• Uncategorized

    পটুয়াখালীর দক্ষিন অঞ্জলে গ্রাম বাংলার ঢেঁকি শিল্প বিলুপ্তির পথে বসেছে। 

      প্রতিনিধি ৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ৪:০৪:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ

     

    মু,হেলাল আহম্মেদ(রিপন)পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ

    গ্রাম বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রামীণ ঐতিহ্য ঢেঁকি শিল্প আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। সময়ের আবর্তনে এরস্থলে এসেছে আধুনিক কলকারখানা ও সরঞ্জাম। বর্তমান প্রজন্মের কাছে ঢেঁকি শিল্প শুধুই গল্পকাহিনী মাএ।

    বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, একসময় পটুয়াখালীর  বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের সকল মানুষের কাছে ঢেঁকির কদর ছিল অনেক বেশি। ধান ভানা, আটা, হলুদের গুড়া ও চিড়া তৈরিসহ নানাবিধ কার্যক্রম চলতো ঢেঁকির সাহায্যে।

    বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মানুষের কাছে বিভিন্ন ধরনের পিঠা যেমন- ভাবা পিঠা, পাকান পিঠা, পাটিশাপ্টা, কুলি পিঠাসহ নানা ধরনের তেলের পিঠার প্রচলন ছিল। যা খাওয়ার উপযোগী করে তোলার জন্য একমাত্র মাধ্যম ছিল ঢেঁকি।

    পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা, কলাপাড়ার প্রধানত কৃষি প্রধান এলাকা। এক সময় গ্রাম গুলোতে কৃষক যখন তাদের ক্ষেতের নতুন ধান ঘরে তুলতো ঠিক তখনই ঘরের বধূরা ধান ঝেড়ে রোদে শুকিয়ে ঢেঁকির মাধ্যমে ধান ভানা ও আটা তৈরি করে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য সামগ্রী তৈরি করত। আবার কখনও নতুন ধানের চিড়া তৈরির জন্য ব্যস্ত থাকত।

    বিগত এক যুগ আগেও এমন চিত্র পটুয়াখালীর উপজেলা পর্যায়  বিভিন্ন গ্রাম এলাকায় মানুষের মাঝে লক্ষ্য করা যেত। তাদের চাহিদা মেটাতে প্রায় সকলের বাড়িতে ঢেঁকি থাকত কথাটি  বললেও ভুল হবে না।

    পটুয়াখালী জেলার মরিচবুনিয়া ইউনিয়নের  খাইরুন বেগম বলেন, আমি কয়েক বছর যাবৎ ঢেঁকির সাহায্যে জীবিকা নির্বাহ করছি। আমার বাড়ির আশে পাশে শত শত বাড়ি থাকলেও তাদের কোন ঢেঁকি ছিলোনা। তাই আমি প্রতিদিন অনেক মানুষের প্রতি কেজি ৪টাকা দরে চালের আটা তৈরি করে দিয়েছি। একই গ্রামের আব্বাস মোল্লা (৫০) বলেন, আধুনিক কলকারখানা তৈরীর সাথে সাথে ঢেঁকি প্রচলন প্রায়ই দেখা যায় না। আগে ঢেঁকি ছাড়া ধান থেকে চাল, আটা, চিড়া এবং হলুদের গুড়া তৈরী করা সম্ভব হতো না। ঘরের বধুরা খুব ভোর থেকে ধান ভানার কাজ করত। আগে প্রত্যেকের বাড়ীতে ঢেঁকি থাকতো। মহিলারা রান্না ও অন্যান্য কাজ করার পর ঢেঁকির কাজে ব্যস্ত থাকত। ঢেঁকি ছাটা চাল, আটা ও চিড়া অনেক সু-স্বাদু।

    গ্রামাঞ্চলের মহিলারা ধান ভানা, আটা, হলুদ ও চিড়া তৈরি করার সময় এক সুরে মনের আনন্দে ও বউ ধান ভানোরে ঢেঁকিতে পাড় দিয়া, ঢেঁকি নাচে আমি নাচি হেলিয়া দুলিয়া ও বউ ধান ভানোরে……গান গাইতো। এখন আর সেই ঢেঁকি আর দেখা যায় না বললেও ভুল হবে না।

    সময়ের চাহিদা মেটাতে এর স্থলে ধান থেকে চাল, আটা ও চিড়া তৈরি এবং হলুদের গুড়া তৈরি সহ ঢেঁকির সাহায্যে করা নানাবিধ কাজগুলো সমাপ্ত করার জন্য আধুনিক কলকারখানাসহ পৃথক পৃথক সরঞ্জাম এসেছে এমনটি ধারণা আজকের সকল মহলের। সেই সাথে সাথে আধুনিক প্রজন্মের কাছে ঢেঁকি একটি গল্পকাহিনীতে পরিনত হতে চলেছে,এমনটাই জানালেন গ্রাম বাংলার মানুষ।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ