• আইন ও আদালত

    তানোর এলজিইডি ভবন সিন্ডিকেট চক্রে জিম্মি

      প্রতিনিধি ৩ জুন ২০২৩ , ১০:০৬:২২ প্রিন্ট সংস্করণ

    মমিনুল ইসলাম মুন বরেন্দ্র অঞ্চল প্রতিনিধি :

    রাজশাহীর তানোর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ভবন আকন্ঠ দূর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে অনিয়ম-দূর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। উপজেলা জুড়ে এলজিইডি’র তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন প্রকল্পের উন্নয়ন কাজে নানামুখী  অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। গ্রামগঞ্জের রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট ও স্কুলের ভবন নির্মাণ-সংস্কার কাজে এসব অনিয়ম হচ্ছে। ফলে ভাল মানের কাজ না হওয়ায় কিছুদিন পরপর সংস্কার করতে হচ্ছে। ঠিকাদার-প্রকৌশলীর পকেটভারী হলেও সরকারের বিপুল অঙ্কের অর্থ অপচয় হচ্ছে।

    উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) ভবন চত্ত্বরে গড়ে উঠা টেন পার্সেন্ট সিন্ডিকেট চক্রের অন্যতম সদস্য এসও রহমত আলীর মাধ্যমে প্রতিটি উন্নয়ন কাজের বরাদ্দ থেকে দশ পার্সেন্ট টাকা আর্থিক সুবিধা নেওয়া হয়।

    সুত্রে জানা গেছে, ক্ষমতাসীন দলের জনৈক জনপ্রতিনিধি তার ঠিকাদার ভাইকে দিয়ে প্রকৌশলীর নেপথ্যে মদদে এলজিইডি ভবন ঘিরে গড়ে তুলেছে শক্তিশালী  সিন্ডিকেট চক্র। ‘টেন পার্সেন্ট’ নামে পরিচিত সিন্ডিকেট চক্র নিয়ন্ত্রণ করছে পুরো এলজিইডি ভবন। স্থানীয় ঠিকাদার সুত্রগুলো বলছে, তানোর এলজিইডি ভবনে এখন স্বাভাবিক নিয়মে কোন কাজ হয় না। কাজে ক্রটি থাক বা নাই থাক কতিপয় কর্মকর্তাকে চাহিদামত

    আর্থিক সুবিধা দিতেই হচ্ছে তা না হলে কথিত অভিযোগে ঠিকাদারদের বিল আটকে দেয়াসহ নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। আবার ‘টেন পার্সেন্ট’  সিন্ডিকেট চক্রের  সঙ্গে যোগসাজশ করে তাদের অনুগত ঠিকাদারেরা নিম্নমানের কাজ, কাজ শেষ হওয়ার আগেই বিল উত্তোলন, অর্থ ছাড়ে কমিশন আদায় সবমিলিয়ে এলজিইডি ভবনে এক অরাজকতা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। সুত্র জানায়, ‘টেন পার্সেন্ট’  সিন্ডিকেট চক্র এলজিইডি’র প্রায় ৮০ভাগ উন্নয়ন কাজ নিয়ন্ত্রণ করছে। উপজেলায় সড়ক ব্রিজ-কালভ্রাট যাই টেন্ডার দেয়া হোক না কেনো টেন পার্সেন্ট সিন্ডিকেট চক্র ব্যতিত সেই টেন্ডারের কার্যাদেশ পাবার অধিকার কারো নাই। এদিকে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প এলাকার বাসিন্দারা জানান, উপজেলার বাধাইড় ইউপির গোয়ালপাড়া প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে নজিরবিহীন অনিয়ম করা হয়েছে। কলমা ইউপির ধঞ্জয়পুর প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে অনিয়ম ও ঝড়-বৃষ্টির মধ্যেই কার্পেটিং করা হয়েছে। সরনজাই ইউপির কাসাঁরদিঘী প্রায় ৮০০ মিটার রাস্তা নির্মাণের একদিন পরেই রাস্তা দেবে গেছে ও পিচ উঠে গেছে।  কালীগঞ্জহাট-সরনজাই রাস্তা সংস্কার কাজে সিডিউল মোতাবেক কোনো কাজ হয়নি,যা হয়েছে তা একেবারে নিম্নমাণের। চাঁন্দুড়িয়া ইউপির হাড়দহ প্রায এক কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণেও ভয়াবহ অনিয়মের চিত্র ফুটে উঠেছে। এছাড়াও ডাঙাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিল্লী হাটে মহিলা মার্কেট ইত্যাদি কাজ নানা অনিয়মের অভিযোগ করেছেন উপকারভোগীরা। তারা আরো বলেন,

    সরেজমিন তদন্ত করা হলে এসব অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ হবে। এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী সাইদুর রহমান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, একেবারে শতভাগ কাজ কোথাও হয় না। তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে একটু উনিশ-বিশ হতে পারে, নজরে আসলে সেটাও ঠিক করে নেয়া হয়, আর অনিয়ম বা দুর্নীতির কোনো সুযোগ নাই। তবে এসব প্রকল্পের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য তিনি জানাতে পারেননি। এবিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার বোরহান বলেন, ৪৮জন সাংবাদিককে খুশি করা হয়েছে। যদি এর পরেও তারা কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে সেটা দুঃখজনক।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ