• রংপুর বিভাগ

    ডিমলায় পুলিশের পক্ষ থেকে ঘর উপহার পেলেন গৃহহীন পঙ্গু তছিরন।

      প্রতিনিধি ৯ এপ্রিল ২০২২ , ১২:০১:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ

    নীলফামারী প্রতিনিধিঃ

    স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে দেশের প্রতিটি থানায় ৫২০টি পুলিশের পক্ষ থেকে আড়াই শতক জমিসহ একটি করে নতুন ঘর উপহার পেলেন ভূমি ও গৃহহীন দুস্থ অসহায় পরিবার।
    তারই ধারাবাহিকতায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় ডিমলা থানা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ ডিজাইনের একটি দূর্যোগ সহনীয় ঘর উপহার পেলেন স্বামীহারা বিধবা, পঙ্গু, অসহায় ও পুত্র সন্তান হীন বৃদ্ধা নারী তছিরন বেগম (৬০)। কাজ শুরুর দুই মাসের মধ্যেই নতুন ঘরেটি তৈরি সম্পূর্ণ হয়। ৯ এপ্রিল (রবিবার) মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রতিটি থানায় স্থাপিত নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক এবং গৃহহীন পরিবারের জন্য নির্মিত গৃহ শুভ উদ্বোধনের মাধ্যমে বসবাস শুরু করেছেন পরিবারটি। ঘরটিতে দুটি রুম, দুইটি ফ্যান, দুইটি লাইট, একটি বাথরুম ও একটি টিউবওয়েল, পানির ট্যাংক দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও শোভা বর্ধনের জন্য বিভিন্ন ফুলের গাছ, আম, জাম, সুপারির চারা রোপন করা হয়েছে। পরিদর্শক (তদন্ত) বিশ্বদেব রায়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও এসআই আখতারুজ্জামানের অক্লান্ত পরিশ্রমে সুদৃশ্য ঘাঁটি নির্মিত হয়েছে।
    ৯ই এপ্রিল (শনিবার) সকালে পুলিশের দেওয়া বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নতুন ঘরে বসবাস করার প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন অসহায় পঙ্গু তছিরন বেগম। চোখে মুখে তৃপ্তি নিয়ে নীলফামারী জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান (বিপিএম, পিপিএম) ও ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলামের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তছিরন বেগমের ছোট জামাতা মমিনুর রহমান বলেন, স্বপ্নেও ভাবিনি আমার শাশুড়ির এমন ঘর হবে।
    ডিমলা উপজেলাধীন গয়াবাড়ী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের শুঠিবাড়ী বাজার সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা তছিরন বেগম দীর্ঘদিন স্বামী হারা, পুত্র সন্তান নেই ছোট মেয়ের জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করছেন। মেয়ের জামাইও দিন আনে দিন খায় কোনমতে সংসার চলে তাদের।মেয়ের জামাইয়ের সংসারেও পাঁচটি ছেলে মেয়ে। এরমধ্যে গত দুই বছর পূর্বে তছিরনের পায়ের আঙ্গুলে ইনফেকশনের কারণে প্রায় দুটি পা-ই কেটে ফেলতে হয় আর হয়ে-যান পঙ্গু। পঙ্গুত্বের কি? ভয়াবহ নির্মমতা কাছে এসে না দেখলে বুঝা যাবে না এই পরিবারে! ঘটনাক্রমে ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলামের নজরে আসে তছিরন বেগমকে। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় ছোট মেয়ের বাড়িতে কোনরকমে খুপরি ঘরে বসবাস করছেন বিধবা, অসহায়, পঙ্গু নারী তছিরন বেগম আর তাই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে ঘরের জন্য তাকে মনোনীত করেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যে একটি নতুন দূর্যোগসহনীয় ঘর তৈরি করে আজকে তছিরনকে বুঝিয়ে দেয়া হলো। বলে জানিয়েছেন ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম।
    পুলিশের এমন মহৎ কাজকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও। গয়াবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আমজাদ হোসেন সরকার বলেন, ওসি স্যার তছিরন বিষয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমিও সায় দিয়েছি এবং বলেছি একজন যোগ্য প্রার্থী বাছাই করেছেন। তছিরন বেগমের মত এমন অসহায় পরিবার গুলোই এমন সহায়তা পাওয়ার যোগ্য আমি বাংলাদেশ পুলিশকে ধন্যবাদ জানায়। গয়াবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন-অর-রশিদ বলেন, পুলিশের এমন জনহিতকর কার্যে আমরা আনন্দিত এমন ভালো কাজ আরো বেশি করে করার অনুরোধ রইলো পুলিশ বাহিনীর প্রতি। ডিমলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের জনকল্যাণমুখী কাজের নিয়মিত অংশ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দেশের প্রতিটি থানার ন্যায় ডিমলা থানায় একটি ঘর পেয়েছে তছিরন বেগম এতে পরিবারটি বাকি জীবন কিছুটা হলেও সাচ্ছন্দে কাটাতে পারবে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ