নৃশংসতার সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করা হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে পুলিশের প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকালে পাবনার সুজানগর উপজেলার আমিন পুর থানায় প্রেস ব্রিফিং করেন, পাবনার সহকারী পুলিশ সুপার (সুজানগর- আমিন পুর থানা সার্কেল) রবিউল ইসলাম।এ সময় উপস্থিত ছিলেন, আমিন পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী। প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গতকাল মঙ্গলবার (৫ জুলাই ২০২২ ইং) আমিন পুর থানার রুপপুর ইউনিয়নের স্থানীয় সংবাদের মাধ্যমে পুলিশের কাছে একটা খবর আসে যে, সেখানে একটা বাড়ির পাশেই নদী সংযুক্ত জলাধারে একজন মহিলার চুল ভেসে আছে।
খবর পেয়ে আমিন পুর থানার একটা পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় সেখান থেকে একজন মহিলার লাশ উদ্ধার করে। সেখানে ভিকটিমের ভাই এবং আসপাশের লোকজন মৃত্যু মহিলা পরিচয় নিশ্চিত করে। উদ্ধারকৃত মহিলার বাড়ির আঙ্গিনার পাশেই জলাধার অবস্থান। ভিকটিমের লাশ পানি থেকে উপরে তোলা হয় তখন লাশের বিভৎস অবস্থা দেখে সবাই ভয় পায়।লাশের গলায় কালসিটে দাগ এবং পেটের সকল নাড়িভুড়ি বের হয়ে আছে। ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়ে গেছে।
তদন্তকালে ভিকটিমের প্রতিবেশীদের মাঝে কয়েক জন জানান যে, সেখানে ভিকটিমের স্বামী সকালেই তাদের বাসায় গিয়ে তার স্ত্রীকে খুঁজেছে এবং বলেছে যে তাদের বাসায় গরু বিক্রি করা টাকা ছিলো তাই নিয়ে তার স্ত্রী পালিয়ে গেছে। ভিকটিমের স্বামী কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তখন সে বলে,সে কিছুই জানে না এবং অনেক এলোমেলো অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে। তার কথায় সন্দেহ হলে, তাকে আরো গভীরভাবে ইন্টারোগেশন করা হয়। তখন সে নিজেকে বাঁচিয়ে বিভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিতে শুরু করে।
তার প্রতিটি কথা যুক্তি দিয়ে খন্ডন করলে শেষ পর্যন্ত সে সত্য কথা বলে এবং একাই খুন করার কথা স্বীকার করে। পারিবারিক কলহের কারণে গত ২ মাস আগেই সে খুনের পরিকল্পনা করে। খুন করার আগেরদিন সে একটা গরু বিক্রি করে। তার স্ত্রী গরু বিক্রির টাকা কি করেছে তা জানতে চাইলে সে ক্ষীপ্ত হয়ে যায় কিন্তু তা প্রকাশ না করে বরং মিথ্যা কথা বলে ভালবেসে স্ত্রীকে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে এনার্জি ড্রিংকস পান করায়। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হলে রশি দিয়ে বেঁধে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।লাশ গায়ের করার জন্য প্রথমে সে লাশ কোলে করে পাশের জলাধারে নিয়ে গিয়ে পানিতে ফেলে দেয়।
কিন্তু যখন দেখে লাশ ভেসে উঠছে তখন সে চাকু দিয়ে পেট কেটে দেয় যাতে লাশ ডুবে যায়। হত্যাকাণ্ডের ব্যবহারের সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। উল্লেখ্য গত সোমবার রাতে স্বামীর হাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছে সাবিনা খাতুন (৩২) নামক এক গৃহবধূ। এই ঘটনায় নিহত সাবিনা খাতুনের স্বামী শিপন শেখ কে (৩৮) আটক করেছে আমিন পুর থানা পুলিশ। নিহত সাবিনা বেড়া উপজেলার রুপপুর ইউনিয়নের পায়কান্দি খানমরিচ এলাকার মৃত নেওয়াজ মোল্লার মেয়ে। এবং নিহত সাবিনাকে হত্যাকাণ্ডের জড়িত শিপন পার্শ্ববর্তী হাটখালি ইউনিয়নের মৃত আকু শেখের ছেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাবিনা ও শিপনের দশ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে তিনটা সন্তানের জন্ম হয়েছে।
E-mil: dailyalokito71sangbad@gmail.com
@বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোক চিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
Copyright © 2024 alokito71sangbad. All rights reserved.