিশনটি গ্রহন করে পাবনা সদর থানার ইনচার্যকে তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদানের আদেশ দেন। এর আগে ও পরে পাবনা বারের আইনজীবিদের সমন্বয়ে কয়েকবার বৈঠক নির্ধারন হলেও উপস্থিত হয়নি প্রতারক শাকিল।

    গত ২৬ ফেব্রæয়ারী পাবনা জেলা বারের সাবেক সভাপতি সিনিয়র আাইনজীবি এ্যাডভোকেট শাহ আলমের চেম্বারে এক সালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে শহরের বিভিন্ন চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীদের নিয়ে শালিসে উপস্থিত হয় প্রতারক শাকিল। শালিসে উপস্থিত সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি দেখে শালিসের প্রধান আইনজীবি শালিসের কোন মন্তব্য না দিয়ে বাদী ও বিবাদীর একটি সাদা প্যাডে স্বাক্ষর নিয়ে রায় পরে প্রদান করা হবে শালিস-বৈঠক সমাপ্ত করেন। এরপর প্রতারক শাকিলের চাপের মুখে এ্যাডভোকেট শাহ আলমসহ উপস্থিত আইনজীবিগণ রায় দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে।

    এরপর গত ৯ মার্চ প্রতারক ও মাদক ব্যবসায়ী আনসারুল হাসান শাকিল পাবনার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত ১ পাবনায় একটি পিটিশন দায়ের করে। যার নং-৭৬/২০২২ পাবনা, তাং ০৯-০৩-২০২২ইং। আদালত পিটিশনটি গ্রহন করে পাবনা থানার অফিসার ইনচার্যকে ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ প্রদান করেন। এ ঘটনায় মোবারক বিশ্বাস ন্যায় বিচার পেতে আদালত, পাবনার সচেতন মহলসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর কাছে অনুরোধ জানান। বিভিন্ন সুত্র মতে মাদক ব্যবসায়ী ও প্রতারক শাকিলের উশৃংখল জীবন-যাপন ও অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে জড়িত থাকায় তারা মা-বাবা, ভাই বোনসহ নিকট আত্মিয়রা অতিষ্ট হয়ে তার সাথে সর্ম্পক্য ছেদ করেছেন।

    এমনকি তার বাবা-মা’র ভিটা রাধানগর এডওয়ার্ড কলেজ বটতলা মোড়ের বাড়ি থেকে তাকে বের করে দিয়ে ত্যাজ্যপুত্র করেছে। পরে মাদক ব্যবসায়ী ও প্রতারক শাকিল তার ফ্লাটে বসে পাবনার সকল অবৈধ কর্মকান্ড পরিচালনা করে থাকেন। মোবারক বিশ্বাস সাংবাদিকতা করে এত টাকা কোথায় পেলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যবসা করার জন্য ২০১৬সালে অগ্রনী ব্যাংক থেকে ২০ লাখ টাকা ঋন নিয়েছিলাম। কিছু টাকা ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করি, কিছু টাকা নতুন ব্যবসায়ে ইনভেষ্ট করতে টাকা রেখে দিয়েছিলাম। এরই এক পর্যায়ে বাল্য বন্ধু শাকিল ফ্লাট ক্রয়ের জন্য টাকা হাওলাত চাইলে তাকে অন্ধ বিশ্বাসে ১০লাখ টাকা হাওলাত প্রদান করি।

    এছাড়া ২০১৯ সালে শাকিলের মেশিনপত্র বুঝে নেওয়ার পর শশুরবাড়ি ও কয়েকজন বন্ধুর কাছে থেকে টাকা হাওলাত গ্রহন করি। মহামারি করোনা ও শাকিলের প্রতারনার কারনে এখনও ব্যাংক ও বিভিন্ন জনের টাকা পরিশোধ করতে পারিনি। শাকিল যদি আমাকে টাকা না দেয়, তাহলে আমি দেওলিয়া হয়ে যাবো বলে জানান, সাংবাদিক মোবারক বিশ্বাস। টাকা উদ্ধারে তিনি আবারও পাবনার সচেতন মহলসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেন। সেই সাথে শাকিলে অবৈধ কোটি কোটি টাকা আয়ের উৎস খুজতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

    শুধু মাদক ব্যবসা ও প্রতারনা করে গত কয়েক বছরে প্রতারক শাকিল কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন বলে বিভিন্ন সুত্র থেকে জানা গেছে। ডপাবনা-ঢাকাসহ একাধিক ফ্লাট, প্লট ও জমি রয়েছে। উল্লেখ্য শাকিলের অবৈধ কাজে বাধা দেওয়ায় ও অসামাজিক কার্যকলাপের প্রতিবাদ করায় তারই আপন ছোট ভাই আহসানুল হাসানকে হয়রানি করতে তার বিরুদ্ধে বিগত ২০১৫সালের ৭ নভেম্বর রমনা মডেল থানায় একটি মিথ্যা জিডি দায়ের করেন। জিডি নং-৬৮৬, তাং-০৭-১১-২০১৫ইং। পরে পরিবারের লোকজন শাকিলের হয়রানির হাত থেকে বাঁচতে ইকো ডিজিটাল সাইন নামক প্রতিষ্ঠানটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ