• জাতীয়

    ছেলেকে মোটরসাইকেলে নিয়ে বগুড়া থেকে ঢাকায় বাবা

      প্রতিনিধি ৭ নভেম্বর ২০২১ , ৪:০৬:৫৫ প্রিন্ট সংস্করণ

    নিউজ ডেস্কঃ

    ছেলেকে পরীক্ষার হলে পৌঁছে দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে অপেক্ষা করছেন বাবা। গতকাল বুয়েট ক্যাম্পাসে।ছেলেকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) পড়াবেন, এমন স্বপ্ন সব বাবাই দেখেন। বগুড়ার আইনুল হক তাঁদের একজন। আইনুলের সেই স্বপ্ন পূরণের প্রথম ধাপেই বাধা হয়ে দাঁড়ায় ডিজেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে দেশজুড়ে চলা পরিবহন ধর্মঘট। কিন্তু আইনুলও দমে যাওয়ার লোক নন। ছেলেকে মোটরসাইকেলের পেছনে বসিয়ে বগুড়া থেকে ঢাকায় আসেন তিনি। গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত বুয়েটের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অংশ নেন ছেলে আশিক ইকবাল।

    গতকাল সকালে আশিক ইকবাল যখন বুয়েট ক্যাম্পাসে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন, তখন মোটরসাইকেল নিয়ে বাইরে অপেক্ষা করছিলেন বাবা আইনুল। ঘটনাটি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।আইনুল হক বলেন, ‘শুক্রবার ঢাকায় রওনা যাওয়ার জন্য তার দুদিন আগেই শাহ ফতেহ আলী বাসের টিকিট কেটে রেখেছিলাম। কিন্তু ধর্মঘটের খবর শুনে বাস কাউন্টারে ফোন করে নম্বর বন্ধ পাই। কাউন্টারে গিয়ে দেখি তালা দেওয়া। পরে শুক্রবার সকালে মোটরসাইকেলে করেই দুজন ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিই। শুক্রবার রাতে ঢাকায় একটি হোটেলে উঠি। মোটরসাইকেলে করে এত দূর আসাটা ঝুঁকির কাজ ছিল। কিন্তু না এসেও উপায় ছিল না, ছেলের তো পরীক্ষা দিতে হবে।’

    ডিজেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে গত শুক্রবার সকাল থেকে সারা দেশে বাস-ট্রাক চালানো বন্ধ রেখেছেন পরিবহন মালিকেরা। সেই ধর্মঘট তুলে নিতে সরকারের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হলেও পরিবহনমালিকেরা তাতে সাড়া দেননি।ছেলে আশিক ইকবাল বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। আশিক ইকবালের স্বপ্ন প্রকৌশল বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ। বাবা আইনুল হক বলেন, ‘ছেলের স্বপ্নপূরণ হলে এই কষ্ট (ঝুঁকি নিয়ে মোটরসাইকেলে করে ঢাকায় আসা) আমার কাছে কিছুই না।’

    সারা দেশে চলা এই পরিবহন ধর্মঘটের মধ্যে শনিবার বেশ কয়েকটি সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা হয়। এ ছাড়া এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত রাজধানীর সাত সরকারি কলেজের বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষার পূর্বঘোষিত তারিখ (৬ নভেম্বর) ভর্তি পরীক্ষা পেছানো হয়নি। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় শনিবার আইনুল হক ও আশিক ইকবালের মতো অনেক অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীকেই চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।এদিকে চূড়ান্ত পর্বের ভর্তি পরীক্ষা শুরুর পর বিভিন্ন হল ঘুরে বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন,

    ‘চূড়ান্ত পর্বে ৬ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫ হাজার ৯৪৪ জন উপস্থিত হয়েছেন। উপস্থিতির হার প্রায় ৯৯ শতাংশ। এটি অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। আমরা কিছুটা দুশ্চিন্তার মধ্যে ছিলাম যে পরিবহন ধর্মঘটে উপস্থিতির হার কেমন হয়! তবে উপস্থিতির হারে আমরা সন্তুষ্ট। যদিও যাঁরা দূর থেকে এসেছেন, তাঁদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। বিষয়টি আসলে আমাদের হাতে ছিল না৷ বুয়েটে এবার যেসব শিক্ষার্থী ভর্তি হবেন, করোনা মহামারির কারণে তাঁদের ইতিমধ্যে অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। তাঁদের যাতে আর সময় নষ্ট না হয়, সে জন্য ভর্তি কার্যক্রম শেষ করে দ্রুত ক্লাস শুরু হয়ে যাবে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ