• Uncategorized

    নওগাঁয় ধান কাটায় শ্রমিক সংকটে বিপাকে পরেছেন কৃষকরা

      প্রতিনিধি ২৭ এপ্রিল ২০২১ , ১১:১৬:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ

    তৌকির আহম্মেদ, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ

    লকডাউনের মধ্যে ধান কাটিয়া শ্রমিক সংকটে ধান কাটা ও মাড়াইসহ ঘরে তুলতে বিপাকে পড়েছেন নওগাঁর কৃষকরা। ইতিমধ্যেই নওগাঁর বিভিন্ন গ্রামের মাঠে ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। সময় মতো ধান কেটে ঘরে তুলতে না পারলে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতির শঙ্কায় উৎকণ্ঠিত অবস্থার মধ্যে পড়েছেন কৃষক কৃষাণীরা। চাহিদার তুলনায় শ্রমিক কম হওয়ায় স্থানীয় শ্রমিকদের মজুরিও বেশি পড়ছে বলেই জানিয়েছেন কৃষকরা।
    নওগাঁ জেলা প্রশাসন ও নওগাঁ জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাইরের কৃষি শ্রমিক আনার উদ্দ্যোগ নেওয়া হলেও আশানুরূপ শ্রমিক আসেনি বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
    কৃষকরা জানান, নওগাঁ জেলায় চলতি ইরিবোরো ধান কাটা মাড়াইয়ে স্থানীয় প্রায় সাড়ে তিন লাখ শ্রমিক ছাড়াও জেলার বাইরের আরও এক লাখ পাঁচ হাজার শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। এর বিপরীতে গত কয়েকদিনে বাইরে থেকে কৃষি শ্রমিক এসেছে মাত্র পাঁচ হাজার, যা প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগণ্য।
    কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর উপ-পরিচালক মোঃ শামছুল ওয়াদুদ প্রতিবেদককে জানান, এবার নওগাঁ জেলায় বোরো ধান কাটা মাড়াইয়ে মোট সাড়ে চার লাখ কৃষি শ্রমিকের প্রয়োজন। অভ্যন্তরীণ শ্রমিক বাদ দিয়ে জেলায় বাইরের কৃষি শ্রমিকের প্রযোজন এক লাখ পাঁচ হাজার। কিন্তু করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় লকডাউনের কারণে বাস, ট্রেন ও অন্যান্য গণপরিবহন বন্ধ থাকায় স্বাভাবিকভাবে জেলার বাইরে গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, চাপাইনবাবগঞ্জ, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, ভেড়ামারা, যশোরসহ বিভিন্ন এলাকার শ্রমিক আসতে পারছে না।
    তবে ধান চাষীদের যোগাযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে গত কয়েকদিনে পাঁচ হাজার শ্রমিক ধান কাটতে এসেছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
    তিনি আরও জানান, জেলায় এবছর এক লাখ ৮০ হাজার ৬২৪ হেক্টর জমিতে বোরো রোপনের লক্ষমাত্রা ধার্য করা হয়। কিন্তু রোপা আমনে ভালো দাম পওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত সাড়ে সাত হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপন করা হয়েছে। এবার ধানের ফলন খুব ভালো এবং প্রতি বিঘায় ধান পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ২৫ মন হারে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং কৃষকরা সময়মত ধান ঘরে তুলতে পারলে প্রায় ১২ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হবে বলে আশা কৃষি বিভাগের। বর্তমানে প্রতিমন নতুন ধান বাজারে ৯শ থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা দরে কেনাবেচা হচ্ছে।
    বাইরে থেকে আসা শ্রমিকরা বলছেন, এবার বাস কিংবা মাইক্রোবাস যোগে নওগাঁয় আসতে দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে। এ কারণে বোরো চাষি কৃষকদের গত বছরের চেয়ে প্রতিবিঘা ধান কাটা-মাড়াইয়ে ৫শ থেকে এক হাজার টাকা অতিরিক্ত লাগছে।
    নওগাঁ নওহাটা মোড় এলাকার বোরো ধান চাষী সাজ্জাদ হোসেন মন্ডল বলেন, এখন পর্যন্ত বাইরের শ্রমিক না আসায় প্রতি বিঘায় পাঁচশ টাকা বেশি মজুরিতে চার হাজার টাকায় কাটতে হচ্ছে স্থানীয় শ্রমিক দিয়ে। বর্তমানে জেলার হাটবাজারে প্রতিমন ধান ৯শ থেকে এক হাজার ৫০ টাকা দরে বেচাকেনা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ধানের দাম এর নিচে এলে আমার ধান চাষিরা ত ক্ষতিগ্রস্ত হবেই এছাড়া বর্গা চাষীরা পথে বসবেন।
    নওগাঁ জেলা পুলিশ সুপার জনাব প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান বিপিএম বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশেষ ব্যবস্থায় যোগাযোগ করে নিয়ে আসা বাইরের শ্রমিকদের আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। পাশাপাশি জেলার শ্রমিকদের এক থানা থেকে অন্য থানায় পুলিশ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা নিয়েছে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ