• চট্টগ্রাম বিভাগ

    কুমিল্লায় সাংবাদিক পরিবারের উপর হামলা ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

      প্রতিনিধি ২৪ ডিসেম্বর ২০২২ , ১:৩৭:০২ প্রিন্ট সংস্করণ

    স্টাফ রিপোর্টার:

    কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার রাজামেহার গ্ৰামে সাংবাদিক পরিবারে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়ে কুপিয়ে জখম করার পর উল্টো সাংবাদিক বিল্লাল হোসেন তার ভাই আহত জালালসহ চুলাশ, উখারী এবং রাজামেহার গ্রামের নিরীহ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কে হয়রানি ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে এলাকাবাসীর মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার রাজামেহার ইউনিয়নের চুলাশ বাজারে কয়েকটি গ্রামের মানুষ এই মানববন্ধন করে। এতে গণমাধ্যম কর্মী বিল্লাল হোসেন ও তার পরিবার, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মোজাম্মেল হক হুমায়ুনসহ সাবেক ইউপি সদস্যসহ ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের লোকজন অংশ নেয়।

    মানববন্ধনে রাজামেহার ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মোজাম্মেল হক হুমায়ুন বলেন, বেতরা গ্রামের বিএনপি নেতা সন্ত্রাসী সালাউদ্দিনের নির্দেশে চুলাশ, উখারি, রাজামেহারসহ কয়েকটি গ্রামে কিশোর গ্যাং গড়ে উঠেছে।

    ওই গ্রামগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে কিশোর গ্যাং সদস্যরা বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। তারা গত ৪ ঠা ডিসেম্বর সন্ধ্যায় হাতে রামদা, চাইনিজ কুড়াল ও এস এস পাইপ নিয়ে রাজামেহার গ্রামের গণমাধ্যম কর্মী বিল্লাল হোসেনের বাড়িতে হামলা চালায়, বাড়িতে গণমাধ্যম কর্মী বিল্লাল হোসেনকে না পেয়ে তার নিরোপরাধ বড় ভাই মোঃ জালালকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।

    এ ঘটনায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ০৭ ই ডিসেম্বর দেবীদ্বার থানায় গণমাধ্যম কর্মী বিল্লাল হোসেন বাদী হয়ে দেবীদ্বার থানার মামলা নং ০৬/২২ইং জিআর ২৬৭/২২ ইং রুজু হলে সন্ত্রাসী সালাউদ্দিন ক্ষিপ্ত হয়ে তার লালিত পালিত কিশোর গ্যাং বাহিনীর টেগরা আশ্রাফুল বাদী সাজিয়ে কুমিল্লার আদালতে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং সিআর-৭২৪/২২ ইং কে মামলায় গনমাধ্যম কর্মী মোঃ বিল্লাল হোসেন কে ১ নং বিবাদী করে মোট ১০ জনের বিরুদ্ধে এবং সন্ত্রাসী আলী আশ্রাফ কে বাদী সাজিয়ে কুমিল্লার আদালতে আরেকটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং সিআর-৭৮/২২ ইং অএ মামলায় গনমাধ্যম কর্মী মোঃ বিল্লাল হোসেন কে ৩ নং বিবাদী ও রাজামেহার ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মোজাম্মেল হক হুমায়ুনকে ৬ নং বিবাদী করে মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে কুমিল্লা আদালতে ০২ টি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করেন।

    মোজাম্মেল হক হুমায়ুন আরও বলেন, ঘটনায় আমাকেও মামলার আসামি করা হয়েছে, অথচ আমি ওইদিন নারায়ণগঞ্জে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলাম। তাছাড়া ও কিশোর গ্যাং বাহিনী লালন পালনকারী সন্ত্রাসী সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় ও থানায় জ্বালাও-পোড়াও, জোর পূর্বক জমি দখল, প্রতারনার মামলা ও সরকার বিরোধীসহ প্রায় ৮/১০টি মামলা চলমান রয়েছে। আমরা গ্রামের সাধারণ ও নিরীহ মানুষ এই সন্ত্রাসী সালাউদ্দিনের কিশোর গ্যাং বাহিনীর অত্যাচার,হামলা-মামলা ও অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে চাই।

    হামলার শিকার আহত মোঃ জালাল বলেন, ৪ ঠা ডিসেম্বর রাত সাড়ে সাতটায় সন্ত্রাসী সালাউদ্দিনের লালিত পালিত সন্ত্রাসীরা আমার ছোট ভাই গনমাধ্যম কর্মী বিল্লাল হোসেনকে সুমন মিয়ার চা দোকানের সামনে ও দোকানের ভিতরে মারধর করেছে। সেখান থেকে চলে গিয়ে সন্ত্রাসীরা আবারো রাত আনুমানিক আটটার সময় আমার ছোট ভাই গনমাধ্যম কর্মী বিল্লাল হোসেনকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে আমার ঘরে এসে আমার ভাইকে না পেয়ে সন্ত্রাসীদের হাতে থাকা রামদা, চাইনিজ কুড়াল দিয়ে আমাকে অলোপাতারি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে চলে যায়।

    গনমাধ্যম কর্মী বিল্লাল হোসেন বলেন, সন্ত্রাসী সালাউদ্দিন বাহিনীর নির্দেশে উখারী গ্রামের কিশোর গ্যাং লিগার টেগরা আশ্রাফুলসহ ১১/১২ আমাকে হত্যার উদ্দেশ্য আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে আমাকে না পেয়ে আমার বড় ভাইকে সন্ত্রাসীদের হাতে থাকা রামদা, চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হাতের লিগামেন্ট রগ বিচ্ছিন্নসহ পিঠের মধ্যে কুপিয়ে মাংস আলাদা করে রক্তাক্ত জখম করে চলে যায়। সন্ত্রাসী সালাউদ্দিনসহ তার লালিত পালিত সন্ত্রাসীরা প্রতিদিন বিভিন্ন মাধ্যমে আমাদের হুমকি-ধমকি দেয়। আমাকে এবং আমার পরিবারের সকলকে সুযোগমতো পাইলে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবে। আমি এই সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।

    মানববন্ধনে শামসুল ইসলাম সর্দার বলেন, আমার বয়স প্রায় ৭৫ বছর এই বয়সে ও আমাকে মামলার আসামি করেছে বেতরা গ্রামের বিএনপির শীর্ষ সন্ত্রাসী সালাউদ্দিনের নির্দেশে। আমাদের উখারী গ্রামের ছোট ছোট ছেলেদের কে গড়ে তুলেছে কিশোর গ্যাং নামক অস্ত্রধারী বাহিনীতে। আমাদের নামে মিথ্যা মামলার প্রত্যাহার করাসহ এই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি ।

    এ বিষয়ে সাবেক ইউপি সদস্য সফিকুল ইসলাম কালু বলেন, অমাধ্যম কর্মী বিল্লাল হোসেনের বাড়িতে হামলার দিন আমি চুলাশ দক্ষিণ বাজারে আমার নিজ দোকানে বসা ছিলাম রাত আনুমানিক আটটার দিকে কিশোর গ্যাং বাহিনীর টেগরা আশ্রাফুল, রাসেল, রাকিব, ইসহাক, ইয়াছিন, আলী আশ্রাফ, শাকিল, নাজমুলসহ আরো কয়েকজন সন্ত্রাসীর হাতে রামদা, চাইনিজ কোরাল, ও এস এস পাইপ নিয়ে হামলা চালানোর জন্য যাচ্ছে। আমার জীবনে আমি কোনদিন এরকম অস্ত্রশস্ত্র কোথাও দেখিনি। ঘটনার কয়দিন পরে শুনেছি কিশোর গ্যাং বাহিনীর সন্ত্রাসীদের দুজন সদস্য ওই দুই মামলায় আমাকে সহ আসামি করে মিথ্যা মামলা করেছে। আমি এই মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।

    চুলাশ বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী আরিফ বলেন, আমি চুলাশ মধ্যে বাজারে আমার নিজ কাপড় দোকানে ছিলাম রাত আনুমানিক আটটার ১/২ মিনিটের সময় কিশোর গ্যাং বাহিনীর টেগরা আশ্রাফুলসহ সন্ত্রাসী বাহিনীরা হাতে রামদা, চাইনিজ কোরাল, ও এস এস পাইপ নিয়ে গণমাধ্যম কর্মী বিল্লাল হোসেনের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালিয়ে তার বড় ভাই জালালকে এলোপাতারী কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে আবার দক্ষিণ দিকে দৌড়ে আসতে দেখেছি। ঘটনার কয়েকদিন পরে শুনি সন্ত্রাসীদের উল্টা দায়ের করা ২ টি মিথ্যা মামলায় আমাকেও আসামি করা হয়েছে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ