শাকিল হোসেন-স্টাফ রিপোর্টার:
নওগাঁর পত্নীতলায় নজিপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্রে পা দিয়ে লিখে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন শারীরিক প্রতিবন্ধী জনয়িকা রানী।
জনয়িকা রানী মহাদেবপুর উপজেলার গাহলী দেওরা গ্রামের হরেন্দ্র বর্মণ ও বুলবুলি রানীর মেয়ে। বঙ্কিম ও লিমন নামে জনয়িকার দুই ভাই রয়েছে।
জন্ম থেকেই জনয়িকার দুটি হাত থাকলেও তা অকেজো। এ নিয়ে পরিবারের সদস্যরা হতাশ হলেও ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ার প্রতি প্রবল ইচ্ছা ছিল জনিকা রানীর। বিষয়টি নজরে আসে তার অভিভাবকদের।
প্রাথমিক সমাপনী, জুনিয়র সার্টিফিকেট পরীক্ষাতে ভালো ফল করেন তিনি। স্থানীয় গাহলী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষাতে জিপিএ- ৪.৮৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপর উচ্চশিক্ষার আশায় পত্নীতলার চৌরাট শিবপুর ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হন।
নজিপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন জনয়িকা।
কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, জনয়িকা একটি কক্ষে অন্য শিক্ষার্থীদের পাশেই মেঝেতে একটি বিছানার ওপর বসে ডান পায়ের আঙুল দিয়ে লিখে পরীক্ষা দিচ্ছেন।
ওই কেন্দ্রের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জনয়িকা যাতে সুষ্ঠু ভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পারে সে বিষয়ে তারা বিশেষ দেখভাল করছেন।
এ প্রসঙ্গে চৌরাট শিবপুর কলেজের অধ্যক্ষ দিপক কুমার বলেন, জনয়িকা খুব মেধাবী ছাত্রী। নিয়মিত ক্লাস করে। ক্লাস পরীক্ষার ফল ছিল সন্তোষজনক। আশা করছি সে এইচএসসি পরীক্ষাতে ভাল ফলাফল করবে।
জনিকার বাবা হরেন্দ্র বর্মন বলেন, মেয়েটাকে নিয়ে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। ওর মা তার দেখাশোনা করে। মেয়েটার পড়ার প্রতি খুব আগ্রহ, সে উচ্চতর পড়াশুনা শেষ করে সরকারি চাকরি করতে চায়।
জনিকার মা বুলবুলি রানী বলেন, জনয়িকা আমাদের বড় সন্তান। জন্ম থেকেই তার সবকিছুর দেখভাল করছি আমি। অনেক চিকিৎসা করেও মেয়েটির অবস্থা স্বাভাবিক হয়নি। মেয়েকে নিয়ে অনেক দুঃশ্চিন্তা হয়, তার ভবিষ্যৎ কি হবে!
আমি মারা গেলে কে তাকে দেখবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন, তিনি যদি আমার মেয়েটিকে একটি সরকারি চাকরি দিতেন, ওর একটা গতি হতো, তাহলে আমি মরে গিয়েও শান্তি পেতাম।
E-mil: dailyalokito71sangbad@gmail.com
@বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোক চিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
Copyright © 2024 alokito71sangbad. All rights reserved.