• চট্টগ্রাম বিভাগ

    লক্ষ্মীপুরে জমে উঠেছে শীতের পিঠা বিক্রি

      প্রতিনিধি ২৬ নভেম্বর ২০২২ , ৬:৫০:৪৮ প্রিন্ট সংস্করণ

    এইচ.এম.আল-আমিন-লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি:

    লক্ষ্মীপুরে জ্বলন্ত চুলায় লাকড়ি দিয়ে চার-পাঁচটি মাটির খোলায় চিতই পিঠা বানাচ্ছেন আরিফুর রহমান । চুলার অল্প আঁচে উড়ছে ধোঁয়া। তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু চিতই। আর চুলা থেকে নামানোর পর মুহূর্তেই তা চলে যাচ্ছে অপেক্ষামাণ ক্রেতার হাতে। ক্রেতারা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে সেই পিঠা কিনছেন। কেউ বা নিয়ে যাচ্ছেন পরিবারের জন্য। কেউ আবার দাঁড়িয়েই খাচ্ছেন। পাশের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় সামলাতে ব্যস্ত আরিফের বড় ভাই রুহুল আমীন। রাস্তার পাশে এই দুই ভাইয়ের দোকানে অর্ধশত মানুষ পিঠা কেনার জন্য ভিড় জমিয়েছেন।

    শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর বাজারে এই দৃশ্যের দেখা মেলে। আরিফুর রহমান বলেন, প্রতিবছর শীত মৌসুম এলে পিঠা বিক্রি করি। এবার প্রায় ১৫-২০ দিন হয়েছে চিতই পিঠা বিক্রি শুরু করেছি। ১০ টাকা করে প্রতি পিস, সাথে থাকছে ২০-২২ টি ভর্তার আইটেম, বিক্রিও খুব ভালো।
    জিহাদুল ইসলাম জয় বলেন নুরুর দোকান থেকে পিঠা কিনে প্রশংসা করে বলেন, এখানকার পিঠার মান ভালো। তাই প্রতিবছরই কিনে থাকি। এবারও কিনেছি রফিক জানান, কুলি পিঠা ১০ টাকা পিস, পাটিসাপ্টা ১৫ টাকা ও পাঁপড় তিন পিস ১০ টাকায় বিক্রি করছেন।

    পাশাপাশি দুই দোকানে পাটিসাপ্টা, ভাপা, কুলি, তেলের পিঠা ও চিতই পিঠা বিক্রি করছেন রফিক এবং সাহানারা। সরেজমিনে দেখা গেছে, পিঠা তৈরির ছাঁচে চালের গুঁড়ি নিয়ে তার ওপর গুড়, নারকেল ছিটিয়ে ভাপে দিচ্ছেন দোকানি। খোলায় বানানো হচ্ছে চিতই পিঠা। সন্ধ্যার পরেই পিঠার দোকানে ভিড় করছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট পিঠার দোকান সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। অনেকে আবার পিঠা বিক্রির দোকান দিয়ে পেশা পরিবর্তন করছেন।

    উত্তর স্টেশনসহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার মোড় আর ফুটপাতে গড়ে উঠেছে প্রায় শতাধিক অস্থায়ী পিঠার দোকান। মৌসুমী পিঠা ব্যবসায়ীরা মোড়ে মোড়ে পিঠার দোকান নিয়ে বসে পড়েছেন। আর সাধারণ মানুষও খাচ্ছেন এসব ধোঁয়া-ওঠা গরম পিঠা। দোকানিরা জানান, খুব বেশি পুঁজি লাগে না বলে সহজে এ ব্যবসা শুরু করা যায়। জ্বালানি হিসেবে খড়ি, অকেজো কাঠের টুকরা, কিংবা গাছের শুকনা ডাল ব্যবহার করছেন তারা।

    তবে কেউ কেউ আবার পিঠা তৈরি করতে গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার করছেন। কিছু গুড়, আটা, নারকেল নিয়ে এ ব্যবসা খুলে বসা যায়। লক্ষ্মীপুরের আজিম আলোকিত ৭১ সংবাদকে বলেন, পাটিসাপ্টা, কুলি, চিতই, খিজানো পিঠা ও তেলের পিঠা বিক্রি করেন তিনি। দামে কম ও মান ভালো হওয়ায় দোকানে প্রায় ক্রেতাদের ভিড় লেগে থাকে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ

    আরও খবর: চট্টগ্রাম বিভাগ

    মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ইসলামী যুব আন্দোলনের আলোচনা সভা

    মুরাদনগরে ৫৬ কেজি গাঁজা দেশীয় অস্ত্রসহ ৭জন গ্রেপ্তার

    প্রধানমন্ত্রী ঘর পাবে ভূমিহীন ১৭৯০ টি পরিবার

    দেবীদ্বার পৌর মহিলা দলের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত

    লক্ষ্মীপুরের আ.লীগ নেতা তাহেরের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার শোক

    পুরুষশূন্য মাশিকাড়া গ্রাম কাটছে না আতঙ্ক প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার দাবি নারীদের কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লা দেবীদ্বার উপজেলা মাশিকাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের শাস্তি ও অপসারনের দাবিতে বিক্ষোভ, সংঘর্ষ, হামলা, অগ্নিসংযোগ ও গুলিবিদ্ধ হয়ে পুলিশসহ অর্ধশত গ্রামবাসী আহত হওয়ার ঘটনার ৪ দিন পর গতকাল শনিবার দুপুরেও ওই এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। দুপুরের পরও ওই এলাকায় মানুষজনের তেমন উপস্থিতি ছিলনা। খুলেনি দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। মাশিকাড়া বাজার ও মাশিকাড়া উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় ছিল পুলিশি টহল এবং সাংবাদিক ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কড়া নজরদারি। এ ছাড়া গত বুধবারের ওই সহিংসতার পর থেকে এখন পর্যন্ত হওয়া দুইটি মামলায় গতকাল শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যৌন হয়রানির দায়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক দেবীদ্বার উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক মোক্তল হোসেনকে উদ্ধারের ঘটনায় অভিযান চালাতে গিয়ে এ তা-ব চালানোর অভিযোগ উঠল দেবীদ্বার থানার পুলিশের বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই অভিযুক্ত শিক্ষকের পক্ষের একটি প্রভাবশালী চক্রের প্ররোচনায় এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করতে পুলিশ এই কাজ করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তবে উদ্বেগ আর আতঙ্ক কাটেনি নির্যাতনে শিকার ছাত্রীর পরিবার ও স্থানীয়দের। মাশিকাড়া গ্রামের সাথে আশপাশের আরো দুটি গ্রামে কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। যাদের প্রায় সবাই গত বুধবারের সহিংসতায় হতবাক। আতঙ্কিত শিশুরাও। কোনকিছুর শব্দ ও আগুন দেখলে অনেকেই চমকে উঠছেন। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন যাপন করছে মাশিকাড়া গ্রামসহ আশপাশের আরো অন্তত দুই গ্রামের নারী, পুরুষ ও শিশুরা। সবার মধ্যে একটাই আতঙ্ক, আর তা হলো যদি আবার এসে পুলিশ হামলা ও গুলি করে। বাড়িতে থাকতে নিরাপদ বোধ করছে না কেউই। অবশ্য মামলা ও পুলিশি অভিযানের কারণে বাড়িতে থাকার মতো পরিস্থিতিও নেই। অনেকেই নিজেদের বাড়ি ছেড়ে স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত নির্যাতিতা স্কুলছাত্রীর পরিবার কারও সাহায্য-সহযোগিতা চান না। তারা শুধু নিরাপদে বসবাসের নিশ্চয়তা চান, নিজেদের জানমালের নিরাপত্তা চায় তারা। গতকাল সাংবাদিকরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে তাদের কাছে এমন দাবি জানান তারা। সাংবাদিকদের কাছে তারা সহিংসতায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারেরও দাবি জানান। সরেজমিনে দেখা গেছে, মাশিকাড়া ও শাকতলা গ্রামের প্রায় সব বাসিন্দার চোখে-মুখে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার ছাপ। মাশিকাড়া বাজারে দুধ বিক্রি করতে আসা মো. মনু মিয়া (৬০) বলেন, ‘আমরা এতো বছর ধরে সম্প্রীতির সঙ্গে সবাই বসবাস করে আসছি। আমরাও এখানে স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করেছি, একই সঙ্গে খেলাধুলা করেছি। কখনো কারো সাথে কোনো বিরোধ হয়নি। এক শিক্ষকের অনৈতিক আচরনের জন্য তার পক্ষের বহিরাগত কিছু লোক এসে এখানের মানুষজনকে উসকে দিয়ে এই কাজগুলো করাচ্ছে। এই মূলহোতাদের আইনের আওতায় আনা উচিত।’ গত বুধবার বিকেলে থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার মাশিকাড়া উচ্চ ববিদ্যালয় এলাকায় স্থানীয় জনতা-ছাত্র ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এই সহিংসতায় সাত পুলিশসহ স্থানীয় অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন। শাকতলা গ্রামের রাজিয়া বেগম বলেন, ‘সেদিনের হামলার বীভৎসতায় আমার সাত বছরের ছেলে এখনো আঁতকে ওঠে। পুলিশ দেখলে ভয়ে কেঁদে ফেলে। এমন অবস্থা আমাদের প্রত্যেক পরিবারের। আমরা সরকারের কাছে নিরাপত্তা চাই।’ ওই ঘটনায় নির্যাতিতা স্কুলছাত্রীর বাবা ণারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করা মামলার বাদী মো. শফিউল্ল্যাহ বলেন, ‘আমরা কারও সাহায্য-সহযোগিতা চাই না। আমরা শুধু নিরাপদে বসবাস করতে চাই। নিজেদের জানমালের নিরাপত্তা চাই।’ মামলা ও গ্রেপ্তার- বুধবারের সহিংসতার ঘটনায় আলাদা দুইটি মামলা করা হয়েছে। দেবীদ্বার থানায় হামলা ভাঙচুর, লুটপাট, সরকারি কাজে বাধাদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে পুলিশের পক্ষ থেকে একটি ও যৌন হয়নরানীর শিকার ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে ণারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি একটি মামলা করা হয়। এ দুই মামলায় ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ওই ঘটনায় অভিযুক্ত যৌন নিপীড়ক প্রধান শিক্ষক মোক্তল হোসেনসহ এ পর্যন্ত ১৭জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শনিবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইিম এন্ড অপস্) খন্দকার আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘বিভিন্ন অভিযোগে দুইটি মামলা হয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে ঘটনায় জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। ওখানকার দায়িত্বরত পুলিশের কোন গাফলতি ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’