স্টাফ রিপোর্টার-মু,হেলাল আহম্মেদ:
পটুয়াখালীর গলচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে সহযোগীসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। ১২’মে পটুয়াখালী সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক রুখসানা পারভিন গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলেও থানায় এখনো পৌঁছায়নি কাগজপত্র।
গত শনিবার ২১’মে রাতে পরোয়ানার কাগজ না পৌঁছানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর শওকত আনোয়ার ইসলাম। তবে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন অভিযুক্ত চেয়ারম্যান এবং তার সহযোগী সদস্যরা।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৩ এপ্রিল পটুয়াখালী সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মো. রিয়াজ মিয়া নামে এক ব্যক্তি গোলখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করেন। আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তদন্তের নির্দেশ দেয়।
তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় দুদক পটুয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নাজমুল হুসাইন গত ৮ মার্চ আদালতে দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্র গ্রহণ করে আদালত ১২’মে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়না জারি করেন।
দুদকের তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গোলাখালী ইউনিয়নের বড়গাবুয়া খেয়াঘাট একটি আন্তঃজেলা খেয়াঘাট। এর এক পাড়ে পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলা এবং অপরপাড়ে বরগুনার আমতলী উপজেলা। মাঝখানে গোলখালী নদী অবস্থিত। ফেরিঘাট ইজারা নীতিমালা অনুযায়ী আন্তঃজেলা ফেরিঘাট বিভাগীয় কমিশনার কর্তৃক গঠিত কমিটির মাধ্যমে ইজারা দেওয়া হয়।
বড়গাবুয়া খেয়াঘাটটির ইজারা দেওয়ার এখতিয়ার বিভাগীয় কমিশনারের। সে অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশিত হয়। সে অনুযায়ী সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে রিয়াজ মিয়াকে ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বাংলা ১৪২৬ খ্রিঃ সালের জন্য ইজারা দেওয়া হয়।
গোলাখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন ইজারাদার রিয়াজকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে খেয়াঘাট পরিচালনায় বাধা দেন এবং তার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। রিয়াজ ঘুষ না দেওয়ায় খলিলুর রহমান নামে আরেক ব্যক্তির কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ২০১৯ সালের ৩ এপ্রিল বড়গাবুয়া খেয়াঘাটের স্থলে বড়গাবুয়া টু বড়গাবুয়া নামে ভিন্ন একটি খেয়াঘাট নির্মাণ করে ঘাট পরিচালনা করেন চেয়ারম্যান। সরকারি ইজারাকৃত খেয়াঘাটের দুই কিলো মিটারের মধ্যে নতুন কোনো খেয়াঘাট তৈরি করা যাবে না এবং নতুন নামে কোনো খেয়াঘাট ইজারা দেওয়া যাবে না জেনেও চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন ইজারা দিয়েছেন।
এ ব্যপারে গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিষ কুমার বলেন, আমরা এখনো এ বিষয়ে কোনো অফিসিয়াল কাগজপত্র পাইনি। কাগজপত্র পেলে আইনগত পদক্ষেপ অবশ্যই নেওয়া হবে।
উক্ত ঘটনার ব্যপারে চেয়ারম্যানের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহম্মদ শহীদুল্লাহ গণমাধ্যম কে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির কাগজ পুলিশ অফিস হয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় গিয়ে থাকে। তবে এখনো পেপারসটি কেন যায়নি সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
E-mil: dailyalokito71sangbad@gmail.com
@বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোক চিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
Copyright © 2024 alokito71sangbad. All rights reserved.