প্রতিনিধি ২৯ আগস্ট ২০২০ , ১০:১০:০১ প্রিন্ট সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টার
জামালপুর।। ফেসবুকে মানাহানিকর স্ট্যাটাস পোস্ট ও হয়নারানি করার বিষয়ে পুলিশের আইজিপির কাছে বিচার চাওয়ায় জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ থানার এক এস আই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ৩টি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। একই কারণে সাংবাদিক গ্রেফতারের শিকার ও কারাবরণ করতে হয়েছে। হয়রানিতে অতিষ্ট হয়ে স্কুল ছাত্রী পড়া লেখা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে।
২০১৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে বকশীগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর হাছেন আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষন করতে গিয়ে প্রতিবেশী চিনারচর গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের বখাটে ছেলে মোস্তাইন বিল্লাহ রনি হাতে নাতে ধরা পরে।
স্কুলের অভিভাবক হিসেবে বিষয়টির খোজ খবর রাখেন মেরুরচর হাছেন আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি দৈনিক ইত্তেফাক সাংবাদিক এম শাহীন আল আমীন। এই বিষয়ে দেশের বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় বিভিন্ন সময়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এই ঘটনায় স্কুল ছাত্রী নির্যাতনকারী মোস্তাইন বিল্লাহ রণির পক্ষ নিয়ে ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর বকশীগঞ্জ থানার কর্মরত এস আই শরীফ আহম্মেদ নির্যাতিত স্কুল ছাত্রীর বৃদ্ধ দাদা তাজমহলকে অর্ধ নগ্ন অবস্থায় পিঠমোড়া দিয়ে বেধেঁ বকশীগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে।
ঘটনার খবর পেয়ে মেরুরচর হাসেন আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি সাংবাদিক এম শাহীন আল আমীন বিষয়টি বকশীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে অবহিত করেন। অফিসার ইনচার্জের হস্তক্ষেপে নির্যাতিত স্কুল ছাত্রীর বৃদ্ধ দাদা এস আই শরীফ আহম্মেদের কাছ থেকে মুক্তি পায়। এস আই শরীফ নির্যাতিত স্কুল ছাত্রীর বৃদ্ধ দাদার কাছে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে তাকে ছেড়ে দেন।
পরে ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নির্যাতিত স্কুল ছাত্রী মোস্তাইন বিল্লাহ রনির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর
এস আই শরীফ বিভিন্ন সময়ে বেআইনি ভাবে তার নিজস্ব ফেইসবুক আইডি থেকে সাংবাদিক এম শাহীন আল আমীন ও নির্যাতিত স্কুলছাত্রীর নাম পরিচয় ব্যবহার করে নানা ধরনের আপত্তিকর ও মানহানিকর পোষ্ট দেয়।
এই বিষয়ে নির্যাতিত স্কুলছাত্রী ও সাংবাদিক এম শাহীন আল আমীন বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর পর থেকেই নির্যাতিত স্কুল ছাত্রীর পরিবার ও সাংবাদিক শাহীনকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছে।
আইজিপি বরারব লিখিত অভিযোগ করায় এস আই শরীফ ক্ষুব্ধ হয়ে সাংবাদিক শাহীন আল আমীনকে চলতি বছরের মার্চ মাসে একটি মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠায়। মজার ব্যাপার হলো ওই মামলার এজাহারে সাংবাদিক শাহীনের নাম নেই। বকশীগঞ্জ সরকারী কিয়ামত উল্লাহ কলেজের অধ্যক্ষ বাদী ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার মূল এজাহারে সাংবাদিক শাহীনের নাম থাকলেও এস আই শরিফ অন্যায়ভাবে চার্জশীটে সাংবাদিক শাহীনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে। পুরো চার্জশীট জুরেই শাহীনের বিরুদ্ধে অভিযোগের ইতিহাস লিখেন।
স্কুল ছাত্রী নির্যাতনকারী বখাটে মোস্তাইন বিল্লাহ রনির বড় ভাই মামলাবাজ ফুরকান আলী জজ মিয়া এসআই শরীফের ইন্ধনে ২৯/০৯/২০১৯ ইং তারিখে বাদী হয়ে নির্যাতিত স্কুল ছাত্রী-ছাত্রীর মা-বাবা-নানা-দাদা-মামা-চাচা ও শাহিন মিয়াসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মারপিট ও কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার একটি ভিত্তিহীন ঘটনা সাজিয়ে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয় ঘটনার রাতে অর্থ্যাৎ ১৭/০৯/২০১৯ ইং রাতে সকল আসামীগন বাদীর ভাই বখাটে মোস্তাইন বিল্লাহ রনিকে মারপিট করে ও কাগজে স্বাক্ষর নেয়।
মামলায় বাদী কোথাও কোন আসামীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও চাদাঁবাজির কথা উল্লেখ করেন নাই। কিন্তু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই শরীফ আহম্মেদ পূর্ব ক্ষুব্ধতার জের ধরে অজ্ঞাত কারনে তদন্ত প্রতিবেদনের প্রতিটি লাইনে সুনির্দিষ্ট করে চাদাঁবাজির বিষয়টি তুলে ধরেন।
মারপিটের ঘটনা সাজিয়ে মামলা দায়ের করলেও তদন্ত প্রতিবেদনে মারপিটের ঘটনাটি মিথ্যা প্রমানিত হয়। কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার বিষয়টিও ভূয়া প্রমানিত হয়। যা তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা আছে।
এছাড়াও এস আই শরীফ বকশীগঞ্জ থানায় কর্মরত সাংবাদিক এম এ ছালাম মাহমুদ,সাংবাদিক মনিরুজ্জামানসহ আরো তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানি করে আসছে। বকশীগঞ্জ থানার মামলা নং-১১৫৪,তারিখ-২৮/১০/২০১৯ ধারা ৫০৬/৫০০ প্যানাল কোড ১৮৬০।