• কৃষি

    গোলমরিচ চাষে সম্ভবননা করছেন ড.মাসুদুর

      প্রতিনিধি ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ , ৯:৩৫:৪২ প্রিন্ট সংস্করণ

    সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:

    মসলার রাজা গোলমরিচ একটি বহুবর্ষজীবী লতাজাতীয় উদ্ভিদ। ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা, ব্রাজিল, থাইল্যান্ড এবং অন্যান্য গ্রীষ্ম প্রধান দেশে গোলমরিচ ব্যাপক ভাবে চাষ করা হয়। এছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় স্বল্প পরিসরে গোল মরিচের চাষ হচ্ছে। দেশে গোল মরিচ চাষ বৃদ্ধিতে সরকার গুরুত্ব দিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় গোলমরিচ চাষ ও দেশে এর বর্তমান অবস্থা নিয়ে শুরু হয়েছে বিভিন্ন গবেষণা।

    বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি ও মার্কিন কৃষি বিভাগের (বিএএস-ইউএসডিএ) আর্থিক সহযোগিতায় সিলেট অঞ্চলে গোল মরিচের উৎপাদন বৃদ্ধি শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় গোল মরিচ নিয়ে গবেষণা করছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল উদ্ভিদবিজ্ঞান ও চা উৎপাদন প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমান এবং কৃষি বানায়ন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামিউল আহসান তালুকদার।

    মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) খাসিয়া অধ্যুষিত সিলেটের মোকাম পুঞ্জিতে গবেষণা পরবর্তী ফসল প্রদর্শনী করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রকল্পটির প্রধান গবেষক ও সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল উদ্ভিদবিজ্ঞান ও চা উৎপাদন প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমান, কৃষি বানায়ন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামিউল আহসান তালুকদার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, সিলেট এর অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মোঃ ফারুক হোসাইন।

    জৈন্তাপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা শামিমা আক্তার, প্রকল্পের গবেষণা সহকারী মোঃ মওদুদ আহমদ সহ সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, জৈন্তাপুর উপজেলার উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ ও মোকাম পুঞ্জির ১৫ জন গোল মরিচ চাষি।
    সিলেটের বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চলের খাসিয়া পুঞ্জিতে গোল মরিচ গাছ থাকলেও ভালো পরিচর্যার অভাবে তা উৎপাদনে যেতে পারেনা। এছাড়াও বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানি জমে থাকা ও শীত মৌসুমে পানির অভাব, খুঁটি ব্যবহার না করা সহ সার ব্যবস্থাপনার অজ্ঞতা অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে তাদের গবেষণার মাধ্যমে।

    অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, ‘পাহাড়ি এলাকায় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ শুষ্ক মৌসুমে পানি ব্যবস্থাপনা। প্রায় সাত থেকে আট মাস গোল মরিচ গাছে ফল থাকে, ফলে গাছ শারিরীকভাবে দূর্বল থাকে। সঠিক পরিচর্যা ও পুষ্টি উপাদান সরবরাহের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান অনেকাংশেই দূর করা সম্ভব। দেখাগেছে পানি ও সারের পাশাপাশি একটু যত্ন নেওয়া হয়েছে সে গাছগুলোতে ফল সংখ্যা বেশি পাওয়া গেছে এমনকি তাদের আকৃতিও বেশ বড় ছিল, যা আসলেই সম্ভাবনাময়।’

    প্রকল্পটির গবেষণা সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামিউল আহসান তালুকদার বলেন, ‘গোল মরিচ একটি লাভজনক ফসল। পানের মত প্রতিদিন বা সপ্তাহ শেষে বিক্রির সুযোগ না থাকলেও বছর শেষে শুকনা গোল মরিচ বিক্রি করে কৃষক মোটা অঙ্কের টাকা পাবে। যা কৃষকদের জীবন মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।’

    জৈন্তাপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা শামিমা আক্তার বলেন, ‘রাজস্ব কর্মসূচীর আওতায় ২০১৯-২০ অর্থ বছরে কৃষকদের জন্য বেশ কিছু প্রদর্শনী করা হয়। যার ফলশ্রুতিতে কিছু কৃষকে গোল মরিচ চাষের আওতায় আনা গেছে। এছাড়াও গোল মরিচ চাষে আগ্রহী কৃষকদের সহযোগীতা প্রদানের আশ্বাস দেন তিনি।’

    গোল মরিচ চাষি অপিন পাত্র বলেন, ‘কিভাবে গোলমরিচ চাষাবাদ করতে হয় কিভাবে যত্ন নিতে হয় এবং এর সার ব্যবস্থাপনা কি এই সম্পর্কে আজকে আমরা জানতে পেরেছি। আগে আমরা গোল মরিচ কেবল নিজেদের জন্য চাষ করতাম, তবে আজকে এর সম্ভাবনা ও আর্থিক সম্ভাবনা শোনার পর আমরা গোল মরিচ চাষের দিকে গুরুত্ব দিব।’

    দেশে গোল মরিচের চাহিদা পূরণে অনেকটায় ভূমিকা পালন করতে পারে দেশের পাহাড়ি এলাকাগুলো, সেই সাথে পাহাড়ে বাস করা মানুষদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নেও ভূমিকা রাখবে এধরনের মসলা জাতীয় ফসলের চাষ।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ