মো: রাশেদুল ইসলাম(রাশেদ)খুলনা বিভাগীয় ব্যুরো প্রধানঃ
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার কাশিপুরে জমি জায়গার বিরোধকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ঘটনায় আপন ভাইদের হাতে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এক বড় ভাই। সোমবার সকালে গাছের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় ও সর্ব শরীরে আঘাত করে হাত-পা ভেঙ্গে মাঠেই ফেলে রাখে। অন্যদিকে আহত বড় ভাইকে তারা হাসপাতালে নিয়ে যেতেও বাঁধা দেয়। এক ভাইয়ের প্রতি অন্য ভাইদের এমন বর্বতা আর নিসংসতা এলাকার মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
এলাকাবাসী সুত্র জানায়,কেডিকে ইউনিয়নের কাশিপুর বাজারপাড়ার মৃত রমজান মালিতার রেখে যাওয়া সম্পত্তির হিস্যা নিয়ে তার সন্তানদের মধ্যে চরম বিরোধের সৃষ্টি হয়। ইতিপুর্বে কয়েক দফায় সন্তানদের মধ্যে হামলা-মামলার ঘটনাও ঘটেছে। রমজান মালিতার সন্তানদের মধ্যে আব্দুস সামাদ ও ফজলু ডাক্তার দুটি গ্রুপে বিভক্ত।
ফজলু ডাক্তার প্রভাবশালী ও আওয়ামী নেতা বনে যাওয়ায় তার দাপট অন্যদের প্রতি বেশী। তাদের মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে থাকে। একই ভাবে আব্দুস সাসাদ(৫৫) সোমবার সকাল ১১ টারদিকে কাশিপুর গাঙের ধার মাঠে তার মরিচ ক্ষেত পরিচর্যা করছিলেন। সেখানে ফজলু ডাক্তারের নেতৃত্বে তাদের লোকজন দেশীয় তৈরী অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে বড় ভাই আব্দুস সামাদকে ঘিরে ফেলে এবং তাকে গাছের সাথে মধ্যযূগীয় নির্যাতন চালায়। পরে তাকে রশি বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
নির্যাতনের শিকার আব্দুস সামাদের ছেলে ইয়াসিন হোসেন বলেন,আমার বাবা সোমবার সকাল ১১ টার দিকে মাঠে মরিচ ক্ষেতে কাজ কছিলেন। ওই সময় আমার চাচা ফজলু ডাক্তারের নেতৃত্বে অপর চাচা হাফিজুল,নজরুল ইসলাম নজু,আজি মালিতার ছেলে খোকন,আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আলামিন,নজরুল ইসলামের ছেলে সাকিল ও নাবিলরা হাতে লাঠিসোটা,লোহার রড,ধারালো হাসুয়া ইত্যাদি নিয়ে ঘটনাস্থলে আমার আব্বার ওপর হামলা চালায়।
তারা আমার আব্বাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গাছে হাত-পা বেঁধে মারপিট ও কুপিয়ে মারাক্মক ভাবে জখম করেছে। আমার মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তারা সেখান বাঁধা অবস্থায় কাশিপুর বাজারে এনে ফেলে রাখে এবং আমরা যাতে হাসপাতালে নিতে না পারি সে জন্য তারা লাঠিসোটা নিয়ে সেখানে অবস্থান করতে থাকে।
পরে আমি ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পুলিশের মাধ্যমে আমার বাবাকে উদ্ধার করে জীবননগর হাসপাতালে ভর্তি করি। এক্য্র-রে করে দেখা যায় আমার আব্বার দুই হাত ও ডান পা এবং কোমর ভেঙ্গে গেছে। ঘটনার পরেও তারা আমাদেরকে বাড়ী থেকে বের হতে বাঁধা দেয়। চাচা ফজলু ডাক্তারের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। তার একটাই কথা সে আমাদের খুন জখম না করে দম নেবে না।
সরজমিনে প্রত্যক্ষদর্শী তুহিনসহ আরো অনেকে বলেন,জীবনে অনেক ঘটনা দেখেছি,তবে এমন বর্বরতা আর নৃশংসতা দেখিনি। ভাই হয়ে ভাইকে রশি দিয়ে বেঁধে মধ্যযূগীয় নির্যাতনের পর তাকে হাসপাতালে নিতে বাঁধা দেয়া এসব কিসের আলামত?
কেডিকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যার খায়রুল বাসার শিপলু বলেন,ঘটনার কথা আমি শুনেছি। ঘটনার সাথে জড়িত দু'জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছেন।
জীবননগর থানার অফিসার সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,ঘটনার সাথে জড়িত নজরুল ও হাসানকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার সকালে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
E-mil: dailyalokito71sangbad@gmail.com
@বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোক চিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
Copyright © 2024 alokito71sangbad. All rights reserved.