• চট্টগ্রাম বিভাগ

    চিকিৎসকের অবহেলায় মায়ের পেটে শিশুর মৃত্যু

      প্রতিনিধি ১২ জানুয়ারি ২০২৩ , ৭:১৮:০৩ প্রিন্ট সংস্করণ

    কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি:

    অন্তঃসত্ত্বা মিনোয়ারা বেগমের সব কিছুই স্বাভাবিক ছিল। আলট্রাসনোগ্রামের প্রতিবেদনও ভালো। গর্ভে বাচ্চার নড়াচড়াও স্বাভাবিক। তার পরও দেবীদ্বার উপজেলা ধামতি সাব সেন্টারের ভিজিটর মোসাম্মৎ সাহিদা আক্তার তাকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা চিকিৎসকের কাছে না পাঠিয়ে নিজেই প্রসব করানোর সিদ্ধান্ত নেন। এর জন্য তিনি ১২ হাজার টাকায় চুক্তিও করেন অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর স্বজনের সঙ্গে। আর এতেই ঘটে বিপত্তি।সাহিদা আক্তারের অজ্ঞতা ও অবহেলায় মিনোয়ারা বেগম রক্ষা পেলেও তিনি প্রসব করেন মৃত সন্তান। গতকাল সোমবার রাতে দেববীদ্বার পৌরসভার ছোটআলমপুর সাহিদার আক্তারের বাসায় এ ঘটনা ঘটে।

    দেবীদ্বার উপজেলার বিনাইপার গ্রামের অন্তঃসত্ত্বা মানোয়ারা বেগম (৩৫) প্রসবকালীন ব্যথা উঠলে সোমবার বিকেলে তাদের আত্বীয় নিরাপদ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান সফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করেন।তারপর সফিকুল ইসলাম সাহিদা আক্তারের সাথে যোগাযোগ করলে সাহিদা আক্তার তাকে তার পৌর শহরের উপজেলা পরিষদের পেছনে ছোট আলমপুরের বাসায় আসতে বলেন। (রুগীর) বোন ও মাকে নিয়ে সেখানে গেলে সাহিদা অন্তঃসত্ত্বার পেটে হাত দিয়ে বলেন, কোনো সমস্যা নেই, বাচ্চা নড়াচড়া করছে। নরমাল ডেলিভারি হবে আপনারা বাচ্চার কাপড় প্রয়োজনীয় যা দরকার নিয়ে আসেন। এরপর ওই গৃহবধূকে কোন আলট্রাসনোগ্রাম না করেই প্রসব করার চেষ্টা করেন।বাসায় চেষ্টায় ব্যার্থ হলে দেবীদ্বার মেডিনোভা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।এবং ঐ হাসপাতালে সিল ও দস্তগত ছাড়া একটি আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট বের করেন এবং রিপোর্টে বাচ্চা মৃত ঘোষনা দেন।

    ওই নারীর বোন ফারজানা আক্তার বলেন, তার ভগ্নিপতি একজন চা দোকানদার। তার বোনের ১৪ বছর পর একটি ছেলে হয়েছিল। সাহিদা বেগমের অবহেলায় ছেলেটিকে বাঁচানো গেল না।আমার বোন আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিল্লা কুচাইতলি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।আমার বোন এখন বাচা মরার সন্ধিক্ষনে।আমরা এর বিচার চাই এবং আর কোন মায়ের বুক যেনো অপচিকিৎসায় খালি না হয়।মেডিনোভা হাসপাতালের এমডি কামরুল হাসান বলেন,রাতে সাহিদা বেগম একটি রোগী আমাদের হাসপাতালে পাঠান।আমি আলট্রাসনোগ্রাম ছাড়া রোগীর চিকিৎসা করতে অসম্মতি জানাই। এক পর্যায়ে আলট্রাসনোগ্রাম করে দেখি পেটের মধ্যে বাচ্চা মৃত।

    পরে রোগীর স্বজনের সম্মতি নিয়ে পেট থেকে মৃত বাচ্চা বের করা হয়। সোমবারের এই ঘটনা নিয়ে সাহিদা আক্তার অনুতপ্ত নন। তার বক্তব্য- জন্ম-মৃত্যু তো তার হাতে নেই। তার কাছে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ এসেছেন। তিনি চিকিৎসা দিয়েছেন।চেষ্টা করেছেন,চেষ্টায় ব্যার্থ হলে দেবীদ্বার মেডিনোভা হাসপাতালে রেফার করেন।হাসপাতালে আল্ট্রা করানোর পর দেখেন পেটে বাচ্চা মৃত।এখানে তার কিছুি করার ছিলো না।পরবর্তীতে রোগীর স্বজনরা সাহিদা আক্তারের বিরুদ্ধে থানায় একটি সাধারন ডায়রি করেন।এবং তার সুষ্ঠু বিচার চান।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ