নিউজ ডেস্কঃ
আজ ২৫ ডিসেম্বর শুভ বড়দিন। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। ধর্মীয় আচার ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করবে খ্রিস্ট ধর্মের অনুসারীরা। ঢাকা মহাধর্ম প্রদেশের আর্চ বিশপ বিজয় এন ডি ক্রুজ জানিয়েছেন, করোনা মহামারির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উত্সব আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করে, খ্রিস্ট ধর্মের প্রবর্তক প্রভু যিশু ঈশ্বরের পুত্র। পৃথিবীতে শান্তির বাণী ছড়িয়ে দিতে, মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালনা করতে এবং সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচারের লক্ষ্যে প্রভু যিশুর পৃথিবীতে আগমন ঘটেছিল। দুই হাজার ২১ বছর আগে তিনি আশ্চর্যজনকভাবে ঐশী শক্তিতে মেরির কোলে জন্মগ্রহণ করেন। মানবজাতির প্রতীক্ষিত মুক্তিদাতা প্রভু যিশু ৩০ বছর বয়সে প্রকাশ্যে প্রচার শুরু করেন।
বড়দিন উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ। এসব বাণীতে তাঁরা খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানিয়ে সুখী-সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ সরকারি ছুটি। সরকারি-বেসরকারি রেডিও, টিভি ও সংবাদপত্রগুলো এ দিবস উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান ও প্রকাশনার মাধ্যমে দিনটির তাত্পর্য তুলে ধরবে।
বড়দিন উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ঢাকা মহাধর্ম প্রদেশের আর্চ বিশপ বিজয় এন ডি ক্রুজ কালের কণ্ঠকে বলেন, বিশ্বের কোটি কোটি খ্রিস্টান ২৫ ডিসেম্বর বিশ্বাসভরা অন্তরে গভীর আশা ও আনন্দ নিয়ে ক্রিসমাস অর্থাত্ বড়দিন উদযাপন করে। প্রভু যিশু শিক্ষা দেন, ঈশ্বর আমাদের সবাইকে ভালোবাসেন। সূর্যের আলো ও বৃষ্টির ধারা যেমন সবার ওপর ঝরে পড়ে, ঠিক তেমনি ঈশ্বরের ভালোবাসা সবার জন্য উন্মুক্ত ও অবারিত। আমরা যেন একে অন্যকে ভালোবাসি এবং অন্যের সেবা করি।
প্রতিবেশী ভাই-বোনদের, বিশেষ করে অন্নহীন, বস্ত্রহীন, অসায় ও গরিব-দুঃখী মানুষের যখন আমরা সেবা করি, তখন তিনি (ঈশ্বর) সেবা গ্রহণ করেন। তিনি শিক্ষা দেন, আমরা যাতে পাপকে ঘৃণা করি, পাপীকে নয়। তিনি বাণী প্রচারের মধ্য দিয়ে এ জগতে যে ঐশরাজ্যের সূচনা করেছিলেন, তার প্রধান মূল্যবোধগুলো হলো—ন্যায্যতা, শান্তি ও পবিত্রাত্মায় নির্মল আনন্দ।
এদিকে বড়দিন উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার রাজধানীর গির্জাগুলোতে বিশেষ প্রার্থনা হয়েছে। আজও চলবে প্রার্থনাসহ নানা অনুষ্ঠান। করোনা বিধি-নিষেধ মেনেই এই অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ধর্মীয় অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে গির্জার ভেতরে বর্ণাঢ্য সাজসজ্জায় প্রতীকী গোশালা বসানো হয়েছে। বেথলহেমের গরিব কাঠুরের গোয়ালঘরে যিশুর জন্মের কথা স্মরণ করে ধর্মীয় আবহ সৃষ্টি করতে এই গোশালা বসায় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ। ঐতিহ্যবাহী ও জাঁকজমকপূর্ণ এ সাজসজ্জায় রঙিন কাগজ, ফুল ও আলোর বিন্দু দিয়ে ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দনভাবে। বিশেষ প্রার্থনা ও খাবারের আয়োজন রাখা হয়েছে।
বড়দিনে গির্জাগুলোতে থাকছে বর্ণাঢ্য আলোকসজ্জা। তবে থাকছে না বড়দিন উপলক্ষে মেলার আয়োজন। গির্জার প্রবেশমুখে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও পানি দিয়ে হাত ধোয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকবে। গির্জায় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।
রাজধানীর অভিজাত প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেল, ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল, র্যাডিসন হোটেল, লা মেরিডিয়েন হোটেল, ওয়েস্টিন হোটেল, ওয়েসিস হোটেল, ঢাকা রিজেন্সি হোটেলসহ অন্যান্য হোটেলে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকছে। হোটেলগুলো রঙিন বাতি, ক্রিসমাস ট্রি ও রং-বেরঙের ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। সীমিত পরিসরে থাকবে সান্তা ক্লজের চমকপ্রদ উপস্থাপনা এবং শিশু-কিশোরদের জন্য নানা উপহার। কোথাও কোথাও বড়দিনের কেক কাটা হবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছে।
বড়দিনের উৎসব ঘিরে দেশের সব গির্জার পাশাপাশি অনুষ্ঠানস্থলে থাকবে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। মোতায়েন করা থাকবে পুলিশ, র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য। রাজধানীর ৬৫টি গির্জা ও আশপাশের এলাকা সিসিটিভির আওতায় নেওয়া হয়েছে। যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে চার্চগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর পাশাপাশি নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী।
E-mil: dailyalokito71sangbad@gmail.com
@বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোক চিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
Copyright © 2024 alokito71sangbad. All rights reserved.