• Uncategorized

    পত্নীতলায় কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকরা সংকটে

      প্রতিনিধি ১৮ এপ্রিল ২০২১ , ৩:০৪:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ

    পত্নীতলায় কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকরা সংকটে

    স্থানীয় পর্যায়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়ন এবং বেকারত্ব হ্রাসে কিন্ডারগার্টেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ক্লাস ও পরীক্ষা পদ্ধতি, মাল্টিমিডিয়া ক্লাস, অভিভাবকদের সঙ্গে সমন্বয় ও যোগাযোগ ইত্যাদি কারণে কিন্ডারগার্টেনের ওপর অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের ভরসা ও আস্থা বেড়ে গেছে। বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতির কারণে সারা দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো ১৭ মার্চ-২০২০ থেকে বন্ধ রয়েছে পত্নীতলার ৬৮টি কিন্ডারগার্টেন। দীর্ঘ ১৩ মাস প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বেতন-ভাতা না পাওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছে এসব কিন্ডারগার্টেনের সঙ্গে জড়িত প্রায় ১১শ’ শিক্ষক ও কর্মচারী। পেটের তাড়নায় অনেকেই সম্মানজনক এই পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছে।

    সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, কিন্ডারগার্টেনগুলো চলে মূলত শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন, সেশন ফি, পরীক্ষা ফি, কোচিং ফি ইত্যাদি দিয়ে। কিন্ডারগার্টেনগুলো সরকারি কোনো প্রকার অনুদান পায় না। প্রাণঘাতী করোনার কারণে ১৩ মাস ধরে তালাবদ্ধ এই প্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকরা প্রতিষ্ঠান থেকে ৩ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসিক বেতন পেয়ে থাকে। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে এই বেতন কিছুই না। প্রাইভেট আর কোচিংয়ের ওপর ভর করে কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকরা জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত থাকলে প্রাইভেট পাওয়া সুবিধা হওয়ায় নামমাত্র বেতন সত্ত্বেও এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতী কিন্ডারগার্টেনে শিক্ষকতা করেন। করোনাভাইরাসের কারণে বিদ্যালয় ও প্রাইভেট কোচিং বন্ধ। ফলে কিন্ডারগার্টেনে শিক্ষকতায় নিয়োজিতরা চরম আর্থিক সংকটে দিনাতিপাত করছেন। তারা না পারছে হাত পাততে, না পারছে সুন্দরভাবে জীবন চালাতে। সরকারি ভাবেও সাহায্য-সহযোগিতা ও প্রণোদনার ক্ষেত্রে কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক-কর্মচারীদের বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে না। বাধ্য হয়েই জীবন-জীবিকার তাগিদে তারা পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছেন।

    এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশন পত্নীতলা উপজেলা শাখার সভাপতি ও নজিপুর মালঞ্চ কিন্ডারগার্টেনের অধ্যক্ষ মো. আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, পেটের দায়ে ইতোমধ্যেই কেউ দারোয়ানের চাকরি, কেউ দোকানের কর্মচারী আবার কেউ দিন মজুরির পেশাও বেছে নিয়েছেন। অনেক শিক্ষক একটি কাজের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন পেশাজীবীর মানুষকে সরকারি ভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হলেও কিন্ডারগার্টেন শিক্ষকদের আমলে নেওয়া হয়নি। দীর্ঘ সময় প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ড্রপ আউট হওয়া শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে এনে কিন্ডারগার্টেনগুলো আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কিনা তা নিয়ে চরম সংশয় প্রকাশ করেন এই শিক্ষক নেতা। সেই সময় পর্যন্ত কিন্ডারগার্টেনের সমস্যা পীড়িত শিক্ষক ও কর্মচারীদের সহায়তার জন্য তাদের প্রণোদনা দেওয়ারও জোর দাবি জানান তিনি।

    এ বিষয়ে পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. লিটন সরকারের মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক ও কর্মচারীদের আর্থিক সংকটের বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে সরকারি ভাবে কোনো সহায়তা না পাওয়ায় তাদের বিষয়ে কিছু করা সম্ভব হয়নি। জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে স্থানীয় ভাবে তাদের জন্য কিছু করা যায় কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ