মু,হেলাল আহম্মেদ রিপন-পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি।

পটুয়াখালীতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরের এলজিইডির দুই কর্মকর্তাকে এক প্রভাবশালী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক সরোয়ার বাদল মারধর করেছেন ও পিস্তল ঠেকিয়ে ভয় দেখানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।গত রবিবার (০৬-মার্চ-২০২২ ইং) তারিখ দুপুরে দুমকি উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল (এলজিইডি) দপ্তরে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার মো. নাজিম উদ্দীন দুমকি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরে (এলজিইডি) প্রকৌশলী পদে ও সালাম একই দপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী পদে কর্মরত।

অভিযুক্ত ঠিকাদার গোলাম সরোয়ার বাদল ওরফে মেয়র বাদল পটুয়াখালী মেসার্স পল্লি ট্রেডার্সের মালিক। পটুয়াখালী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জিএম শাহাবুদ্দিন বলেন, প্রাথমিকভাবে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় ভিকটিমের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট ইউএনওকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে মারধরের শিকার উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সালাম বলেন, ২০১৬ সালে গোলাম সরোয়ার বাদল দুমকীর পাঙ্গাশিয়ায় একটি সেতু নির্মান করেন। কাজ শেষ হলেও সেতুতে নানা ত্রুটি থাকায় কাজের অনুকূলে অর্থ পরিশোধ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। কিন্তুু ঠিকাদার আজ রোববার আমার কাছে এসে শতভাগ বিল দাবি করেন। আমি আপত্তি দিয়ে বলি- ওই প্রকল্পে যৌথ মেজরমেন্ট করে বাকি বিল পরিশোধ করা হবে। আপনি চাইলেই আমি বিল দিতে পারি না। এতে ঠিকাদার বাদল রাগান্বিত হয়ে আমাকে চড় থাপ্পর মারতে শুরু করেন। পরে তিনি উপজেলা প্রকৌশলীর কক্ষে গিয়েও একই কাণ্ড ঘটান।

প্রকৌশলী মো. নাজিম উদ্দীন বলেন, প্রথমে আমার কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সালামের সঙ্গে পুরনো একটি বিল নিয়ে বাকবিতণ্ডা ও তাকে মারধর করে। এরপর তিনি আমার কক্ষে প্রবেশ করেন। এ সময় তিনি বিল নিয়ে কথা বলতে চাইলে আমি পটুয়াখালী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারের সঙ্গে আলোচনা ও সমন্বয় করার পরামর্শ দিই। এ সময় কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই তিনি চেয়ার ছুড়ে আমার গালে চড়থাপ্পড় মারেন। এ সময় তিনি তার কোমরে থাকা পিস্তল খোঁজেন এবং আমাদের ভয়-ভীতি দেখান।

অভিযুক্ত গোলাম সরোয়ার বাদল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পুরনো একটি বিল নিয়ে এলজিইডি তালবাহানা শুরু করেছে। বিল সংক্রান্ত বিষয়ে দুমকি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন অর-রশিদ মধ্যস্থতা করেন। বিল দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে উপসহকারী প্রকৌশলী আ. সালাম ১০ লাখ টাকা দাবি করলে আমি আজ ধারদেনা করে তিন লাখ ৭০ হাজার টাকা সালামকে দিই। কিন্তু সালাম ওই টাকা হাতে নিয়ে বাকি টাকা দাবি করে এবং বিল দিতে বেঁকে বসে। তখন আমি তার গায়ে হাত তুলতে বাধ্য হই। কিন্তু প্রকৌশলীর সঙ্গে কিছু হয়নি।

এবিষয় দুমকি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো,হারুন অর-রশিদ হাওলাদার দৈনিক বরিশাল সমাচার ও দৈনিক বরিশাল সমাচার'কে বলেন, মারধরের বিষয়টি এলজিইডির লোকজন আমাকে জানিয়েছেন,এটা আসলেই অনেক দুঃখ জনক ঘটনা বলে জানান তিনি। উক্ত ঘটনার বরাত দিয়ে দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো,আব্দুল সালাম বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি।তবে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল ইমরান বলেন, আমরা এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।