প্রতিনিধি ৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ৩:০২:১২ প্রিন্ট সংস্করণ
মু,হেলাল আহম্মেদ(রিপন)পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ
অবশেষে পটুয়াখালীতে গাইনী ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারনে মৃত্যুর দুয়ার শয্যায় আহাজারি দরিদ্র কাজের বুয়া রেহেনা বেগমের সকল চিকিৎসার দায়িত্বভার নিলেন সেই চিকিৎসক ডাঃ সেলিনা রহমান।
ভুল চিকিৎসায় প্রতিকার চেয়ে সিভিল সার্জনের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছিলেন পাইলস রোগী রেহেনার ছোট ভাই রিক্সা চালক বাবুল প্যাদা। অভিযোগে বাবুল প্যাদা জানায়,তার বড় বোন স্বামী পরিত্যাক্তা রেহেনা বেগম দুই শিশু ছেলে – মেয়েকে নিয়ে তার বাসায় কোন মতে দিন কাটিয়ে আসছিল।
আনুমানিক দুই মাস আগে তার বোন রেহেনা বেগম পাইলস রোগে আক্রান্ত হলে বাবুলের স্ত্রী মনিকা বেগম চলতি বছরের ২২ জুন রেহেনাক নিয়ে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যান। সেখানে এক অপরিচিত মহিলা ভুল বুঝিয়ে তাকে হাসপাতালে পাইলস রোগের ভাল ডাক্তার নাই। ডাঃ সেলিনা রহমান পাইলস রোগের খুব ভালো ডাক্তার।
তার চেম্বার পিটিআই রোডের পটুয়াখালী ল্যাব এইড ডায়াগনেস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে নেয়া হয়। অপরিচিত মহিলার কথামত ওইদিন বিকালে বাবুলের স্ত্রী মনিকা বেগম পাইলস রোগী রেহানাকে নিয়ে ওই সেন্টারে নিয়ে গেলে সেখানে ডাক্তার সেলিনা রহমান রেহনাকে দেখে অনেকগুলো টেস্ট করাতে বলে।টেস্ট রিপোর্ট দেখে ডাঃ সেলিনা রহমান অপারেশন করা লাগবে বলে তিতাস মোড়ে গ্রীনভিউ হসপিটালে ভর্তি হতে বলে।
ডাঃ সেলিনা রহমানের কথামতো ২৩ জুন ভর্তি করে রেহেনা বেগমকে। ওই দিনই ডাঃ সেলিনা রেহেনাকে পাইলস অপারেশন করেন এবং তার তত্ত্বাবধানে রেখে ৭দিন পর অপারেশন ফি, ঔষধসহ মোট ১৬ হাজার টাকা রেখে সুস্থ না হলেও ৩০ জুন ডাঃ সেলিনা রহমান রেহেনা বেগমের নাম কেটে দেয়। বাসায় নেয়ার পর রেহানা বেগমের অবস্থার আরও অবনতি হলে ডাঃ সেলিনা রহমানের সাথে দেখা করলে তিনি ঔষধ লিখে দিয়ে বলেন এ ঔষুধ খেলে ভালে হয়ে যাবে ।
পরে ঔষুধ খাওয়ার পরে অবস্থার আরও অবনতি হয় রেহানার। এ অবস্থা জানালে ডাঃ সেলিনা পুনরায় ১৬.৮.২০ তারিখ গ্রীন ভিউ হসপিটালে রেখে ড্রেসিং করে ১৭.৮.২০ তারিখ ২৫০ শয্যা হাসপাতালে রেহেনাকে ভর্তি করে এবং ২য় বার রেহেনা বেগমের পায়ুপথ অপারেশন করেন ডাঃ সেলিনা রহমান।
এ অপারেশনের পর রেহেনার মলদ্বার ও যোনি একত্রিত হয়ে প্রসাবের রাস্তা দিয়ে অনর্গল মল বাহির হতে শুরু হলে রেহেনার সমস্ত চিকিৎসাপত্র গোপন করে ২০.৮.২০ তারিখ অন্য ডাক্তার দিয়ে নাম কেটে বাসায় পাঠিয়ে দেয়।
বাসায় নেয়ার পর রেহেনার অবস্থার আরও অবনতি হয়। এ অবস্থায় ডাঃ সেলিনা ২৪ আগস্ট একটি মিথ্যা ব্যবস্থাপত্র ধরিয়ে বলেন বরিশাল থেকে মনির নামে একজন ডাক্তার আসে, তাকে দেখায়ে দিবে বলেন। দুইবার অপারেশন করেছি এ কথা কাউকে বলতে নিষেধ করেন ডাঃ সেলিনা রহমান। পরবর্তীতে রেহেনা বেগমের প্রয়োজনীয় চিকিৎসার কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি ডাক্তার সেলিনা রহমান।
ডাঃ সেলিনা রহমান একজন গাইনী ও প্রসূতি বিশেজ্ঞ ডাক্তার।তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য এক শ্রেনীর দালালদের মাধ্যমে অশিক্ষিত,গরীব ও দুর্বল এবং অসুস্থতার সুযোগে রোগীদেরকে চেম্বারে নিয়ে ভুল চিকিৎসা দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়ার প্রতিকার ও বিচার চেয়ে পটুয়াখালী স্বাস্থ্য বিভাগের সিভিল সার্জন এর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন মুমূর্ষু রোগী রেহেনা বেগমের ছোট ভাই বাবুল প্যাদা। এ অভিযোেগে সাংবাদিকরা বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করে। এ অবস্থায় ডাঃ সেলিনা রহমান ৫ সেপ্টেম্বর এলাকার ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ দেলোয়ার হোসেন ও এস এম মতিন মাহমুদ জাহিদ সিকদারসহ স্থানীয় কয়েক ব্যাক্তিদের বৈঠকে তার ভুল স্বীকার করে মুমুর্ষু রোগী রেহানার প্রয়োজনীয় সকল চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে জানান রোগী রেহেনার ছোট ভাই বাবুল প্যাদা। পরবর্তিতে রিক্সা চালক বাবুল প্যাদা, ডাঃ সেলিনা রহমানের বিরুদ্ধে সিভিল সার্জনের কাছে দেয়া তার অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছে মর্মে সিভিল সার্জনের কাছে একটি লিখিত পত্র পেশ করে।
এ ঘটনায় পটুয়াখালীর বিভিন্ন মহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে। জনমনে প্রশ্ন ডাঃ সেলিনা রহমান একজন গাইনী চিকিৎসক হয়ে কি করে পাইলস রোগীর চিকিৎসা করেন !