প্রতিনিধি ১১ জানুয়ারি ২০২৩ , ৪:২৮:০৪ প্রিন্ট সংস্করণ
কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি:
গত ২০২২ সালের নভেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়া কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ধামতী হাবিবুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেনীর বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও এক শিক্ষার্থী মেধাতালিকায় ৫ম হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হলে- দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাটি তদন্ত কমিটি গঠনপূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার আশ^াস দেন।
জানা যায়, ধামতী হাবিবুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষায় ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির অভিভাবক সদস্য মো. হারুনুর রশিদ চৌধুরীর ছেলে সপ্তম শ্রেনীর অনিয়মিত ছাত্র মোঃ রাকিব চৌধুরী বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেনীর বার্ষিক পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল। সপ্তম শ্রেনীর খ বিভাগে তার রোল নম্বর ছিল ১১। বিদ্যালয়ের নথিপত্র দেখা যায় পরীক্ষার সিট প্ল্যানে তার নামে কোন সিট বরাদ্দ ছিলনা। সপ্তম শ্রেনীর পরীক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষার হলে সরবরাহ করা উপস্থিতির তালিকায় স্বাক্ষরের ঘরে রাকিবের কোনো স্বাক্ষর পাওয়া যায়নি। অথচ, পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও বাংলায়- ৫২, ইংরেজীতে- ৫১, গণিতে- ৬৬, ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষায়- ৬২, বাংলাদেশ ও বিশ^ পরিচয়ে- ৩৩, সাধারন বিজ্ঞানে- ৫০, কৃষি শিক্ষায়- ৭৬, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষায়- ৩২সহ ৭৫০ নম্বরের মধ্যে মোট প্রাপ্ত মোট ৪২২ নম্বর হলেও ফলাপলের মোট ৪৩২ নম্বর দেখিয়ে মেধা তালিকায় পঞ্চম স্থানে উন্নীত করেছে। ফলাফলের দিন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে ফলাফল ঘোষণার সময় ৫ম স্থানে উন্নীত হওয়ার ঘোষনায় উপস্থিত শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ করতে দেখা যায়। মো. রাকিব চৌধূরীকে মেধা তালিকায় পঞ্চম দেখানোর পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়। এ সময় মো. রাকিব চৌধূরীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সেও পরীক্ষায় অংশ না নেয়ার সত্যতা স্বীকার করেন।
উল্লেখ্য, মো. রাকিব চৌধূরীর অর্ধবার্ষিক (প্রাক নির্বাচনী) পরীক্ষায় ফলাফলে বাংলায় প্রথম পত্রে-১৯, ইংরেজী প্রথম পত্রে- ০৩, গণিতে- ১১, ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষায়- ৩০, বাংলাদেশ ও বিশ^ পরিচয়- ২০, সাধারণ বিজ্ঞান- ১৫, কৃষি শিক্ষা- ১৫, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিদ্যায়-১৭ সহ ৭৫০ নম্বরের মধ্যে মোট প্রাপ্ত নম্বর পেয়েছে ১৩৩। অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, আমরা এ বিষয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজন ও বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের নিয়ে বসে বিষয়টি সমঝোতা করে ফেলেছি।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. সফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, আমরা বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি, শিক্ষক, অভিভাবক ও গ্রামের গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বিদ্যালয়ের স্বার্থে সমঝোতা বৈঠকে শেষ করেছি। যে শিক্ষিকা (হাজেরা বেগম) এ কাজটি করেছেন এবং বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো. হারুন-অর রশিদ চৌধূরী ক্ষমা চেয়ে এবং ভবিষ্যতে আর এ জাতীয় অন্যায় করবেনা মর্মে লিখিত অঙ্গীরকারনামা দেয়ার পর সমাধান করি।
এবিষয়ে দেবীদ্বার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী আব্দুল ওয়াহেদ মোঃ সালেহ বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেজী চক্রবর্তী বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক, তদন্ত কমিটি গঠনপূর্বক ব্যবস্থা নেব।