• Uncategorized

    নির্যাতিত নিশি’র চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন-পুলিশ সুপার, আহমার উজ্জামান। 

      প্রতিনিধি ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ , ১:৫০:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ

    নান্দাইল উপজেলার রাজাবাড়িয়া গ্রামের দরিদ্র শারীরিক প্রতিবন্ধী মজিবুর রহমানের মেয়ে নিশি আক্তার। গৃহকর্মী নিশিকে গরম ইস্ত্রি ও চামচের ছ্যাঁকা দেওয়া হতো। ময়মনসিংহের গৃহকর্মী নিশি আক্তারের ওপর গরম ইস্ত্রি ও কাঁটাচামচের ছ্যাঁকা দেওয়ার মতো নৃশংস নির্যাতনের ঘটনায় গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রীর গ্রেফতার করেছে। গতকাল মারাতœক আহত গৃহকর্মী নিশির সমস্ত চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন।

    ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মোহাঃ আহমার উজ্জামান। সোমবার আহতের প্রতিবন্ধি বাবার হাতে নগদ অর্থ দিয়ে এমন কথা জানিয়েছেন।এর আগে গত রোববার বিকেলে বিচারকের কাছে নিজের ওপর চলা নৃশংসতার বর্ণনা শুনিয়েছে নির্যাতিত শিশু নিশি। একই দিন বিকেলে মামলা শেষে অভিযুক্ত গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রীকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

    এগারো বছর বয়সী নিশিকে পাঁচ বছরের রেখে মা দিতি আক্তার অন্যত্র বিয়ে করে চলে যান। স্ত্রী চলে যাওয়ার পর দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে কষ্টে দিন কাটছিল প্রতিবন্ধী মজিবুরের। পারিবাবিক অভাব অনটন দেখে এলাকার হেলাল শিশুটিকে গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে দেন। প্রতি মাসে সাড়ে ৩ হাজার টাকা বেতনে। ঢাকার দৈনিক বাংলা মোড় এলাকার অগ্রণী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মিজানুর রহমান বাবুলের বাসায় কাজ করতো শিশু নিশি। তার বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার ভৈরব বাজারে। রাজধানীর ইন্দিরা রোডের একটি বাসায় তিনি বসবাস করেন।

    শিশু নিশি বাসায় কাজে লাগার পর থেকেই গৃহকর্ত্রী শারমিন রহমান মুন্নি নির্যাতন চালাতেন। নির্যাতন চালাতেন গৃহকর্তা মিজানও। চার বছর ধরে মেয়েটি কাজে গেলেও, পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করা ও কথা বলতে দেওয়া হতো না। যার মাধ্যমে বাসায় কাজে দেওয়া হয়েছে, সেই হেলালও সঠিক ঠিকানা দেননি। মাঝে মাঝে মোবাইল ফোনে নিশির সঙ্গে তার বাবার কথা বলিয়ে দিলেও গত সাত মাস কোনো যোগাযোগ করানো হচ্ছিল না মেয়েটির সঙ্গে।

    ভিন্ন অজুহাতে কৌশলে মেয়েকে দেখার সুযোগ চান মজিবুর। পরে গত ৬ ফেব্রুয়ারী শনিবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ পাটগুদাম সেতু এলাকায় নিশিকে রেখে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়রা আটক করে ফেলেন গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রীকে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে গৃহকর্তা মিজানুর রহমান, গৃহকর্ত্রী মুন্নি ও হেলালকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন। মামলায় গেফতার দেখিয়ে রোববার বিকেলে গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রীকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

    শিশু নিশি জানায়, তার শরীরে গরম ইস্ত্রি ও কাঁটা চামচ গরম করে ছ্যাঁকা দেওয়া হতো। ঢেলে দেওয়া হতো শরীরে গরম পানিও। রোববার বিকেলে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দির জন্য মেয়েটিকে নেওয়া হয়। শিশু নিশি জানায়, তার শরীরে গরম ইস্ত্রি ও কাঁটা চামচ গরম করে ছ্যাঁকা দেওয়া হতো। ঢেলে দেওয়া হতো শরীরে গরম পানি।শারীরিক প্রতিবন্ধী মজিবুর একটি বাঁশের লাঠি হাতে আদালত চত্বরে ঘুরে নিজের মেয়ের ওপর হওয়া অত্যাচারের বিচার দাবি করেন।

    শারীরিক প্রতিবন্ধী মজিবুর একটি বাঁশের লাঠিতে ভর করে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে যান। ৮ জানুয়ারী সোমবার অসুস্থ শিশু নিশির সমস্ত চিকিৎসার দায়ীত্ব নেন ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার মোহাঃ আহমার উজ্জামান। এসময় তিনি নির্যাতিত শিশু নিশির প্রতিবন্ধি বাবার হাতে নগদ অর্থ তুলে দেন। পুলিশ সুপার মোহাঃ আহমার উজ্জামান দেশে করোনা কালীন সময়ে ও শীতের মাসে মানবিক সেবায় জেলাবাসীর কাছে প্রশংসিত হয়েছেন।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ