পটুয়াখালী'র দক্ষিণ অঞ্চলের পায়রা বন্দরসহ গোটা উপকুল জুড়ে বইছে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি। সাগর ও বিভিন্ন নদ নদীর পানি প্রায় ২ থেকে ৩ ফুট উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সাথে সোমবার সকাল থেকে মাঝারি ও ভারি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে জেলা জুড়ে।
আকাশে মেঘের ঘনঘটা বিরাজ করছে। ফের ভাঙ্গন কবলিত বেড়িবাঁধ দিয়ে রামনাবাদ নদীর পানি প্রবেশ করে তলিয়ে গেছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গ্রামের পর গ্রাম। এছাড়াও পূর্ণিমা ও নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় জেলেদের মাছ ধরা বন্ধ রেখে অবস্থান করছে নিরাপদে। এদিকে জেয়ারের পানিতে থৈ থৈ করছে উপজেলার ভাঙ্গন কবলিত লালুয়া, চম্পাপুর, ধানখালী ইউনিয়নের গ্রামীন জনপদ। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট,বাড়িঘর,পুকুর,ঘেরসহ ফসলী ক্ষেত জমি। এর ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে ওইসব এলাকার খেটে খাওয়া হতদরিদ্র অসহায় সাধারণ মানুষ।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, পায়রা বন্দর ভুমি অধিগ্রহণ করায় পানি উন্নয়ন বোর্ড সেখানে নতুন করে বাঁধ নির্মাণ কিংবা পুরনো বেড়িবাঁধ মেরামত করছে না। তাই অনেক অসহায় দরিদ্র শ্রেণির মানুষ চরম ঝুঁকিতে ঠাঁই নিয়েছেন বেড়িবাঁধের এলাকায়। তবে দেখা দিয়েছে গো-খাদ্য সংকট। চরম দুর্ভোগে দিন কাটচ্ছে ওইসব বান ভাসি মানুষ। এছাড়া সবচেয়ে বেশি বিপাকে পরেছে কৃষকরা।
উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের বুড়োজালিয়া এলাকার বাসিন্দা শামসুল ইসলাম (সানু) বলেন, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে অমাবস্যা ও পূর্ণিমার জো’তে বিধ্বস্ত বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে তলিয়ে যায় সবকিছু। চাষাবাদ তো দুরের কথা,ঘর বড়িতে থাকাই এখন দায় হয়েছে।ঐ এলাকার অনেকেই একই দশার কথা বলেছেন অনেকে। ধানখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা গাজী রাইসুল ইসলাম রাজিব বলেন, ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ দিয়ে প্রতিদিন দুই দফা জোয়ারের পানি প্রবেশ করে মানুষের ঘড়-বাড়ি, ফসলি ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এতে মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
এ বিষয় ধানখালী ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো.রিয়াজ তালুকদার জানান, দেবপুরের বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত থাকায় নিশানবাড়িয়া, পাচজুনিয়া, লোন্দা গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের কৃষকের ধানের ক্ষেতসহ অনেকের বসত ঘর তলিয়ে গেছে। তাদের দূর্ভোগের সীমানাই। তবে দেবপুর বেড়িবাঁধের কাজ শিঘ্রই শুরু হবে বলে তিনি সাংবাদ কর্মীদের তিনি জানান।
তবে এব্যপারে লালুয়ার চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন( বিশ্বাস) বলেন, রাবনাবাদপাড়ের দীর্ঘ ছয় কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত রয়েছে। মানুষের বাড়িঘর সম্পদসব দফায় দফায় অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত হচ্ছে। এ ব্যপারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে কুয়াকাটা-আলীপুর মৎস্য বন্দর সমবায় সমিতির সভাপতি মো.আনছার উদ্দিন মোল্লা দৈনিক বাংলাদেশ কন্ঠকে জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে বর্তমানে সাগর উত্তাল রয়েছে। জেলেরা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ করে বেশিরভাগ ট্রালার মাছেরআড়ৎ ঘাটে এসে নোঙ্গর করেছে।
তাছাড়া উপকুলীয় এলাকা দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার শংকা করছে বলে আবহাওয়া অফিস জানান। তাই পায়রাসহ সব সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। দূর্ঘটনা এড়াতে শিববাড়িয়া নদীতে অবস্থানরত সকল মাছধরা ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদে থাকতে মাইকিং করছে নিজামপুর কোষ্টগার্ড সদস্যরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে জানা যায়।
E-mil: dailyalokito71sangbad@gmail.com
@বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোক চিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
Copyright © 2024 alokito71sangbad. All rights reserved.