প্রতিনিধি ১৩ জুলাই ২০২০ , ২:০৮:৫৭ প্রিন্ট সংস্করণ
মোঃ শহিদুল ইসলাম-ঢাকা জেলা প্রতিনিধিঃ
বাংলাদেশে করোনা সংক্রমনের বিপজ্জনক সময় পার করলেও ফেসিয়াল মাস্ক ব্যবহারের ক্ষেএে এখনও সাধারন মানুষের মধ্যে রয়েছে অনিহা। দিন যতই যাচ্ছে ততই যেন মানুষ মাস্ক ব্যবহারের প্রতি উদাসীন হয়ে পড়ছে।
দীর্ঘ লকডাউন শেষে জীবন যাএা অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসায় সড়কে সড়কে মানুষের উপস্হিতি বৃদ্ধি পেয়েছে।তাদের অনেকের মুখে থাকছেনা স্বস্হ্য সুরক্ষার অতিবপ্রয়োজনীয় সামগ্রীটি।
বিশেষ করে তরুনদের পাড়া – মহল্লায় জট বেধে আড্ডা দেওয়ার সময়, বিভিন্ন পাবলিক স্হানে, বাজারে এবং বিনোদন কেন্দ্রে এক সঙ্গে মাস্ক ছাড়া চলাফেরা করতে দেখা যাচ্ছে। অথচ মাস্ক ছাড়া ঘর থেকে বের হলেই জরিমানার বিধান করা হয়েছে। মাস্ক পরে বের হওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমগুলোতেও বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে।
পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্বশীল সূএ দৈনিক আলোকিত ৭১ সংবাদকে জানান, করোনা শুরুর প্রথম থেকে ট্রাফিক বিভাগ স্বাস্হ্য বিধি অনুসরন করা ও মাস্ক ব্যবহারের ওপর জোর দিয়ে আসছে। সড়কের বড় বড় বিলবোর্ডে মাস্ক ব্যবহার সংক্রান্ত সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন দিয়েছে ট্রাফিক বিভাগ। যাএী মাস্ক ব্যবহার করছে কিনা তা তদারকির জন্য গঠন করা হয়েছে মনিটরিং কমিটি।
সরকার ঘরের বাহিরে মাস্ক ব্যবহার না করলে ২০১৮ সালের সংক্রমন আইনের ২৪(১,২),২৫(১ -এর ক,খ) এবং ২৫(২) ধারায় ব্যবস্হা নেওয়ার বিধান করেছে। এই ধারা অনুযায়ী মাস্ক ব্যবহার না করলে শাস্তি সর্বোচ্চ ছয় মাসের জেল এবং এক লক্ষ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড হতে পারে। জেলা প্রশাসকদের সতর্কতার সঙ্গে আইনের যথাযথ প্রয়োগের কথা বলা হয়েছে।
এ ছাড়া মাস্ক ব্যবহারও স্বাস্হ্যবিধি মানাতে সারা দেশে মোবাইল কোর্ট পরিচানা করা হচ্ছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ন পুলিশ কমিশনার ট্রাফিক ( উত্তর) মোঃ আবদুর রাজ্জাক বাংলাদেশ দৈনিক আলোকিত ৭১ সংবাদকে বলেন, কঠোর আইন করে বা জরিমানা দিয়ে মানুষদেরকে সাস্ক ব্যবহারে বাধ্য করা সম্ভব না বরং এ জন্য সচেতনতার বিকল্প নেই।
কিন্তু মানুষের মধ্যে যদি মাস্ক পরার প্রবনতা না থাকে তাহলে আমরা কত আর জোর করে তাদের মাস্ক পরাব। ঢাকার বিভিন্ন স্হান ঘুরে দেখা যায়, অনেকে মাস্ক পরলেও তা সঠিকভাবে পরছেন না। নাকের নিচে থুতনিতে, গলায় বা কানে ঝুলিয়ে রাখছেন। কেউ আবার পকেটে বা ব্যাগে রেখে দিচ্ছেন।
বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ, রিকসাচালক, বাসচালক,ট্রাকচালক,গার্মেন্টকর্মী,হকার,হোটেল- রেস্টুরেন্টের কর্মচারী, বাসা- বাড়ির কাজের ভূয়া, কাঁচা বাজারের বিক্রেতা ও ভিক্ষকদের মাস্ক পরতে দেখা যাচ্ছেনা।
পল্লবী আবাসিক এলাকার এক গৃহকর্মী সুলতানা বেগম জানান, যে বাসায় কাজ করেন সেখানে তাকে মাস্ক দিলেও তিনি তা ব্যবহার করেন না। কারন জানতে চাইলে সুলতানা বলেন, মাসক মুখে দিলে শরম লাগে। আশপাশের অন্য বূয়ারা আমারে দেইখা হাসে।
মিরপুর মুসলিমবাজার এলাকার কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারের অধিকাংশ বিক্রতার মুখে মাস্ক হয় থুতনিতে নয়তো কানে ঝুলছে। কেউ কেউ আবার মাস্ক পরেননি। মাস্ক না পরার কারন জানতে চাইলে রাজু মিয়া নামের এক মাছ বিক্রেতা বলেন সারাক্ষন মাস্ক পরে থাকলে গরম লাগে,মাথা ঝিমঝিম করে, হাসফাস লাগে আর মাস্ক থাকলে ক্রেতারা আমার কথা কম শুনে।
মিরপুর ১২ নম্বরের কয়েকজন পোষাক শ্রমিকের মাক্স না পরার কারন জানতে চাইলে পপি আক্তার নামের এক শ্রমিক বলেন, শুরুতে কয়দিন পরলেও এখন আর মাস্ক পরতে ইচ্ছা করে না। আমার সঙ্গের অনেক শ্রমিকই এখন আর মাস্ক পরেনা। তিনি বলেন, আল্লাহ যতদিন বাঁচাইবো ততদিনই বাঁচমু।’