কাওছার হাবিব-নওগাঁ:
ষড় ঋতুর দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। ছয়টি ঋতু বৈচিত্র্য ময় হওয়া প্রকৃতি সাজে তার নতুন রুপে। ছয় ঋতুর মধ্যে যে ঋতু টি নিয়ে বাংলার ঘরে ঘরে বার্তা বহন করে আসে তা হচ্ছে শীতকাল বাংলা বর্ষপুন্জির অগ্রহায়ণ মাস টি মুলত শীতের জম্ম কাল হিসেবে বেশ অপরিচিত,কার্তিক -অগ্রহায়ণ মানে শীত আসছে। এখন হিমের হাওয়া শিশিরভেজা ভোর আর
কুয়াশায় ঢাকা সন্ধ্যা জানিয়ে দিচ্ছে প্রকৃতির সবচেয়ে আদুরে ঋতু শীতের আগমনী বার্তা। সকালের ঘন কুয়াশার চাদর কে অপেক্ষা করে মিষ্টি হয়ে উঠছে সকালের রোদ। সবুজ ঘাসের ডগায় এবং আমন ধানের পাতায় শিশিরবিন্দু গুলো সকালের রোদের আলোয় ঝলমল করে উঠে।
প্রতিটি শিশির বিন্দু যেন মুক্তোর দানার মতো নান্দনিক রূপ ধারন করেছে। রাতের বেলায় টিনের চালে টুপটাপ ঝরে পড়ছে শিশির, মনে হয় যেন আকাশটা কেঁদে চলছে অনাবরত। শীতের আগমনকে সামনে নিয়ে। বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নওগাঁ জেলার আগাম শীতের জানান দেয়। উপজেলা গুলোর প্রত্যান্ত অঞ্চলে শুরু হয়ে গেছে খেজুর রস সংগ্রহের প্রস্তুতি। মাঠজুড়ে চলছে শীতকালীন সবজি আবাদ, পরিচর্যা ও আগাম উৎপাদিত সবজি বিক্রি করতে হাটে নেওয়ার ব্যস্ততা। মাঠে মাঠে সোনালী বর্ণ ধারণ করেছে আমন ধান।
কৃষকদের শ্রমে আর ঘামে উৎপাদিত এসব আমন ধানকে ঘিরে গ্রামীন জনপদে চলছে নবান্নের প্রস্তুতি,বাহারি রকমের পিঠা যেমন,নারিকেল পিঠা, পাটি সাপটা, দুধ চিতই,ভাপা পিঠা, খির পিঠা, ইত্যাদি। আমন ধান কাটার পর ক’দিন পরেই ফুটবে সরিষার ফুল। দিগন্ত জুড়েই পাকা আমনের সোনালী রঙ এবং হলুদ বর্ণের সরিষার ফুল দেখে যে কারো চিত্তহৃদয় মূহুর্তের মধ্যে হারিয়ে যাবে প্রকৃতির মাঝে। গ্রামীণ জনপদের জলাশয় গুলোতে ইতি মধ্যে সকাল বিকাল শোনা যাচ্ছে।
অতিথি পাখির কলরব ও ডানা ঝাপটানোর মধুর আওয়াজ। প্রকৃতিতে শুরু হয়ে গেছে শুস্কতা। গ্রাম-বাংলার গাছের গাঢ় সবুজ পাতা গুলো দিনদিন খয়েরি-কালে রূপ ধারণ করছে। শুরু হবে পাতা ঝরার পালা। শীতের অগ্রদূত হয়ে প্রকৃতির দোয়ারে হাজির হয়ে গেছে সব চিত্র। তার মাঝে দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে গ্রামীণ জনপদের চিত্র। নওগাঁ জেলা পত্নীতলা উপজেলার গ্রাম গুলোতে শীতকালীন সবজি নিয়ে মহাব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে কৃষক-কৃষাণীরা। কেউ নতুন ভাবে বিচ রোপন করছে কেউ আবাদ করছে, আবার কেউ আগাছা পরিস্কার করে কীটনাশক প্রয়োগসহ পরিচর্যা করছে, কেউ কেউ আগাম উৎপাদিত সবজি বাজারে নিয়ে যাচ্ছে।
হাট-বাজারেও আসতে শুরুও করেছে শীতকালীন সবজি যেমন মুলাশাক, লালশাক, সরিষাশাক, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, বেগুন, শিম, লাউ, শসা, বরবটি, ঢেড়স, টমেটো, গাজর, দেশি মরিচ ইত্যাদি। শীতের আগমনে গ্রীস্মকালে অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকা দামী দামী শীতবস্ত্র গুলো হয়ে উঠতে জাগ্রত প্রাণের স্পর্শে ফিরে পাবে হারানো সম্মান। ইতিমধ্যে গরম কাপড়ে মার্কেট, বিপনী বিতানের দোকান সমূহ ভরে উঠেছে, জ্যাকেট,সোয়েটার,শাল, মাবলার, কম্বল, হাত-পায়ের মোজা,ওলের টুপি থরে থরে সাঁজিয়ে রেখেছে দোকানিরা, অপেক্ষা কন-কনে শীত থেকে বাচাঁর জন্য আগত ক্রেতা সাধারনের।
গরিব নিম্নবিত্তদের জন্য পুরাতন কাপড়েই ভরসা তাই তারা ছুটছে রাস্তার পার্শের দোকান খুলে বসা মৌসুমী শীতবস্ত্র বিক্রেতাদের কাছে। মনিহারি, স্টেশনারী ষ্টোরে মজুদ করা হয়েছে শীতের নানান প্রসাধনী লীপজেল বিভিন্ন ধরনের ক্রীম, পেট্রোলিয়াম জেলী, লোশন মর্শরাইজার জেলীর নেই কোন জুড়ী,। শীতকালে সব চেয়ে বড় সমস্যা ঠান্ডা জনিত রোগ বয়স্কদের শ্বাষকষ্ট, ছোটদের নিমোনিয়া, হাপাঁনী, এ্যাজমা, চুলকানী সর্দি-কাশি, হাত-পা ফাঁটা সহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে। আমাদের উচিত সকল বিষয়ে সচেতনতা অবলম্বন করে সতর্ক থাকা। শত সমস্যার মাঝেও আনন্দ শীত আসছে আমাদের মাঝে।
E-mil: dailyalokito71sangbad@gmail.com
@বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোক চিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
Copyright © 2024 alokito71sangbad. All rights reserved.