• রাজনীতি

    উন্নয়ন রুখে দিতে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র চলছে

      প্রতিনিধি ৭ জানুয়ারি ২০২২ , ৮:০৮:২৮ প্রিন্ট সংস্করণ

    নিউজ ডেস্কঃ

    বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগুচ্ছে, তবে তা রুখে দিতে দেশ-বিদেশে বসে দেশবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি নানা ষড়যন্ত্র করছে বলে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি জানিয়েছেন, বিদেশে উন্নয়ন সহযোগীদের ভুল বোঝানোর চেষ্টা চলছে।সরকারের ৩ বছর পূর্তি ও ৪ বছরে পর্দাপন উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণের শুরুতেই দেশবাসীকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সাল উন্নয়ন অভিযাত্রার এক অভূতপূর্ব স্বীকৃতির বছর।

    সরকারের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে ভাষণে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ শীর্ষক ইশতেহার ঘোষণা করেছিলাম। আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারের মূল প্রতিপাদ্য ছিল দক্ষ, সেবামুখী ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তুলে সন্ত্রাস, জঙ্গি নির্মূল করে একটি ক্ষুধা-দারিদ্র্য-নিরক্ষরতা মুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা।পরে তার সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ২০২২ সাল হবে এক মাইলফলক বছর।

    এ বছরের জুনে পদ্মা সেতু, অক্টোবরে কর্ণফুলী টানেল ও বছরের শেষে দিকে মেট্রোরেল চালু হবে জানান প্রধানমন্ত্রী।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক ষড়যন্ত্রের জাল আর প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করতে যাচ্ছি। এই সেতু দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে সরাসরি রাজধানীসহ অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করবে।তিনি বলেন, এ বছরের শেষ নাগাদ নাগাদ উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।

    এ অংশে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।
    এছাড়া, বন্দরনগরী চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণ কাজের তিন-চতুর্থাংশ শেষ হয়ে গেছে। আগামী অক্টোবরেই দেশের প্রথম এই টানেল চালু করা যাবে বলে প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে আশা প্রকাশ করেন।মৌলিক চাহিদা থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট খাতে ব্যাপক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বানও জানান শেখ হাসিনা। পাশাপাশি চলমান উন্নয়ন যাত্রা রুখে দিতে দেশ-বিদেশে ষড়যন্ত্র চলছে বলেও সতর্ক করেন প্রধানমন্ত্রী।

    সাফল্যের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, জনগণের সরকার হিসেবে মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করা আমাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য বলেই আমি মনে করি। গত ১৩ বছরে আমরা আপনাদের জন্য কী কী করেছি, তা আপনারাই মূল্যায়ন করবেন। তবে আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি আমরা যেসব ওয়াদা দিয়েছিলাম, তা সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজ যে দলেরই হোক আর যত শক্তিশালীই হোক, তাদের ছাড় দেওয়া হচ্ছে না এবং হবে না।

    দুর্নীতি দমন কমিশন স্বাধীনভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করছে। তবে এই ব্যাধি দূর করতে সামাজিক সচেতনতা তৈরি করা প্রয়োজন।আমরা কঠোর হস্তে জঙ্গিদের উত্থান প্রতিহত করেছি। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ পারস্পরিক সহনশীলতা বজায় রেখে বসবাস করে আসছেন এবং ভবিষ্যতেও করবেন।এছাড়া, করোনা নতুন ধরন অমিক্রন থেকে বাঁচতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার তাগিদ দেন সরকার প্রধান।প্রধানমন্ত্রী জানান, মাসে এক কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনতে গণটিকা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইন্টারনেট বিপ্লবের পর বিশ্ব এখন ডিজিটাল প্রযুক্তির চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। তাই চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী সুদক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে তরুণ প্রজন্মকে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করার ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।তিনি বলেন, বিশ্বের নবম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ৫জি নেটওয়ার্কের যুগে প্রবেশ করেছে এবং করোনাকালে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১১ কোটিতে উন্নীত হয়েছে, যা দেশের প্রায় ৬ লাখ তরুণ-তরুণীকে ফ্রিল্যান্সিং-এর মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে।

    এছাড়া অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ণ শেষে দারিদ্র্যের হার আরও কমিয়ে আনা সম্ভব হলে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দানাদার খাদ্যশস্য উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৫৫ লাখ মেট্রিক টন। বাংলাদেশ বিশ্বে ধান, সবজি ও পেঁয়াজ উৎপাদনে চতুর্থ স্থানে উন্নীত হয়েছে। অব্যাহত নীতি সহায়তা ও প্রণোদনার মাধ্যমে কৃষিক্ষেত্রে এই বিপ্লব সাধিত হয়েছে।

    দেশের প্রায় সব গ্রামে পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে জানিয়ে সড়ক, রেল, বিমান যোগাযোগ সহজ করতে সরকারের নেয়া উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারই প্রথম গ্রামোন্নয়নকে উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করেছে।২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে বিজয়ী হওয়ার পর, ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি শেখ হাসিনা চতুর্থ বারের মতো (টানা তিনবার) প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ